ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ভাটার গ্যাসে ফলমূল-শাকসবজির ক্ষতি

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৬, ১৫ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ভাটার গ্যাসে ফলমূল-শাকসবজির ক্ষতি

পাবনার চাটমোহর উপজেলার ধূলাউড়ি গ্রামে সিটিবি নামের একটি ইট ভাটার ছাড়া গ্যাসে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ক্ষেতের শাকসবজি আর গাছের ফলমূল।

ঝরে পড়ছে আম, লিচু, ডালিম, পেয়ারা, ডাবের গুটিসহ নানা ফল। এছাড়া ক্ষেতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কলা গাছ। মারা যাচ্ছে কবুতর। এতে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ওই এলাকার প্রায় তিন শতাধিক পরিবার।

এসব ঘটনায় ওই ইট ভাটা উচ্ছেদ চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

সরেজমিন ঘুরের ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের ধুলাউড়ি গ্রামে আবাসিক এলাকার মধ্যে যৌথ মালিকানায় স্থাপন করা হয় সিটিবি ইটভাটা। ওই ইটভাটার আশপাশে প্রায় তিন শতাধিক পরিবারের বাস। রয়েছে স্কুল-মাদ্রাসা।

চলতি মৌসুম শেষ হওয়ার পর ওই ইট ভাটা থেকে গ্যাস (গরম হাওয়া) ছেড়ে দেন ভাটার মালিক। এতে নির্গত গ্যাসে ওই এলাকার এসব ক্ষয়ক্ষতি হয়।

গাছ থেকে আম, লিচু, ডাব, ডালিম, পেয়ারা পঁচে ঝরে পড়েছে। মারা গেছে বেশ কিছু পোষা কবুতরও। ফল ও ফসলের এমন ক্ষতিতে দিশেহারা এলাকাবাসী। বিরূপ প্রভাব পড়েছে পরিবেশ, জীববৈচিত্র ও জনস্বাস্থ্যের ওপর। শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে অসুস্থ হচ্ছেন বয়োবৃদ্ধ ও শিশুরা।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীদের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, প্রতিবছর ওই (সিটিবি) ভাটার গ্যাস ছাড়ার কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হন তারা। তবে এ বছর ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। কয়েক বছর ধরে এমন পরিস্থিতি চললেও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না ইট ভাটার মালিক। আর ইট ভাটার গ্যাসে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে বলেও দাবি স্থানীয়দের।

এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইটভাটার মালিক (একাংশ) আবদুল খালেকের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

চাটমোহর উপজেলা কৃষি অফিসার এ এ মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘প্রায় ণয় বছর ধরে এই ইটভাটা চলছে। তবে কৃষি বিভাগ থেকে ভাটাটিকে কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। ফল-ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শনে মিলেছে সত্যতা। ইট ভাটার কারণে পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের ওপর দীর্ঘমেয়াদী বিরূপ প্রভাব পড়ছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মোহাম্মদ রায়হান জানান, এলাকাবাসীর লিখিত একটি অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি জেলা প্রশাসক স্যারকে জানানো হয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশনা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র জাতীয় পরিষদ সদস্য এস এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের আশ্রয় প্রশ্রয় ও প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় ইটভাটা মালিকরা সাহস পাচ্ছেন। প্রশাসন এখানে নির্বিকার। মাঝে মধ্যে লোকদেখানো অভিযান চালায়। দুদিন পর আবার আগের মতো চলতে থাকে। এক্ষত্রে প্রশাসন ও রাজনীতিবিদদের নির্মোহভাবে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে উদ্যোগী হতে হবে।’

 

শাহীন রহমান/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়