ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

উপকূলে ভেসে আসছে মৃত কচ্ছপ, ডলফিন (ভিডিও)

সুজাউদ্দিন রুবেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪০, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
উপকূলে ভেসে আসছে মৃত কচ্ছপ, ডলফিন (ভিডিও)

সাগরে কালো তেল নিঃস্বরণের ফলে কক্সবাজার উপকূলে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। একের পর এক তীরে ভেসে আসছে মৃত কচ্ছপ ও ডলফিন।

সমুদ্র বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব বর্জ্য জাহাজের জ্বালানি বর্জ্য হতে পারে। যা সমুদ্র এবং প্রাণীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। সরেজমিন পরিদর্শন করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর।

সরেজমিনে গিয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের সোনারপাড়া সৈকতের বালিয়াড়িতে দেখা মিলছে এসব কালো তৈলাক্ত বর্জ্য। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ৩ দিন ধরে সমুদ্রের জোয়ারের সাথে এসব উপকূলে ভেসে আসছে। আর এই তৈলাক্ত বর্জ্যের সাথে একের পর এক সাগর তীরে ভেসে আসছে মৃত কচ্ছপ, ডলফিন ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী। যা খাচ্ছে কুকুর ও কাকড়ার দল। জেলেরা জানিয়েছে, এই তৈলাক্ত বর্জ্যের কারণে সাগরে আরও মৃত ডলফিন ভাসছে।

এই অবস্থা শুধু সোনারপাড়া সৈকত এলাকার নয়, একই অবস্থা পাতোয়ারটেক সমুদ্র সৈকতেও। সেখানে দেখা গেছে, ২টি মৃত ডলফিন বালিয়াড়িতে পড়ে আছে। যা দলবেধে কুকুরের দল কামড়ে কামড়ে খাচ্ছে। আর তৈলাক্ত বর্জ্যে বালিয়াড়ি ছেয়ে গেছে।

স্থানীয় জেলে নুর আলম জানান, এসব কালো তৈলাক্ত বর্জ্য শরীরে লাগলে জ্বালা-যন্ত্রণা করছে। এসব বর্জ্যের সাথে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ভেসে আসছে কচ্ছপ ও ডলফিন।

সৈকতে দূগন্ধ সৃষ্টি হয়ে অসহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন, জেলে বেলাল উদ্দিন। তিনি জানান, সোনারপাড়া সৈকত থেকে শুরু করে টেকনাফে খুরের মুখ এলাকা পর্যন্ত একই পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

মৎস্য ব্যবসায়ী রহমত উল্লাহ জানান, তৈলাক্ত বর্জ্য সমুহ কোন বড় জাহাজ থেকে ফেলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন সৈকতে মৃত কাছিম ও ডলফিল গুলো কুকুর টানাটানি করছে। দূগন্ধের কারণে পরিবেশ ভারী হলেও যেন দেখার কেউ নেই।

সমুদ্র বিশেষজ্ঞ সোনারপাড়াস্থ বলাকা হ্যাচারীর মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুদাব্বির রহমান খন্দকার জানান, যে সব তৈলাক্ত বর্জ্য তিনি দেখেছেন তা জাহাজের জ্বালানি বর্জ্য হতে পারে। এতে সমুদ্রের পানীর উপরের স্তর দূষিত হয়ে গেছে। এর কারণে চিংড়ি হ্যাচারীগুলোকে পানি উত্তেলনে সর্তকর্তা অবলম্বন করতে হচ্ছে। এসব বর্জ্য সমুদ্র এবং প্রাণীর জন্য খুবই ক্ষতিকর। এর কারণেই মারা যাচ্ছে ডলফিল সহ অন্যান্য প্রাণী। যে সব বর্জ্য ভেসে উপকূলে আসছে এতে বালিয়াড়ির উপরে অংশও দূষিত হচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে দূষণের মাত্রা আরো বেড়ে যাবে।

কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. আশরাফুল আফসার বলেন, ইতিমধ্যে বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। এ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার মাধ্যমে বিষয়টি কি হচ্ছে নিশ্চিত করা হবে।  একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রয়োজনে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হবে।

কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শেখ নাজমুল হুদা জানান, বিষয়টি তারা অবহিত হয়েছেন। তিনি সরেজমিনে পরিদর্শন করতে যাবেন।
 



কক্সবাজার/সুজাউদ্দিন রুবেল/নাসিম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়