কম্বল পেয়ে খুশি লাল মিয়া
মো. ইমরান || রাইজিংবিডি.কম
হতদরিদ্র লাল মিয়া। বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি। পেশায় ভ্যানচালক। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পর্যটকদের নিয়ে ছুটে বেড়ান কুয়াকাটার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত।
মঙ্গলবার গভীর রাতে কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টে ভ্যান নিয়ে দাঁড়িয়ে শীতে কাঁপছিলেন তিনি। হঠাৎ করে তার সামনে থামলো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি। শীতে লাল মিয়ার জবুথবু অবস্থা দেখে ইউএনও তার গায়ে জড়িয়ে দিলেন কম্বল। এতেই লাল মিয়া বেজায় খুশি। সঙ্গে সঙ্গে দোয়াও করলেন লাল মিয়া।
এভাবে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মাঝ রাত থেকে শুরু করে শেষ রাত অব্দি অসহায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিবুর রহমান। কলাপাড়া পৌর শহরের চৌরাস্তা, কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট ও কুয়াকাটা সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ঘুরে ঘুরে ৫০ জন মানসিক ভারসাম্যহীন, ৫০ এতিমখানা মাদ্রাসার এতিম ছাত্র ও শতাধিক শীতার্তের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন তিনি। এসব কম্বল বরাদ্ধ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। গত কয়েক দিন বৃষ্টির পর শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় তিনি এ উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সিনিয়র এএসপি জহিরুল ইসলাম, উপজেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান খানসহ ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা।
লাল মিয়া জানান, দুই মেয়ে এক ছেলের বাবা সে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়ে প্রায় নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিলেন। পরে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে একটি ভ্যান কেনেন। সেই ভ্যানের চাকায় কোনো মতে ঘুরতে থাকে তার জীবন জীবিকা। তার সমান্য আয়ে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ যোগাতেই হিমশিম খেতে হয়। শীত নিবারণের জন্য শীতবস্ত্র কেনার সামর্থ নেই তার। পুরনো যে কম্বল কিংবা লেপ ছিল, তা ব্যবহার করেন তার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েরা। নিজে ঘুমানোর সময় ব্যবহার করতেন একটি পাতলা কাঁথা ও তার গায়ের ছেড়া জ্যাকেট।
কলাপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ জানান, শীতার্তদের মাঝে বিতরণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৬ হাজার ২০০ কম্বল বরাদ্ধ পেয়েছেন তিনি।
কলাপাড়া, (পটুয়াখালী)/মাহি
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন