ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

কবুতর দিয়ে হাতেখড়ি, এখন মোটরসাইকেল চোর

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৮, ১৩ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
কবুতর দিয়ে হাতেখড়ি, এখন মোটরসাইকেল চোর

১৪ বছর বয়সে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে কবুতর দিয়ে হাতেখড়ি। এরপর বাসা-বাড়ি, গরু-মুরগির খামার থেকে বৈদ্যুতিক বাল্ব চুরি। একসময় আপন মামার সিএনজি চালিত অটোরিকশা চুরি করে বিক্রি করেও দিয়েছে।

বর্তমানে ভয়ঙ্কর মোটরসাইকেল চোরে পরিণত হয়েছে সে। যেকোনো জায়গায় চোখের নিমেষেই হাওয়া করে দিতে পারে মোটরসাইকেল। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে তার বিশাল মোটরসাইকেল চোরের নেটওয়ার্ক।

মোটরসাইকেল চুরিতে পারদর্শী এই তরুণের নাম রনি হোসেন (২৫)। পাবনার চাটমোহর পৌর সদরের দোলং মহল্লার বাসিন্দা রনি দীর্ঘদিন পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এই অপকর্ম করে আসছিল।

অবশেষে ধরা খেতে হলো রনিকে। তাকে ধরার পর একে একে উদ্ধার করা হয়েছে চুরি যাওয়া পাঁচটি মোটরসাইকেল।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) রাতে পুলিশের একটি দল রনিকে গাজীপুরের টঙ্গি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে ঈশ্বরদীর রূপপুর এলাকা থেকে সহযোগী শাহীন এবং রুবেল নামে কুখ্যাত দুই চোরকেও আটক করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, ১৪ বছর বয়স থেকে চুরি জীবন শুরুর পর প্রথমেই একই এলাকার দোলং মহল্লার আকাশ হোসেনের সঙ্গে অন্তরঙ্গ হয় রনির। সিঁধেল চুরি থেকে শুরু করে সবকিছুই করতো তারা দুজনে মিলে।

এরপর মোটরসাইকেল চুরি করা তাদের নেশায় পরিণত হয়। বাদ দেয়নি পুলিশ কর্মকর্তার মোটরসাইকেলও। শুধু চাটমোহর থেকেই প্রায় শতাধিক মোটরসাইকেল চুরি করেছে তারা।

দিনে আত্মগোপনে থাকলেও রাতে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতো তারা। বাসা-বাড়ির তালা ভেঙে মোটরসাইকেল চুরি তাদের কাছে যেন বাঁ হাতের খেল। সময়ের ব্যবধানে ধীরে ধীরে পাবনা সদর, ঈশ্বরদী, কুষ্টিয়া, বরিশাল, ঢাকা, টঙ্গিসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে রনি।

সহযোগীকে আকাশকে চুরির পারিশ্রমিক হিসেবে রনি মাত্র ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা দিতো। প্রতিটি মোটরসাইকেল বিক্রি করতো ৫০ হাজার থেকে শুরু করে লাখ টাকায়।

এখানেই শেষ নয়, টঙ্গিতে দুই স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা আলাদা বাসায় ভাড়া থাকত রনি। তার চলাফেরা ছিল কোটিপতিদের মতো। বেনসন সিগারেট, দামি মোবাইল ফোন ছাড়া চলতই না। দামি মোটরসাইকেল (চুরি করা) নিয়ে চলাফেরা করতো।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, রনি মোটরসাইকেল চোর চক্রের মূল হোতা। তার বিরুদ্ধে থানায় বেশ কয়েকটি চুরির মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্যে মতে পাঁচটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। রনিকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। রিমান্ড পেলে আরও বেশকিছু মোটরসাইকেল উদ্ধার করা যাবে বলে জানান ওসি।


শাহীন রহমান/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়