ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

কোরবানির পশু নিয়ে কুষ্টিয়ার খামারিরা দুশ্চিন্তায়

কুষ্টিয়া সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৭ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
কোরবানির পশু নিয়ে কুষ্টিয়ার খামারিরা দুশ্চিন্তায়

করোনা পরিস্থিতির কারণে কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কুষ্টিয়ার খামারিরা। প্রতিবছর এই ঈদকে সামনে রেখে ঢাকাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ হাট থাকে তাদের টার্গেটে।এবার সে অবস্থাটি নেই।

কুষ্টিয়ার খামারিদের সারা বছরের আশা-ভরসা ম্লান করে দিয়েছে মহামারি করোনা। ঈদ এসে গেছে প্রায়। যে সময়টিতে বেচাকেনা জমজমাট থাকার কথা, সে সময়টিতেও ভাবছেন তারা কোরবানির পশু বাজারে নিতে পারবেন কিনা। বাজারে নিলেও ক্রেতা মিলবে কিনা। ক্রেতা মিললেও দাম পাওয়া যাবে কিনা। এসব নানাবিধ ভাবনায় শঙ্কায় রয়েছেন খামারিরা।

খামারিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কোরবানির পশু বাজারে তোলার সময় ঘনিয়ে আসলেও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এখনো দুশ্চিন্তায় ভুগছেন তারা।

প্রকৃতপক্ষে এই ঈদকে সামনে রেখেই খামারিরা সারাবছর কোরবানির পশু হিসেবে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া লালন পালনে বড় অংকের টাকা বিনিয়োগ করেন। তাই ঈদে পশু বিক্রি করতে না পারলে বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে তাদের।

জেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, কুষ্টিয়ার ৬টি উপজেলায় ৩৮ হাজার গরু-ছাগলের খামার রয়েছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে এবছর এসব খামারে ১ লাখ ৫ হাজার গরু, ৭০ হাজার ছাগল এবং ২ হাজার ভেড়াসহ অন্যান্য পশু

মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে।

কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার আইলচারা গ্রামের দবির আলীর খামারে এবার ৪০টি গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এই খামারি বলেন, ‘গত বছর শতাধিক গরু ঢাকায় বিক্রি করে আমাদের বেশ ভালো লাভ হয়েছিল। তবে এবার করোনার কারণে গরু বিক্রি করতে পারবে কিনা তা নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি।'

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার সদরপুর এলাকার গো-খামারী আলম সর্দ্দার বলেন, ‘এবছর আমি ঈদ উপলক্ষে গরু মোটাতাজা করণ করেছি। আমার পারিবারিক এই খামারেই রয়েছে ৬টি গরু। যা এবার আমি বাজারে বিক্রি করবো বলে আশা করছি।'

তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তায় আছি। গরু না বিক্রি করতে পারলে তো পুরোই ক্ষতি হবে।'

আজিজুল ইসলাম নামের এক খামারি বলেন, ‘আমি বিক্রির জন্য ৫টি গরু পালন করেছি। কোন খরিদ্দারই আসছে না। এখন চিন্তা বিক্রি করতে পারবো কিনা।'

খামারি সেলিম হোসেন বলেন, ‘করোনার কারণে গরুর দাম অর্ধেকও বলছে না। যে গরু ৭ মাস আগেই ৬০ হাজার টাকায় কিনেছি, সেটা এখনো ৬০-৬৫ হাজার টাকা দাম বলছে ব্যপারীরা।'

কুষ্টিয়া জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, এ জেলায় মোট ১৫টি পশুর হাট রয়েছে। এসব হাট ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থানে এই পশু বিক্রি করা হবে। অনলাইনেও চলবে এই পশু বিক্রির কার্যক্রম। গেল বছরে জেলার খামারিরা কোরবানির পশু বিক্রি করে বেশি লাভ করেছিল। তাই এবার আরও বেশি পরিমাণ গরু পালন করা হয়েছে।

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন জানান, কোরবানিকে টার্গেট করে কুষ্টিয়াতে ব্যাপক গবাদিপশু লালনপালন করা হয়ে থাকে। এই করোনার সময়ে হাটে না গিয়ে ঘরে বসে গরু কিনতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনলাইনে

কোরবানির পশুর হাট নামে একটি পেজ খোলা হয়েছে। এর মাধ্যমেও কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় করা হবে।

 

কাঞ্চন কুমার/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়