ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ভারতে খুন হওয়া মাধবপুরের যুবকের লাশের অপেক্ষায় পরিবার

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩৪, ২৮ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ভারতে খুন হওয়া মাধবপুরের যুবকের লাশের অপেক্ষায় পরিবার

ভারতে খুন হওয়া মাধবপুরের যুবক লোকমান হোসেনের (৩২) লাশের অপেক্ষায় রয়েছেন তার পরিবার।

নিহতের পরিবার জানান, ২৪ মে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের মোহনপুর এলাকায় নিজের ফুপুর বাড়ি যাচ্ছিলেন লোকমান হোসেন। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গোপালনগর পৌঁছাতেই একদল ভারতীয় নাগরিক লোকমান হোসেনকে পথরোধ করে গরুচোর সন্দেহে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন।

এ সময় তিনি চোর নন, বেড়াতে এসেছেন জানিয়ে বার বার আকুতি করলেও তাদের মন গলেনি। এলোপাথাড়ি পিটুনির এক পর্যায়ে তিনি মারা যান। ভারতীয় গণমাধ্যমে লোকমানের আকুতির ভিডিও প্রচার হয়েছে। গরুচোর সন্দেহে গণপিটুনিতে তার মৃত্যুর খবর প্রচার করে ত্রিপুরার গণমাধ্যম।

মৃত ভেবে ভারতীয়রা লোকমানকে বাংলাদেশ সীমান্তের অদূরে একটি জঙ্গলে ফেলে রাখে। খবর পেয়ে পশ্চিম ত্রিপুরা রাজ্যের সিধাই থানা পুলিশ মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে লোকমানের মৃত্যু হয়।

লোকমানের লাশ বাংলাদেশে আনার বিষয়ে দুদেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে কয়েকদফা আলোচনা হয়। সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২৭মে বিকালে মোহনপুর সীমান্ত দিয়ে লোকমান হোসেনের মরদেহ হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু ভারতের পশ্চিম ত্রীপুরার সিধাই থানা পুলিশ লোকমান হোসেনের মৃত্যু সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে আসেনি। তারা হত্যাকাণ্ডকে অপমৃত্যু বলছে।

এ বিষয়ে ৫৫ বিজিবির ধর্মঘর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার দেলোয়ার হোসেন জানান, ভারতের পশ্চিম ত্রিপুরা রাজ্যের মোহনপুর সীমান্ত দিয়ে লাশ হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশ ময়নাতদন্ত, সুরতহাল রিপোর্ট আনুসাঙ্গিক কাগজপত্র ছাড়া লাশ হস্তান্তর করতে চায়। এতে বাংলাদেশের বিজিবি-পুলিশের প্রতিনিধিরা অস্বীকৃতি জানায়। তাই লাশ গ্রহণ করা হয়নি।

তবে আজ (২৮ মে) বিকেলে আবারো লাশ গ্রহণের প্রক্রিয়া করা হয়েছে। নিময়তান্ত্রিকভাবে হস্তান্তর হলে লাশ গ্রহণ করা হবে।

এর আগে বুধবার (২৭মে) বিকালে ১৯৯৪ /৪ এস পিলারের কাছে বাংলাদেশের মোহনপুরে বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠক হয়। এতে ভারতের পক্ষে বিএসএফের ১২০ ব্যাটালিয়নের মোহনপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার ইন্সপেক্টর শশি কান্ত ও বাংলাদেশের পক্ষে ৫৫ বিজিবির ধর্মঘর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার দেলোয়ার হোসেন নেত্বত্ব দেন।

মাধবপুর থানার কাসিমনগর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোরশেদ আলম এবং এসআই কামরুল হাসান জানান, বাংলাদেশি নাগরিক লোকমান হোসেনকে সিধাই থানার গোপাল নগর গ্রামে আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাকে আগরতলা জিবি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ভারতীয় নাগরিকদের হাতে গরুচোর সন্দেহে লোকমান হোসেনকে রোববার (২৪ মে) নির্মমভাবে সে দেশে পিটিয়ে হত্যা করে।

নিহত লোকমান হোসেন হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ধর্মঘর ইউনিয়নের মালঞ্চপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হাসিমের ছেলে।

 

মামুন/বুলাকী

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়