ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

তেলিদের খোঁজ নেয় না কেউ

লালমনিরহাট সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ৭ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
তেলিদের খোঁজ নেয় না কেউ

হারিয়ে যেতে বসেছে ‘ঘানি ভাঙা সরিষার তেল’। বিজ্ঞাপনে-বইপত্রে ঘানির তেলের প্রশংসা থাকলেও তেলিদের (ঘানি চালক) খোঁজ নেয় না কেউ।

লালমনিরহাট জেলা শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে ধরলার চরে জহুরুল হক তেলির বাড়ি। তার ৮২ বছরের জীবন পার করেছে ঘানির তেল উৎপাদনে। তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গরু দিয়ে দুটি ঘানি ঘুরিয়ে সমান তালে চলছে তেল উৎপাদনের কাজ।

জহুরুল হক বলেন, সকাল ৯টা থেকে দুইটি গরু তেল মাড়াইয়ের কাজ শুরু করে। প্রতিদিন ২১ কেজি সরিষা থেকে ৫/৬ লিটার তেল উৎপাদন হয়। ৭ কেজি সরিষায় তেল হয় দুই লিটারের কিছু কম। প্রতি লিটার ৩০০ টাকায় বেচতে হয়। বর্তমানে নতুন সরিষা ও কালো রংয়ের কাজলী সরিষার তেল কম হয়। কিন্তু কাজলী সরিষার তেল গুণেমানে সেরা। অন্যান্য যে জাতগুলো আছে, সেগুলোর তেল বেশি হয় কিন্তু তেলে রসুনের একটা গন্ধ থাকে।

জহুরুল হক জানান, তার উৎপাদিত সমস্ত তেল বাড়ি থেকেই বিক্রি হয়ে যায়। সুদূর রংপুর থেকে এসেও তেল নিয়ে যায় মানুষ।

ঘানিতে তেল উৎপাদন অনেকটা আদিম ও জটিল। গরুর চোখে কাপড় বা ক্যাপ দিয়ে বন্ধ করে দিতে হয়, যাতে গরু ঘুরতে ঘুরতে মাথা না ঘোরে।

জহুরুল হক জানান, ঘানি তৈরিতে কাঁঠাল গাছ ভালো। একটি আস্ত কাঁঠাল গাছের গুড়ির দাম ২০ হাজার টাকার বেশি। একটি বলদ গরুর দাম ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা।

লালমনিরহাটে অনেক জায়গার নাম তেলিপাড়া, তেলির মোড়, তেলিটারী হলেও সেখানে নেই কোনো ঘানি। অনেকেই তাদের পূর্বপুরুষের ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। হয়তো কেউ কেউ টিকে থাকার জন্য অতি আধুনিকতায় গা ভাসিয়েছেন।

জাহিদ হাসান, মোকলেসুর রহমান, শরীফ, রাশাসহ স্থানীয় অনেকের সঙ্গেই ঘানি নিয়ে কথা হয়- তারা বলছেন, আদি ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে এ শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখা উচিত। প্রয়োজন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা।

 

ফারুক আলম/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়