ছাত্রাবাস নাকি সন্ত্রাসী আস্তানা!
যশোরের উপশহর শেখহাটি এলাকার একটি ছাত্রাবাস নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, এটি কী ছাত্রাবাস নাকি সন্ত্রাসী আস্তানা।
যশোরের উপশহরের কাজী ছাত্রাবাসে মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ওয়ান শুটার গান, পিস্তল, গুলি, ধারালো অস্ত্র, বোমা, বোমার তৈরির সরঞ্জাম, লোহার রড, মাদকদ্রব্য, ইয়াবা, জন্মনিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন উপকরণসহ দুটি মোটরসাইকেল জব্দ করেছে।
অভিযানকালে ৭ মামলার আসামি চিহ্নিত সন্ত্রাসী জুয়েল কাজীসহ তিনজন পালিয়ে গেছে। জুয়েল এ ছাত্রাবাসের মালিক এবং সদর উপজেলার শেখহাটি এলাকার কাজী আলমের ছেলে। জুয়েল ছাত্রলীগের সাবেক নেতা এবং তার পিতা কাজী আলম জেলা আওয়ামী লীগের বিগত কমিটির নেতা। তাদের দুইজনের বিরুদ্ধে একাধিক সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে।
কোতয়ালী থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে যশোর চাচড়া এলাকার চেকপোস্ট এলাকার নাজিম উদ্দিনের ছেলে রাশেদুল হাসান রাহুলকে সন্ত্রাসী জুয়েল ও তার সহযোগী পলিটেকনিক কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দড়াটানায় মারপিট করে এবং ছুরিকাঘাত করে। রাহুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় তার আত্মীয় ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে। এতে জুয়েল ও তার দলবল রাহুলের লোকজনকে হুমকি দেয়। ঘটনাটি পুলিশকে জানালে মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) গোলাম রব্বানী, কোতয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েলের বাড়ি এবং তার ছাত্রাবাসে অভিযান চালান। ছাত্রাবাস থেকে জুয়েলসহ তিনজন পিছন থেকে পালিয়ে যায়। পুলিশ গেট ভেঙ্গে ছাত্রাবাসের ১০টি রুমে তল্লাশি চালায়। এসময় জুয়েল ও তার পিতা কাজী আলমের রুম থেকে ওয়ান শুটার গান, রিভলবার, ৫রাউন্ড গুলি, ৩টি ধারালো অস্ত্র, ৫টি বোম, বোমা তৈরির বিপুল সরঞ্জাম, ১০টি লোহার রড, ২০০ পিস ইয়াবা, গাঁজা, মদের বোতল, দুটি মোটরসাইকেল জব্দ করে।
এসময় ছাত্রাবাসের বাসিন্দা মেহেরপুর মুজিবনগরের রাফিউল, তৌফিক, এবং সাতক্ষীরার শ্যামনগরের আবু হেনা রোকনসহ ২০জন ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় নেয়া হয়।
রাত ২টার দিকে কাজী ছাত্রাবাসে যশোরের পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, চিহ্নিত সন্ত্রাসী জুয়েল ও তার পিতা কাজী আলম এ ছাত্রাবাসে অবস্থান করেন। এখানে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, বোমা, পিস্তল,নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করা হয়েছে। পুলিশ এ ছাত্রাবাসটিকে ঘিরে রেখেছে।
বুধবার সকালে দ্বিতীয় দফা অভিযান চালানো হয়, তবে আর কোন অস্ত্র পাওয়া যায়নি।
সাকিরুল কবীর রিটন/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন