ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

জন্ম দিয়ে ফেলে গেলেন মা, কোলে তুলে নিলেন ডিসি

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:১০, ২৯ জানুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জন্ম দিয়ে ফেলে গেলেন মা, কোলে তুলে নিলেন ডিসি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভিক্ষুকের কাছে রেখে যাওয়া নবজাতককে দত্তক নিলেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী।

এখন থেকে এই নবজাতক জেলা প্রশাসকের কাছে থাকবে। তার আরেকটি মেয়ে সন্তানের সঙ্গে এ কন্যাশিশুটিও লালিত পালিত হবে।

গত ২৪ জানুয়ারি ভৈরব শহরের দুর্জয় মোড়ে নবজাতকটিকে এক বৃদ্ধা ভিক্ষুকের কাছে রেখে যায় এক নারী।

সোমবার কিশোরগঞ্জের ১ নম্বর আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রফিকুল বারীর এক  আদেশে শিশুটির অভিভাবকত্ব অর্জন করেন ডিসি।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে নবজাতক কন্যাশিশুটিকে ডিসি দম্পতির কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

শিশুটিকে দত্তক হিসেবে পেয়ে উচ্ছ্বসিত জেলা প্রশাসক বিকেলে বলেন, ‘নবজাতকটি পাওয়ার খবর শুনে আমি আমার স্ত্রী সুমনা আনোয়ারের সঙ্গে পরামর্শ করে শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করি। দত্তক পেয়ে আমরা খুব খুশি হয়েছি। মেয়েটিকে আমরা নিজেদের সন্তানের মতোই লালন পালন করব।’

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, শিশুটিকে পাওয়ার পর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার রিফ্ফাত জাহান ত্রপাকে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। পরে এ ব্যাপারে ভৈরব থানায় ফার্মেসির মালিক এক জিডি করেন। এরপর শিশুটির বিষয়ে করণীর জানতে সমাজসেবা কার্যালয়ের পক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

এরই মধ্যে জেলা প্রশাসক ২৬ জানুয়ারি শিশুটিকে দত্তক নিতে আদালতে আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ২৭ জানুয়ারি শিশুটিকে জেলা প্রশাসকের কাছে দত্তক দেওয়ার আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রফিকুল বারী।

কামরুজ্জামান খান আরো জানান, আদালতের আদেশ পাওয়ার পর হাসপাতাল থেকে ভৈরবের ইউএনও শিশুটিকে তার বাসায় নিয়ে যান। ডিসির দত্তক নেওয়া শিশুটি বর্তমানে তার পরিচর্যায় রয়েছে।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসার মো. মোহসিন জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এক নারী টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে ভৈরব দুর্জয় মোড়ে এক ভিক্ষুকের কাছে নবজাতককে রেখে যান। কিন্তু সেই নারী আর ফিরে আসেননি। এ অবস্থায় নবজাতক শিশুটিকে নিয়ে বিপাকে পড়েন ওই ভিক্ষুক।

পরে পাশের একটি ফার্মেসিতে গিয়ে পুরো ঘটনা খুলে বলেন বৃদ্ধা ভিক্ষুক। পরে ইসলাম ফার্মেসির মালিক আশরাফুল ইসলাম মুকুল শিশুটিকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।

তিনি জানান, শিশুটিকে যেদিন পাওয়া যায় তখন তার বয়স ছিল দুই দিন। নবজাতকটি এখন সুস্থ রয়েছে। বর্তমানে সে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা ফারজানার কাছে রয়েছে। বৃহস্পতিবার শিশুটিকে জেলা প্রশাসক ও তাঁর স্ত্রীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরের কথা রয়েছে।



রুমন/বুলাকী

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়