স্টেশন থেকে উদ্ধার হওয়া মাকে চিনলো না ছেলে!

চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলস্টেশনে পড়ে থাকা শতবর্ষী বৃদ্ধা রাহেলা বেগমকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে স্বজনদের কাছে।

কিন্তু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বৃদ্ধাকে দেখে চিনতে পারেননি তার ছেলে কাশেম।

মঙ্গলবার রাতে প্রশাসনিক কার্যক্রম শেষে গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সেই শতবর্ষী বৃদ্ধাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান।

বৃদ্ধা রাহেলা যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার নাভারন ইউনিয়নের মৃত নবী মণ্ডলের স্ত্রী।

এর আগে গত সোমবার সকালে ওই বৃদ্ধার ছেলে কাশেম বিভিন্ন সংবাদ মারফত খবর পেয়ে হাসপাতালেন যান। সেসময় তিনি তার গর্ভধারিণী মাকে শনাক্ত করতে ব‌্যর্থ হন।

এ নিয়ে এলাকাবাসী ও স্থানীয় প্রশাসনে তৈরি হয় নানান প্রশ্ন। পরে বৃদ্ধার পুত্রবধূ রহিমাসহ ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ওমর হোসেন সরদার হাসপাতালে গিয়ে বৃদ্ধাকে শনাক্ত করেন।

কাশেম বলেন, ‘‘অক্টোবর মাসের শেষের দিকে যশোরের বেনাপোলে তার ছোট ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন তার মা। এর কয়েকদিন পর ভাই মাকে বাসে তুলে দেয় বাড়ি ফেরার জন্য। কিন্তু ভুলবশত বাসের সুপারভাইজার নাভারনে না নামিয়ে তাকে যশোরে নামিয়ে দেন।

‘এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। হঠাৎ মাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর দেখতে আসি। দীর্ঘদিন পর মাকে দেখে প্রথম অবস্থায় চিনতে অসুবিধা হয়েছে। পরে বুঝতে পারি যে উনিই আমার মা।”

রহনপুর পৌর মেয়র তারিক আহমদ বলেন, ‘একজন ছেলে তার মাকে চিনতে না পারায় আমি হতবাক হয়েছি। তবে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং স্থানীয় লোকজন শনাক্ত করেছেন যে ওই বৃদ্ধা কাশেমের মা।’

গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় নিশ্চিত হয়েছি যে, ওই শতবর্ষী বৃদ্ধা-ই কাশেমের মা। আমরা তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি এবং সেখানে প্রশাসনের নজরদারিতে থাকবেন তিনি।’

এ দিকে রেলস্টেশন থেকে উদ্ধার করা ওই বৃদ্ধাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে পেরে তাকে দেখভাল করা এএসআই তোহিদুল, ডিএসবি সদস্য নুরনবী ও সিরাজ আনন্দ প্রকাশ করেন।

প্রসঙ্গত, গত ১২ জানুয়ারি রহনপুর রেলস্টেশন থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই বৃদ্ধা রাহেলা বেগমকে।


মিমপা/বুলাকী