ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘বিলবোর্ড নেতাদের’ সমালোচনায় ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৮, ৫ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘বিলবোর্ড নেতাদের’ সমালোচনায় ওবায়দুল কাদের

ব্যানার-ফেস্টুন আর বিলবোর্ডে নেতাদের প্রচারণার তুমুল সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘‘মাঠে নেতার দেখা নেই কিন্তু বিলবোর্ডে বিশাল বিশাল চেহারা দেখিয়ে বেড়ান; এ সব দিয়ে কী হবে? এত নেতার দরকার নেই, কর্মী দরকার। সাচ্ছা, ত্যাগী এবং দুঃসময়ের কর্মী দরকার।’’

বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট নগরীর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘এখন আওয়ামী লীগে নেতার অভাব নেই, আর কর্মীর দেখা নেই। নেতার শেষ নেই। বড় নেতা, পাতি নেতা, আধুলি নেতা, সিকি নেতা, শুধু নেতার দেখা মেলে।

‘‘পোস্টার লাগাতেও এখন কর্মীর খোঁজ পাওয়া যায় না, যে কারণে টোকাই দিয়ে পোস্টার লাগাতে হয়। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিলবোর্ড টানিয়ে নেতা হওয়া যাবে না। মিছিল দিয়ে, ভাই স্লোগান দিয়ে নেতা বানানোও যাবে না। কর্ম, ত্যাগ এবং যোগ্যতা দিয়ে নেতা হবেন।’’

দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘এখন থেকে আওয়ামী লীগে মনোনয়ন বাণিজ্য চলবে না। টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাসী কার্যক্রমও চলবে না। মনোনয়ন বাণিজ্য যারা করেছেন; তারা সাবধান হয়ে যান। টেন্ডারবাজরাও সাবধান হোন, সন্ত্রাসীরাও সাবধান হোন। চলছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান।’’

কমিটিতে ত্যাগীদের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদক তিনি বলেন, ‘‘ত্যাগীদের বাদ দিয়ে পকেট কমিটি করা যাবে না। পকেট কমিটির নেতারা সুসময়ে আসে, পরে আবার চলে যায়। দুঃসময়ে এদের সার্চ লাইট দিয়ে খুঁজলেও পাওয়া যাবে না। এ জন্য ত্যাগীদের নেতা বানাতে হবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কের বাংলাদেশ। তার নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে দেশ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা অভিমুখে। এ জন্য আওয়ামী লীগ করতে হলে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। নিয়ম মেনে চলতে হবে। টাকা দিয়ে নেতা হওয়া যায় না। যোগ্যতার ভিত্তিতেই নেতা হওয়া যায়।’’

কমিটিতে বাদ পড়াদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের কাউকে বাদ দেয়া হয় না। তবে নেতৃত্বের পরিবর্তন হয়। এর মানে বাদ দেয়া নয়। নবীনের সঙ্গে প্রবীণের সমন্বয় করা হয়। এতে দলের এনার্জি বাড়ে।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমরা মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে জীবনের জয়গান গাই, ধ্বংসের মধ্যে দাঁড়িয়ে বিজয়ের পতাকা উড়াই। এ জন্য সময়ের চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে নতুন মডেলে আওয়ামী লীগকে ঢেলে সাজানো হবে।’’

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, প্রধান বক্তা ছিলেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি, বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী, সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, পরিচালনা করেন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ।


সিলেট/আব্দুল্লাহ আল নোমান/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়