ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

পুলিশকে সহযোগিতা করতে গিয়ে হামলার শিকার যুবক

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৩, ২১ জানুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পুলিশকে সহযোগিতা করতে গিয়ে হামলার শিকার যুবক

পাবনায় ধর্ষণ মামলায় পুলিশকে সহযোগিতা করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন আব্দুল আলীম (৩৬) নামের এক যুবক।

তিন দিন আগে হওয়া এ হামলার সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর মঙ্গলবার বিষয়টি গণমাধ‌্যমকর্মীদের নজরে আসে।

ভুক্তভোগী যুবক অভিযোগ করেছেন, পুলিশ ও স্থানীয়দের উপস্থিতিতে তার ওপর হামলা হলেও তাকে রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসেননি।

যুবকের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পুলিশ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২০ ডিসেম্বর সদর উপজেলায় স্বামী পরিত্যক্তা এক নারী ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় ২২ ডিসেম্বর সদর থানায় মালিগাছা ইউপি চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলামসহ আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী নারীর পরিবার। ওই মামলা তদন্ত করতে গত ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় গাছপাড়া বাজারে যান সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খাইরুল ইসলাম ও এক কনস্টেবল।

মামলার সাক্ষ্য গ্রহণে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেন স্থানীয় নুরপুর এলাকার যুবক আব্দুল আলীম। গাছপাড়া বাজারের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বসে আলীমসহ কয়েকজনের সঙ্গে মামলার বিষয়ে কথা বলছিলেন খাইরুল ইসলাম। পুলিশ সদস‌্যরা চলে যাওয়ার পরপরই ধর্ষণ মামলার আসামিপক্ষের আরিফ, হেলাল, আশরাফসহ তাদের সহযোগীরা অতর্কিত আলীমের ওপর হামলা করেন। তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। এ হামলার সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন পরিদর্শক (তদন্ত) খাইরুল ইসলাম ও কনস্টেবল। এর পরেই আলীমকে মারধর শুরু করেন আসামিপক্ষের লোকজন। বেশকিছু সময় ধরে তাকে লাঠি, লোহার রড দিয়ে মারধর করে দুই পা ভেঙে দেয়া হয়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আলীম সাংবাদিকদের বলেন, ধর্ষণ মামলায় পুলিশকে সহযোগিতা করতে গিয়ে আমি হামলার শিকার হয়েছি। ওসি (তদন্ত) খাইরুল ইসলাম ধর্ষণ মামলায় সাক্ষী খুঁজে দিতে আমার সহযোগিতা চেয়েছিলেন। আমি তাকে সহযোগিতা করতে কয়েকজন সাক্ষীকে ডেকে নিয়ে কথা বলছিলাম। এ সময় আমার ওপর হামলা হয়। আমার কষ্ট হলো, যার কথায় সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসলাম, তিনি আমাকে রক্ষায় এগিয়ে এলেন না।

আলীমের স্ত্রী রুমা খাতুন জানান, পুলিশ অফিসার আমার স্বামীকে সহযোগিতা করার জন্য মোবাইলে ডেকে নিয়ে যান। তার উপস্থিতিতে হামলা হলো, অথচ তিনি সাহায‌্য করলেন না।

এ বিষয়ে সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খাইরুল ইসলাম বলেন, মামলার সাক্ষীর বিষয়ে কথা শেষ করে চলে আসার পর আলীমের ওপর হামলা হয়। কিছু দূরে যাওয়ার পর লোকজনের দৌড়াদৌড়ি দেখে তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাই এবং আশপাশের মোবাইল টিমকে খবর দেই।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, ঘটনার পর অভিযানে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আহত যুবকের স্ত্রী রুমা খাতুন বাদী হয়ে দশজনকে আসামি করে সোমবার রাতে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-সদর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের তেজেম প্রামাণিকের ছেলে আশররাফ হোসেন (৪৫) ও দারোগ আলীর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন (৪২)।

গৌতম কুমার বিশ্বাস আরো জানান, এ ঘটনায় পুলিশের গাফিলতি ছিল কি না, তা তদন্ত করতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) শামীমা আক্তারকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।


পাবনা/শাহীন রহমান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়