ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বাজার থেকে উধাও প্যারাসিটামল

ঝালকাঠি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০৪, ২৯ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাজার থেকে উধাও প্যারাসিটামল

ঝালকাঠির বাজার থেকে হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গেছে জ্বর-ব্যথানাশক প্যারাসিটামলজাতীয় ওষুধ নাপা, এইসসহ জীবাণুনাশক হ্যান্ড স্যানিটাইজার হেক্সিসল, স্যাভলন ও ডেটল। সেই সঙ্গে মাস্কের মূল্যও চড়া।

ক্রেতারা বাজারে হন্যে হয়েও খুঁজে পাচ্ছেন না ওষুধসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষাকারী এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী।

অনেক দোকানে জীবাণুনাশক সামগ্রী নেই বলে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। ক্রেতাদের অভিযোগ—পাইকারি ওষুধ বিক্রেতারা অতিমুনাফার লোভে গুদামজাত করে রেখেছেন ওষুধসহ জীবাণু ধ্বংসকারী এসব সামগ্রী। অনেকে পরিচিত বা খুচরা ওষুধ বিক্রেতাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছেন।

তবে, পাইকারি ওষুধ বিক্রেতারা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি থেকে এসব পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে না। যে কারণে তারা ক্রেতাদের দিতে পারছেন না।

ঝালকাঠি শহরের কালীবাড়ি রোড, স্টেশন রোড, পূর্বচাঁদকাঠিসহ শতাধিক দোকান খুঁজেও পাওয়া যায়নি হ্যান্ড স্যানিটাইজার হেক্সিসল, ডেটলসহ জীবাণুনাশক সামগ্রী। অনেক দোকানে পাওয়া যায়নি জ্বর-সর্দি-কাশির জন্য ব্যবহৃত ওষুধ নাপা, এইস ও প্যারাসিটামল ট্যাবলেট।

মো. আব্দুল মালেক নামে এক ক্রেতা অভিযোগ করে জানান, ঝালকাঠির ওষুধের দোকানগুলোতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হেক্সিসল, ডেটল পাওয়া যাচ্ছে না। শহরের বড় দোকানগুলো থেকে বলা হচ্ছে সাপ্লাই (সরবরাহ) নেই। কিন্তু পাড়া-মহল্লাসহ বিভিন্ন ছোট ওষুধের দোকানিরা এসে চাইলে ঠিকই জীবাণুনাশক ওষুধ দেয়া হচ্ছে। তাই উপায়হীন হয়ে ব্যক্তি উদ্যোগে তৈরি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার এখন একমাত্র ভরসা।

পাইকারি ও খুচরা ওষুধ ব্যবসায়ী ফেরদৌস হোসেন বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে ওষুধ কোম্পানি থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার হেক্সিসলসহ জীবাণুনাশক ওষুধ সরবরাহ করছে না। কোম্পানিগুলোকে বারবার তাগাদা দেয়ার পরও তারা দিচ্ছে না। যা দিচ্ছে তা চাহিদার তুলনায় খুবই কম। প্রতিদিন অনেক কাস্টমার এসব পণ্য চাইছেন। কিন্তু দিতে পারছি না।’

এ বিষয়ে ঝালকাঠি জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মুন্সি আবুল কালাম আজাদ জানান, এসিআই, অ্যারিস্টোফার্মা, জেনারেলসহ দেশের প্রায় ৩০ কোম্পানি জীবাণুনাশক সামগ্রী বাজারজাত করছে। কিন্তু দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর থেকেই এসব পণ্য সরবরাহ করছে না কোম্পানিগুলো। প্রতিদিন ক্রেতারা এসে ফিরে যাচ্ছেন। এতে আমাদেরও খারাপ লাগছে। তবে, তিনি মজুদ করে বেশি দামে ওষুধ বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেন।

অপরদিকে, বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাস্ক। আকার ও মান ভেদে প্রতিটি মাস্কের দাম প্রায় দ্বিগুণ রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।

এ বিষয়ে দোকানি রাসেল খান মামুন বলেন, ‘আমরা মাস্ক তৈরি করে বিক্রি করি না। গার্মেন্টস থেকে সরবরাহ করা মাস্ক যে দামে পাইকারি বিক্রি করে তা থেকে সামান্য ব্যবসা রেখেই ক্রেতাগণের কাছে বিক্রি করা হয়।’

এসময়, ক্রেতাদের দ্বিগুণ দাম রাখার অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

দাম বেশি রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান জানান, এই সময়ে যারা ওষুধ ও মাস্কের দাম বেশি নিবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিগগিরিই বিষয়টা তদন্ত করে দেখারে জন্য মাঠে নামবে পুলিশ। তদন্তে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ঝালকাঠি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজী আক্তার জানান, ইতোমধ্যে বেশি দাম নেয়ার বিষয়ে অভিযোগ এসেছে। ওষুধের দোকানগুলো মনিটরিং করা হবে। যারাই দাম বেশি নিবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

অলোক/বুলাকী

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়