ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

সুখসাগর পেঁয়াজে হাসছে মুজিবনগরের কৃষকেরা

জেলা সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১৬, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সুখসাগর পেঁয়াজে হাসছে মুজিবনগরের কৃষকেরা

পেঁয়াজের উচ্চফলনশীল জাত সুখসাগরের ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার কৃষকের চোখে-মুখে হাসি ফুটেছে। কয়েক বছর লোকসানের পর এবার লাভের দেখা পেলেও বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে দাম পড়ার শঙ্কাও আছে তাদের। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলছেন, ভরা মৌসুমে যাতে দেশে পেঁয়াজের আমদানি না হয়, সে লক্ষে কাজ করছেন তারা।

মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর কলোনীপাড়ার আলামিন হোসেন এ বছর দুই বিঘা জমিতে সুখসাগর পেঁয়াজের চাষ করেছেন। সরেজমিনে তার বাড়ির পাশের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, তার লাগানো ওই পেঁয়াজের জমি পরিচর্যায় ব্যস্ত তিনি। তিনি জানান, যেখানে দেশি জাতের পেঁয়াজের ফলন বিঘা প্রতি ৫০ থেকে ৬০ মন, সেখানে ভারতীয় জাত সুখসাগর পেঁয়াজের ফলন ৮০ থেকে ১০০ মন।

আলামিন হোসেন বলেন, এ মুহূর্তে প্রতিমন সুখসাগর পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার সাতশ’ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা মন দরে। চুরি হওয়ার ভয়ে রাত জেগে মুজিবনগর উপজেলা বিভিন্ন গ্রামে মূল্যবান এ সুখসাগর পেঁয়াজ পাহারা দিচ্ছেন কৃষক ও তাদের লোকজন।

সোনাপুর গ্রামের উত্তরপাড়ার মিনারুল ইসলাম জানান, সুখ সাগর পেঁয়াজ চাষ করতে প্রতি বিঘা জমির জন্য চাষ, সেচ, সার, বীজসহ মোট খরচ ৩০ হাজার টাকা। সে অনুযায়ী গেল চার বছর এলাকার কৃষক দাম পায়নি। এলসিতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির কারণে তাদের ব্যাপক লোকসান গুনতে হয়েছে। তাই তারা রাস্তায় এ পেঁয়াজ ঢেলে প্রতিবাদও করেছিলেন। এবার বাজারে এ পেঁয়াজের দাম বেশি থাকায় তারা লাভের আশা করছেন।

মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের কৃষক জাহারুল বিশ্বাস ব্যস্ত জমিতে পেঁয়াজের পরিচর্যায়। গেল বছরে চার বিঘা জমিতে ভারতীয় সুখসাগর জাতের পেঁয়াজ চাষ করে বড় ধরনের লোকসানের মূখে পড়েছিলেন তিনি। এবারও তিন বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছেন। উপজেলায় কোন সংরক্ষণাগার না থাকায় পেঁয়াজ খেত থেকে উঠিয়ে বিক্রি করলে নিশ্চিত লাভ হবে, তবে বিদেশ থেকে এ সময় আমদানির অনুমতি দিলে লোকসান হবে আবারো।

সোনাপুর গ্রামের পেঁয়াজ চাষী ফিরোজ আহমেদ মাস্টার বলেন, এভাবে দাম পেলে মুজিবনগরের চাষীরা আবারো আগের মত এ পেঁয়াজ চাষ শুরু করবে। সুখসাগর পেঁয়াজ চাষ সারাদেশে ছড়িয়ে দিলে দেশে পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা অনেকটা কমে আসবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মেহেরপুরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মোশারফ হোসেন বলেন, এবছর মুজিবনগর উপজেলায় এক হাজার একরেরও বেশি জমিতে সুখসাগর জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। এ জাতের পেঁয়াজে পানির পরিমান বেশি থাকায় লম্বা সময় ধরে সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। তবে গবেষণা চলছে। আর ভরা মৌসুমে যাতে দেশের বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করা হয়, সেই লক্ষে বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে কাজ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

এদিকে কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল মুঈদ জানান, এ মুহুর্তে সারা দেশে ছড়ানো যাচ্ছেনা এ জাতের পেঁয়াজের চাষ। দেশে এ জাতের পেঁয়াজের চাষ ছড়িয়ে দেবার লক্ষে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা।

 

মেহেরপুর/মহাসিন আলী/সাজেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়