ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

সারাবছর নীরব, দিবস এলেই সরব

মাহমুদুল হাসান মিলন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৬, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সারাবছর নীরব, দিবস এলেই সরব

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাঁচুয়া (জব্বার নগর) গ্রামে অবস্থিত ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। সারাবছর নীরব হয়ে পড়ে থাকে গ্রন্থাগারটি। কেবল ২১শে ফেব্রুয়ারি এলেই সময় সন্ধানীদের পদচারণায় সরব হয়ে ওঠে।

মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদের স্মৃতি রক্ষায় ২০০৮ সালে নির্মিত হয় গ্রন্থাগার ও জাদুঘর। সেবছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করা হয় প্রতিষ্ঠানটি।

তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা আনোয়ারুল ইকবাল, ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন, ভাষা সৈনিক বেগম রওশন আরা ও ভাষা সৈনিক ডা. হালিমা খাতুন ভাষা শহীদ আবদুল জব্বারের বাড়ির আঙ্গিনায় নির্মিত গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটি উদ্বোধন করেন।

স্থানীয় কলেজছাত্র রাকিব বলেন, ‘এই গ্রন্থাগারে উল্লেখ করার মতো কোনো বই নেই। নেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটিও। জাদুঘরেও নেই ভাষা শহীদের কোনো স্মৃতি চিহ্ন। নানা অব্যবস্থাপনায় দর্শনার্থী ও পাঠকদের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না এটি। এখানে ইন্টারনেট সেবাও নেই।’

স্থানীয় রিপন মিয়া বলেন, ‘মাঝে মাঝে সরকারি বিভিন্ন সেবামূলক কর্মসূচি পালন করা হয় এখানে। বছরের বেশিরভাগ সময়ই ফাঁকা পড়ে থাকে গ্রন্থাগারটি। শুধু ফেব্রুয়ারি মাস এলেই সাংবাদিকরা এসে ছবি তুলে নিয়ে যায়।’

গ্রন্থাগারিক মো. কায়সারুজ্জামান জানান, ৪১৩৫টি বই নিয়ে যাত্রা শুরু করে গ্রন্থাগারটি। ১২ বছর পার হলেও এখানে নতুন কোনো বই যোগ হয়নি। জাদুঘরে ভাষা শহীদের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং বইয়ের সংখ্যা বাড়ানো গেলে পাঠক-দর্শনার্থীদের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।’

ভাষা শহীদ আবদুল জব্বারের ছেলে মো. নুরুল ইসলাম বাদল মিয়া বলেন, ‘ভাষা শহীদের নামে কলেজ কিংবা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করা হলে গ্রন্থাগারটিতে প্রাণ সঞ্চার হবে। সেই সাথে ২০০৮ সালে ভাষা শহীদের গ্রামের নাম জব্বার নগর রাখা হয়। অথচ এতো দিনেও সরকারি গেজেটে তা প্রকাশ করা হয়নি।’

রাওনা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাহাবুল আলম বলেন, ‘দর্শনার্থী বাড়ানোর জন্য আমি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটিকে কেন্দ্র করে এলাকার মানুষ বিভিন্ন সেবামূলক সহায়তা পেয়ে থাকেন।’

গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মাহবুব উর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা অবগত আছি। কী করলে শহীদ আবদুল জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটি আরো পরিপূর্ণতা পায় সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ভাষা শহীদ আবদুল জব্বারের স্মৃতি গাঁথা নিদর্শনগুলো জাদুঘরে সংরক্ষণ এবং গ্রন্থাগারে তথ্যপ্রযুক্তি সুবিধা চালু করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।


ময়মনসিংহ/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়