‘বাও মোক এনা কেউ চাউল দিলো না বা’
অরিন্দম মাহমুদ, ধামইরহাট (নওগাঁ) || রাইজিংবিডি.কম
করোনাভাইরাসে মৃত্যুর ভয়েও আটকে রাখতে পারেনি বৃদ্ধা সখিনা বেওয়াকে। বয়স তার ৬৫ বছর। তার এক চিলতে জমিও নেই। বৃদ্ধার শরীরে তাকালেই বোঝা যায়, তিনি কতটা অসহায়। কপালের চামড়ায় পড়েছে ভাঁজ, কুঁচকে গেছে শরীরের চামড়া। ইদানিং চোখে কম দেখায় কোন কাজ করতে পারেন না। দুটো টাকা পাবার আশায় মানুষের বাড়ি বাড়ি নিরন্তর ছুটে চলেন দীর্ঘপথ ।
কিন্তু বৃদ্ধা সখিনা বেওয়া এমন ছিলেন না। একসময় তিনি দাপিয়ে কাজ করে সংসারের হাল ধরেছিলেন। মেয়ে দশ বছর আগে অসুখে মারা যায়। একমাত্র আদরের ছেলে বউ নিয়ে হয়েছে ঘড় জামাই। অসহায় বৃদ্ধা জীবিকা নির্বাহের প্রয়োজনে মাঝেমধ্যে পরিচিত অপরিচিত মানুষের কাছ থেকে দু’এক টাকা অথবা চাল চেয়ে নিতে দেখা যায়। নিজের ভিটেমাটি নেই, ঘরবাড়ি না থাকায় রাত কাটে খোলা আকাশের নিচে আবার কখনো বা কখনো এর ওর বাড়িতে তিনি রাত কাটান।
নওগাঁর ধামইরহাট পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের টিএনটি পাড়ার বাসিন্দা বৃদ্ধা সখিনা বেওয়ার সঙ্গে দেখা হলে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে বলেন, ‘বাও মোক এনা কেউ চাউল দিলনা বা, কত মানুষক দেছে, মোক এনা চাল নিয়ে দি বা।’
চোখের জল মুছতে মুছতে সখিনা বিবি বললেন, ‘মোর বড়োই দুঃসময় যাছে বা। বয়সটাও কাড়ে নিছে শরীরে শক্তি, কাম করা আর পারোনা। চাল, ডাল না পালে না খেয়ে মরবা হবে। মেলা মানুষের নামের তালিকা হলেও মোর নাম খাতায় লেখা পরেনা। বয়স বেশি হলে মানুষ এভাবেই বুঝি আস্তাকুড়ে পড়ে থাকে। হায় কপাল, এই বৃদ্ধার দিকে কেউ চায়েও তাকায়না।’
এ বিষয়ে পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার ইব্রাহীম হোসেনের মুঠোফোনের সুইচ অফ থাকায় কয়েকবার চেষ্ঠা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
অরিন্দম মাহমুদ/ধামইরহাট (নওগাঁ)/সাজেদ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন