ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

করোনা সচেতনতায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেনাবাহিনী

সুজাউদ্দিন রুবেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৭, ২ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
করোনা সচেতনতায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেনাবাহিনী

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশিদের অবাধ চলাচল বন্ধে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী। টহল জোরদারের পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রবেশপথে বসানো হয়েছে চেকপোষ্ট।

আর রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প থেকে বের হওয়া বন্ধ করতে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে নতুন ১০টি চেকপোষ্ট স্থাপন করেছে পুলিশ। তবে এই মুহূর্তে ক্যাম্প লকডাউনের প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক।

বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উখিয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পয়েন্টে পুলিশের পাশাপাশি স্থাপন করা হয়েছে সেনাবাহিনীর চেকপোষ্ট। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ক্যাম্পে বিদেশিদের অবাধ যাতায়াত বন্ধ করতে চলছে তল্লাশি। ত্রাণ, স্বাস্থ্যকর্মী কিংবা সরকারি কর্মকর্তা ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

আর যারা ক্যাম্পে প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছেন, তাদের নাম-ঠিকানা সেনাবাহিনীর খাতায় লিখে ক্যাম্পে প্রবেশ করছেন। আর বাকিদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে মানবিক সহায়তাকারী সংস্থা, সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এর সাথে রোহিঙ্গাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে চলছে মাইকিং।

কুতুপালং ক্যাম্প-৫, ডি-২ ব্লকের বাসিন্দা নুরুল কবির বলেন, ‘বিশ্বে করোনাভাইরাস নামে একটা অসুখ এসেছে। এতে অনেক লোক মারা যাচ্ছে এবং অসুস্থ হচ্ছে শুনেছি। কিন্তু এই করোনা অসুখ থেকে আল্লাহ আমাদেরকে বাঁচিয়েছে।’

ক্যাম্প-৪ এর বাসিন্দা রশিদ আহমদ বলেন, ‘এনজিও সংস্থা, পুলিশ ও সেনাবাহিনী আমাদেরকে পরিষ্কার থাকতে বলছে। তাই খাবার আগে ও পরে ভালোভাবে হাত ধুতে বলেছে এবং সাবানও দিয়ে গেছে।’

এ ব্যাপারে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মর্জিন আকতার জানান, আগে সড়কে ৩টি চেকপোষ্ট ছিল। এখন রোহিঙ্গারা যাতে ক্যাম্প থেকে বাইরে যেতে না পারে, সেজন্য ক্যাম্পের অভ্যন্তরে নতুন করে ১০টি চেকপোষ্ট করা হয়েছে। ক্যাম্পের ভেতরে কোনো জায়গায় ৩টি, কোনো জায়গায় ২টি আবার কোনো জায়গায় ১টি চেকপোষ্ট স্থাপন করে ক্যাম্প থেকে বাইরে যাওয়ার পথ বন্ধ করা হয়েছে সম্প্রতি সময়ের জন্য।’

তিনি আরো জানান, পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ৪টি টিম প্রতিনিয়ত টহল দিচ্ছে এবং চেকপোষ্টও করেছেন। এতে বলা যায়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে এটি কাজে আসবে।

জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এই মুহূর্তে লকডাউনের প্রয়োজন দেখছি না। যদি করোনাভাইরাস আক্রান্ত কেউ শনাক্ত হয়, তাহলে জরুরি মুহূর্তে এটা প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে ক্যাম্পে স্বাভাবিক কার্যক্রমও চলমান থাকা প্রয়োজন। পরিস্থিতি বুঝে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার, সেটাই নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে রোহিঙ্গারা। তখন এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সেনাবাহিনী। এবার তারা নামলো রোহিঙ্গাদের মাঝে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে। তবে রোহিঙ্গারা নিজেরা যদি সচেতন না হয়, তাহলে এই সংক্রমণ ঠেকানো দুরূহ হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।


কক্সবাজার/মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়