পুরোহিত হত্যায় রাজীব গান্ধীসহ চার জঙ্গির ফাঁসি
পঞ্চগড়ের দেবিগঞ্জ উপজেলার সোনাপাতা এলাকার শ্রী শ্রী সন্ত গৌড়ীয় মঠের প্রধান পুরোহিত অধ্যক্ষ যজ্ঞেশ্বর রায়কে গলাকেটে হত্যার মামলার রায়ে চারজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এরা চারজনই নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবির) সদস্য।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার চাঞ্চল্যকর এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধীও আছেন। রায়ে আদালত তিনজনকে বেকসুর খালাসও দিয়েছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জেএমবির অন্য সদস্যরা হলেন- বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার ক্ষুদ্র কুষ্টিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী মোল্লার ছেলে রাজিবুল ইসলাম মোল্লা ওরফে বাদল ওরফে বাঁধন, পঞ্চগড়ের দেবিগঞ্জ উপজেলার দেবগঞ্জ কামাতপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে আলমগীর হোসেন এবং দেবিগঞ্জের প্রধানাবাদ মসজিদপাড়া গ্রামের মৃত আবুল খায়েরের ছেলে রমজান আলী।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা রাজীব গান্ধী গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পূর্ব ভূতমারা গ্রামের ওসমান গণির ছেলে। এদের মধ্যে রাজিবুল ইসলাম মোল্লা পলাতক আছেন। বাকিরা রায় ঘোষণার সময় আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত দেবিগঞ্জের কালীরডাঙ্গা গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে হারেজ আলী, বানিয়াপুর প্রধানপাড়া গ্রামের মৃত তায়েজ উদ্দিনের ছেলে খলিলুর রহমান ও পূর্ব দেবিডুবা নাজিরনপাড়া গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে মো. রানাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। এদের মধ্যে রানা পলাতক ছিলেন। বাকি দুইজনকে কারাগার থেকে মুক্তির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া পলাতক রাজিবুল ইসলামকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
২০১৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভোরে পঞ্চগড়ের দেবিগঞ্জ উপজেলা সদরের চীন-মৈত্রী সেতু সংলগ্ন সোনাপাতা এলাকায় পুরোহিত অধ্যক্ষ যজ্ঞেশ্বর রায়কে গলাকেটে হত্যা করা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন একই মঠের আরেক সেবক। এ ঘটনায় ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বড় ভাই রবীন্দ্রনাথ রায়। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে আরও দুটি মামলা দায়ের করে দেবিগঞ্জ থানা পুলিশ।
রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারের জন্য রাজশাহীর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। ঘোষিত রায়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
রাজশাহী/তানজিমুল/বুলাকী/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন