ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

দুই পাটকল শ্রমিক নেতাকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ, পুলিশের অস্বীকার

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২৯, ৬ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
দুই পাটকল শ্রমিক নেতাকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ, পুলিশের অস্বীকার

শ্রমিক নেতা অলিয়ার রহমান ও নূর ইসলাম

খুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের দুইজন শ্রমিক নেতাকে  আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার রাতে ওই দুইজনকে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়।

দুই শ্রমিক নেতা হলেন সদ্য বন্ধ ঘোষিত স্টার জুট মিলের শ্রমিক ও পাটশিল্প রক্ষা যুব জোটের আহ্বায়ক অলিয়ার রহমান এবং প্লাটিনাম জুবিলি জুটমিলের শ্রমিক ও পাটশিল্প রক্ষা যুব জোটের উপদেষ্টা নূর ইসলাম। তবে, পুলিশ বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

অলিয়ার রহমানের ছেলে নাইম শেখ বলেন, ‘রোববার রাত আড়াইটার দিকে নগরীর খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী গ্রামের বাড়িতে কয়েকজন লোক এসে প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে ঘরের দরজা খুলতে বলে। তাদের হাতে ওয়ারলেস ও রাইফেল ছিল। আমরা দরজা খুললে তারা বলে আব্বাকে নিয়ে মিলে (পাটকল) যাবে। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাবাকে নিয়ে গাড়িতে করে নিয়ে চলে যায়। আমরা থানায় গেলে ওসি (খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) বলেন, “রাতে আমাদের কোন অভিযান হয়নি। আমরা কিছুই জানি না।”

এদিকে নূর ইসলামের ছেলে মো. জুয়েল বলেন, ‘রাত সাড়ে তিনটার দিকে কিছু লোক আসে খালিশপুরের বাসায়। এ সময় তারা বলতে থাকে, “এই দরজা খুলুন আগুন লেগেছে।” তখন আমরা তাদের বলি আপনারা কারা, তারা বলে, “আমরা ফায়ার সার্ভিসের লোক।” তারপর  চোখের পলকে বাবাকে নিয়ে চলে যায়। আমরা অনেকভাবে তাদের পরিচয় জানা চেষ্টা করি কিন্তু তারা কোন পরিচয় দেয়নি।’

বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটকল সিবিএ-ননসিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মুরাদ হোসেন বলেন, আমি ফেসবুকে দেখেছি, তারা কাল (রবিবার) খালিশপুরে গোপনে মিটিং করেছে মিলের বদলি শ্রমিক ও বাম দলের নেতাদের সঙ্গে। মিল বন্ধ নিয়ে যখন সারা দেশের শ্রমিকরা শান্ত, তখন তাদের এই মিটিং করা কী দরকার? তবে কারা ধরে নিয়ে গেছে, কী কারণে ধরে নিয়ে গেছে, তা আমি জানি না।’

গণসংগতি আন্দোলন খুলনা  জেলা শাখার আহ্বায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল বলেন, সরকার পাটকল বন্ধের  যে চক্রান্ত করছে, তার বিরুদ্ধে শ্রমিকদের মধ্যে থেকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন সংগঠিত করার চেষ্টা চলছে। এই আন্দোলন যাতে সংগঠিত না হতে পারে, তার জন্য রাজনৈতিক চক্রান্তের অংশ হিসাবে প্রশাসন দিয়ে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারা কোথায় আছে, কেমন আছে, তা আমারা এখনও জানতে পারিনি। অবিলম্বের তাদের মুক্তির দাবি করছি।’

এ ব্যাপারে খালিশপুরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাব্বিরুল আলম বলেন, ‘আমরা কোনো শ্রমিক নেতাকে আটক করিনি। আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনো তথ‌্য নেই। আমরা এ বিষয়ে কিছু জানি না। এখন দেখছি খোঁজ নিয়ে।’

খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), মো. শফিকুল ইসলামও একই সুরে বলেন, ‘আমরা কোনো শ্রমিক নেতাকে আটক করিনি।’


মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/সাজেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়