ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মহাসড়কে চলছে যানবাহন

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩১, ৪ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মহাসড়কে চলছে যানবাহন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সড়ক-মহাসড়কে সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। পণ্যবাহী ট্রাক-পিকআপে যাত্রী বহনের ওপরও  নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে চলছে যাত্রীবাহী বাস। ট্রাক-পিকআপেও যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে।

শনিবার (৪ এপ্রিল) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত অবস্থান করে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশে আশেকপুর বাইপাস, রাবনা বাইপাস ও এলেঙ্গায় এমন চিত্র দেখা গেছে।

মহাসড়কে দেখা যায়, কিছু সময় পর পর ঢাকার দিকে যাচ্ছে একটি-দুটি করে যাত্রীবাহী বাস। এসব বাসে তিল ধারণের জায়গা নেই। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত রাবনা বাইপাস ও এলেঙ্গায় ঢাকাগামী ৩০-৪০টি বাসের দেখা মেলে। এসব বাসে মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ পর্যন্ত যাত্রী বহন করা হচ্ছে। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী বাসগুলোতে তেমন যাত্রীর দেখা না মিললেও এসব সকল বাস এলেঙ্গা থেকে যাত্রী নিয়ে আবারও রাজধানীর পথে ফিরছে।

মহাসড়কের বিভিন্ন বাইপাস ও যাত্রী ওঠানামার স্থানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে যাত্রীদের ভিড়। তাদের বেশিরভাগই ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিক। আগামীকাল (৫ এপ্রিল) রোববার কিছু পোশাক কারখানা চালু হবে। তাই করোনাভীতি দূরে ঠেলে তারা ছুটছেন কর্মস্থলের দিকে। কিন্তু পর্যাপ্ত গণপরিবহন না থাকায় তাদেরকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

সরকারি নিষেধাজ্ঞা সত্বেও কেন রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বের হয়েছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে চালকরা বলেন, পেটের দায়ে সড়কে গাড়ি নামিয়েছেন তারা।

আব্দুর রাজ্জাক নামের এক বৃদ্ধ বাসচালক রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আগামীকাল পোশাক কারখানা খুলবে। তাই অনেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছে। যদি আমরা গাড়ি না চালাই, তাহলে তারা কীভাবে যাবে? যাত্রীদের অনুরোধেই আমরা কিছু চালক রাস্তায় গাড়ি নামিয়েছি। আমরা ভাগে ভাগে যাত্রী নিচ্ছি। উত্তরবঙ্গ থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত, চন্দ্রা থেকে ঢাকা পর্যন্ত বেশকিছু বাস চলছে। কয়েকদিন আমরা গাড়ি চালাইনি। এখন গাড়ি না চালালে তো খাবার জুটবে না।’

আরো কিছু বাসচালকদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তারা কথা বলতে চাননি। মালিক সমিতি সমস্যা করবে, এ অজুহাত দেখিয়ে কথা বলতে রাজি হননি তারা।

এদিকে, মহাসড়কে বাসের পাশাপাশি চলছে মাইক্রোবাসসহ অন্যান্য ছোট গাড়ি। মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে গাজীপুরের চন্দ্রা পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করছে এসব যানবাহন। বেশি ভাড়া নিলেও সামাজিক দূরত্বের কথা ভুলে এসব গাড়িতেই উঠছে মানুষ।

মহাসড়কের এলেঙ্গায় যাত্রীর অপেক্ষায় থাকা সাদ্দাম নামের এক মাইক্রোবাস চালক রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘জানি, করোনাভাইরাস মহামারি হইতাছে। কিন্তু ঘরে বইসা থাকলে তো আর পেট চলবো না। আমাদেরও তো পরিবার আছে, বউ-বাচ্চা আছে। তাই বাধ্য হয়া গাড়ি নিয়া রাস্তায় নামছি। তাতে যাত্রীদেরও উপকার হইতাছে। তারাও চাকরি বাঁচানোর জন্য যাইতে পারতাছে।’

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট রাজিব বর্মন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সরকারি নিষেধাজ্ঞার পরও মহাসড়কে দুই-একটি যাত্রীবাহী বাস চলছে না, এটি আসলে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কারণ, আগামীকাল থেকে পোশাক কারখানাগুলো খোলা। তাই শ্রমিকরা বাধ্য হয়েই গন্তব্যে যাবার জন্য মহাসড়কে ভিড় করছেন। সেই সুযোগে কিছু যাত্রীবাহী বাস চলাচল করছে। যদিও সেটির সংখ্যা খুবই কম। মানবিক দিক বিবেচনা করে আর যাত্রীদের ভোগান্তির কথা ভেবে বাসগুলো চলতে দিতে হচ্ছে। কারণ, এই বাসগুলো থামিয়ে দিলে যাত্রীরা মাঝপথে বিপদ পড়বেন। যে বাসগুলো ফাঁকা আছে সেগুলো আমরা ফিরিয়ে দিচ্ছি। আর ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো থানায় নেওয়া হচ্ছে।’


টাঙ্গাইল/সিফাত/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়