কোরবানি: লোকসানের আশঙ্কা খামারিদের
লালমনিরহাট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
লালমনিরহাটে গবাদিপশুর খামার একটি সম্ভাবনাময় খাত। চাহিদা থাকায় বিগত কয়েক বছরে জেলায় গড়ে উঠেছে ছোট-বড় অসংখ্য খামার।
কোরবানিকে কেন্দ্র করে বড় খামারের পাশাপাশি অনেকেই বাড়িতে দুয়েকটি করে গরু পালেন। কোরবানির সময় এসব গরু বিক্রি করে লাভের আশা করেন তারা। তবে করোনার এবার কারণে লোকসানের আশঙ্কা করছেন খামারিরা।
একদিকে করোনার প্রকোপ অন্যদিকে গরুর লাম্পি স্কিন রোগের কারণে এবার চরম বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। লাম্পি স্কিন ডিজিজের কারণে গরুর শরীরে দাগ দেখা দেয়। ফলে কোরবানির জন্য ক্রেতারা এসব গরু পছন্দের বাইরে রাখবেন। হয়তো বিক্রিই হবে না। এই আশঙ্কা চেপে বসেছে খামারিদের মনে।
অন্যান্য বছর কোরবানি ঈদের একমাস আগে থেকেই ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাপারিরা গরু কিনতে আসেন। এবার এখন পর্যন্ত কোনো ব্যাপারির দেখো মেলেনি লালমনিরহাটে।
খুদ্র খামারি দুলাল হোসেন জানান, এবার তিনি মাত্র একটি গরু বিক্রির জন্য তৈরি করেছেন। কয়েক বছর ধরে গরুটি পালছেন তিনি। গত বছর গরুটির দাম উঠেছিলো ৭০ হাজার টাকা। এবার ইতোমধ্যে গরুটির দাম এক লাখ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠেছে। গরুটির দাম এক লাখ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে বলে আশা করছেন তিনি।
খামারি আব্দুল আহাদ বলেন, ‘এবার গরুতে লাভ করা কঠিন হবে। গরুর খাবারের মূল্য অনেক বেশি। লাম্পি স্কিনের একটি প্রভাবতো আছেই। খুব কষ্ট করে হয়তো আসল টাকা উঠবে।’
প্রাণি সম্পদ দপ্তর সূত্র বলছে, দেশে চাহিদা অনুয়ায়ী পর্যাপ্ত দেশীয় গরু রয়েছে। গত বছর ঢাকার বাজারে ১০ লক্ষ গরু অবিক্রিত থেকে গেছে। এবার সারাদেশে এক কোটি ১৯ লাখ গরু বাজারজাতের উপযোগী আছে।
জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এ বছর জেলায় ৮৬ হাজার ৫০০ গরু কোরবানির জন্য মোটাতাজা করা হয়েছে। লালমনিরহাটে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার গরুর চাহিদা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ভারতীয় গরু প্রবেশ ঠেকাতে জেলা প্রশাসকের কাছে আমরা প্রস্তাব করেছি। তবে করোনার বিস্তার রোধ করেই খামারিদের গরু বিক্রির পরামর্শ দিচ্ছি। লাম্পি স্কিন ডিজিজ মানুষের মধ্যে কোনো প্রভাব ফেলে না। এ নিয়ে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানো দরকার।’
জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, ‘‘লালমনিরটে ৫৬ হাজার গরুর চাহিদা রয়েছে। তবে গরু তৈরি হচ্ছে প্রায় এক লাখ ১০ হাজার। চাহিদার অতিরিক্ত গরু জেলার বাইরে বিক্রির চেষ্টা করবেন খামারিরা। তবে ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে যদি ব্যাপারিরা না আসেন, সেক্ষেত্রে লোকসানের মুখে পড়তে হতে পারে খামারিদের।
‘গত বছরের মতো এবারও ভারতীয় গরু দেশের বাজারে প্রবশে করতে দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়েছে।”
লালমনিরহাট/সনি
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন