বান্দরবানে হাম রোগে ৭০৩ শিশুকে টিকা প্রদান

বান্দরবানে হাম রোগে দুর্গম পাহাড়ের ২৬ পাড়ার ৭০৩ শিশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. অংসুই প্রু।  

সিভিল সার্জন ডা. অংসুই প্রু জানান, প্রতি বছরের মত চলতি বছরও স্বাস্থ্য বিভাগ গত ১৮ মার্চ থেকে আগামী ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ৯ মাস থেকে ১০ বছর বয়সি সকল শিশুকে হাম-রুবেলার টিকা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে।

কিন্তু, করোনাভাইরাসের কারণে হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইন স্থগিত ঘোষণা করে স্বাস্থ্য বিভাগ। ঠিক তখনই বান্দরবানের লামা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকার পাহাড়গুলোতে হাম রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এ কারণে ক্যাম্পেইন স্থগিত থাকা সত্বেও ২৬টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি ও বাঙ্গালী পাড়ার ৭০৩ শিশুকে হাম-রুবেলার টিকা প্রদান করে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) রুপন কান্তি

চৌধুরী জানান, ইতোমধ্যে উপজেলা সদর ইউনিয়নে পুরাতন লাইল্যা মুরুং পাড়ার ৮ পরিবারের ৩৫ সদস্য এ রোগে আক্রান্ত হন। এ সময় দুতিয়া মুরুং নামের এক শিশুও মারা যায়। পরে আক্রান্ত ৩৩ হাম রোগীকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে ভালো করা হয়। এ কারণে দুর্গমতা বিবেচনায় ২৬ পাড়ায় টিকা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি মাথায় রেখে আউটব্রেক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে। এজন্য একজন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শককে প্রধান করে দুই স্বাস্থ্য সহকারীর সমন্বয়ে তিন সদস্যের তিনটি ভ্যাকসিনেশন টিমও গঠন করা হয়।

পরে দুর্গম পাহাড়ি এলাকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি ও বাঙ্গালী পাড়ায় আউটব্রেক অনুসন্ধানের মাধ্যমে উপজেলার পুরাতন তাউ পাড়া, নতুন তাউ পাড়া, লক্ষণ ঝিরি মুরুং পাড়া, লক্ষণঝিরি মুসলিম পাড়া, ক্ষুদিঝিরি মার্মা পাড়া, কালু মুরুং পাড়া (নতুন ও পুরাতন), কয়লা পুডার ঝিরি মার্মা পাড়া, বদলা পাড়া, সিনাই পাড়া, শিলাচন্দ্র পাড়া, নতুন লাইল্যা পাড়া, পুরাতন লাইল্যা পাড়া, খ্রিষ্টান পাড়া, ডলুরঝিরি মার্মা পাড়া, কাংকু উপর পাড়া, কলই পাড়া, বুলুং পাড়া, নতুন টুক্রইং পাড়া, মালা ঝিরি পাড়া, মাংখ্যাই পাড়া, অংহ্ণাই কারবারী পাড়া, মেরিং পাড়া, গন্ডু পাড়া, কাইরং পাড়া, অংহ্লা পাড়া, পারাউ মেম্বার পাড়ার ৭০৩ শিশুকে হাম-রুবেলার টিকা প্রদান করা হয়।

এ বিষয়ে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদুল হক বলেন, দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার কারণে অনুসন্ধানের মাধ্যমে হাম রুবেলা টিকা প্রদান করা হয়। করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে উপজেলার সর্বমোট ৩৫ হাজার শিশুকে হাম-রুবেলা টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এই টিকা দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি পাড়ার ৮ পরিবারের ৩৩ জন হাম রোগী সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন।


বাসু/বুলাকী