কবি সুকান্ত মেলা শুরু

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় পাঁচ দিনব্যাপী কবি সুকান্ত মেলা শুরু হয়েছে।

রোববার থেকে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই মেলা শুরু হয়। 

রোববার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলা উদ্বোধন করবেন। উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের উনশিয়া গ্রামে কবির পৈত্রিক ভিটায় এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে।

পাঁচ দিনব্যাপী এ মেলায় উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে কবিতা পাঠ, রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও থাকবে বাংলাদেশের বিভিন্ন নামি-দামি শিল্পীর অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বসবে গ্রামীণ মেলা।

এ মেলাকে কেন্দ্র করে নবরুপে সেজেছে কবির বাড়ি ও এর আশপাশের এলাকা। এ মেলাকে ঘিরে উপজেলাব্যাপী বইছে উৎসবের আমেজ। উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃংখলা বাহিনী কবির বাড়ির সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে মেলার সকল প্রস্তুতি। আগামী বৃহস্পতিবার এ মেলা শেষ হবে।

কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বলেন, ‘এ মেলাকে ঘিরে উপজেলাব্যাপী বইছে উৎসবের আমেজ। উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তি ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় সার্বিক সহযোগিতায় আমরা এ মেলার আয়োজন করেছি। আগামীতেও এ মেলা যাতে অব্যাহত থাকে সে জন্য আমরা দলীয় ভাবে কাজ করে যাবো।’

জেলা পরিষদ সদস্য নজরুল ইসলাম হাজরা মন্নু বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে আমরা কবির জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী যাতে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হয় তার জন্য চেষ্টা করে আসছি। আমাদের চেষ্টা কিছুটা হলেও সার্থক হয়েছে। এ বছর আনন্দমুখর পরিবেশে মেলাটি উদ্যাপিত হবে।’

কবি সুকান্ত স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক অশোক কর্মকার বলেন, ‘কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আট বছর ধরে কবির পৈত্রিক ভিটায় আমরা মেলা করে আসছি। কবির জন্ম আগস্ট মাসে। কিন্তু আগস্ট মাস শোকের মাস থাকায় আমরা প্রতিবছর মার্চের প্রথম সপ্তাহে এ মেলার আয়োজন করে থাকি। এ বছরও আমরা জাকজমকপূর্ণ ভাবে মেলার আয়োজন করেছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘স্থানীয় সুধীজনদের সহযোগিতায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রাণালয় ও জেলা প্রশাসন এ মেলা আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা মেলার সকল আয়োজন শেষ করেছি। আমি চাইবো প্রশাসন ও এলাকাবাসী যেন আগামীতে কবির স্মৃতি ধরে রাখার জন্য এ ধরনের গ্রামীণ মেলার আয়োজন করেন। এছাড়া কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের আদর্শকে বর্তমান যুব সমাজের মাঝে ছড়িয়ে দিতে আমাদের নানামূখী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’

প্রসঙ্গত, ১৯২৬ সালের ১৫ আগষ্ট কবি সুকান্ত ভট্রাচার্য্য কলিকাতার কালীঘাটের মহিমা হালদার স্ট্রিটে মামা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম নিবারণ ভট্রাচার্য্য। মাতা সুনীতি দেবী। ১৯৪৭ সালের ১৩ মে মাত্র ২১ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন। ‘ছাড়পত্র’, ‘ঘুম নেই’, ‘পূর্বাভাস’, ‘অভিযান’, ‘হরতাল’ তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। কবির প্রতিটি কবিতায় অনাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে।


বাদল/বুলাকী