ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

দেড় হাজারেরও বেশি নারী পাচার করেছে আজম খান

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:১১, ১৫ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
দেড় হাজারেরও বেশি নারী পাচার করেছে আজম খান

মাত্র ৮ বছর সময়ের মধ্যেই তিনি শত শত কোটি টাকার মালিক। মধ্যপ্রাচ্যে ৪টি বিলাসবহুল হোটেলের মালিকানা। শ্রমিক থেকে বনে গেছেন নারী পাচারকারী মাফিয়া ডন।
তিনি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার আজম খান। ঢাকায় সিআইডি’র হাতে গ্রেপ্তারের পর একের পর এক বেরিয়ে আসছে আজম খানের নানা অপকর্ম।

গত ৮ বছরে আজম খান বাংলাদেশ থেকে কমপক্ষে দেড় হাজারেরও বেশি নারীকে মধ্যপ্রাচ্যে পাচার করেছেন। এদের সবাইকে নিয়োজিত করা হয়েছে ডান্সবার এবং পতিতাবৃত্তিতে। ঢাকায় গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রামেও তার ব্যাপারে তদন্ত অনুসন্ধান পরিচালনা করছে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ।

ঢাকার সিআইডি সূত্র জানায়, ৮ বছর আগে একজন ব্যবসায়ীর দেওয়া ব্যক্তিগত কর্মতার পদবীর ভিসা নিয়ে দুবাই গিয়েছিলেন আজম খান। এরপর জড়িয়ে পরেন নারী পাচারে। গত ৮ বছরে এই ব্যক্তি চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দেড় হাজারের বেশি নারীকে মধ্যপ্রাচ্যে পাচার করেছেন। ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা বেতনের চাকরির অফার দিয়ে দালালের মাধ্যমে এসব নারীদের সংগ্রহ করা হতো। তারপর মধ্যপ্রাচ্যে নিয়ে গিয়ে নারীদের পাসপোর্ট জব্দ করে তাদের ডান্সবার এবং পতিতাবৃত্তিতে নিয়োগ করা হতো। এভাবেই আজম খান শত শত কোটি টাকা আয় করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের ৪টি বিলাসবহুল হোটেলের মালিকানা রয়েছে তার। এছাড়া, দেশে বিদেশে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।

স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি পৌর সদরের বাসিন্দা আজম খান বিদেশ যাওয়ার আগে ছিলেন সম্পূর্ণ বেকার তরুণ। বিদেশ যাওয়ার পর নারী পাচারের সিন্ডিকেট গঠন করে ফটিকছড়ি উপজেলার তার বাড়ির পাশের ছোট বেলার বন্ধু সেলিম নামের একজনকে দালাল হিসেবে নিয়োগ করেন। ফটিকছড়িতে আজম খানের অপকর্ম তদারকি করতেন এই সেলিম। আজম খান গ্রেপ্তারের পর গা’ ঢাকা দিয়েছে তার সহযোগী সেলিম।

চট্টগ্রামের হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুম এই বিষয়গুলো জানিয়েছেন।

তিনি রাইজিংবিডিকে জানান, ঢাকায় গ্রেপ্তার আজম খানের ব্যাপারে আমরা চট্টগ্রামেও তদন্ত শুরু করেছি। এই অঞ্চলেও তিনি কোনো ধরনের অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন কি-না সেসব সার্বিক বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চুড়ান্তভাবে এখনো কোন মন্তব্য করা যাবে না।

ঢাকা সিআইডি’র ডিআইজি ইমতিয়াজ আহাম্মেদ জানান, গত ৮ বছরে আজম খানের নারী পাচারকারী সিন্ডিকেট দেড় হাজারেরও বেশি নারীকে পাচার করেছে মধ্যপ্রাচ্যে। এদের সবাইকে ডান্সবার এবং দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়েছিলো। এ ব্যাপারে অধিকতর তদন্ত চলছে।

উল্লেখ‌্য, দুবাইতে আজম খানের নারী পাচারের ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর আজম খান ঢাকায় এসে পালিয়ে যান। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা সিআইডি’র আভিযানিক দল গত রোববার তাকে গ্রেপ্তার করে। একই সময় তার নারী পাচারের সহযোগী ডায়মন্ড নামেও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ডায়মন্ড ইতোমধ্যে আজম খানের নারী পাচারের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে।

 

চট্টগ্রাম/রেজাউল/বুলাকী

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়