ঢাকা     শুক্রবার   ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১২ ১৪৩১

রাজশাহীতে বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৯, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪  
রাজশাহীতে বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

রাজশাহীতে জমি দখলের জন্য বাড়ি ও দোকানপাটে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মো. আওয়াল (৫২) নামে এক ব্যক্তি। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

আওয়ালের বাড়ি নগরের লক্ষ্মীপুর টিবি রোড এলাকায়। পেশায় তিনি মুদি দোকানদার। গত ১৩ সেপ্টেম্বর এলাকার কিছু ব্যক্তি আওয়ালের বাড়িতে হামলা চালান। বাড়ির সঙ্গে থাকা তার মুদি দোকান, ছেলে লিমনের ফলের দোকান এবং ভাই বুলবুলের চায়ের দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। 

সংবাদ সম্মেলনে আওয়াল অভিযোগ করেন, বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ফিরোজ (৩০), আলামিন (৩৫), লিটনসহ (৪৫) ১০-১২ জন হামলা চালান। বদিউজ্জামান বদি নামের এক ব্যক্তি জমি দখল করতে এসব করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন এই ব্যক্তি। 

আরো পড়ুন:

আওয়াল জানান, ‌বদি পর পর তিনবার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে ভোট করেন। প্রতিবারই তিনি পরাজিত হন। ভোটের সময় বদির পক্ষে কাজ না করার কারণে এখন তাদের ওপর এই নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এখন ভাঙা বাড়িতে কোনো রকমে তারা আছেন। ছাদ ভেঙে দেওয়ায় বৃষ্টি হলেই ঘরে পানি ঢুকছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আওয়ালের দাদা আমির শেখ এলাকায় ছয় কাঠা জমি কিনেছিলেন। এরমধ্যে ৩ কাঠা জমিতে ১৯৫৯ সাল থেকে তারা বসবাস করছেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর তাদের বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট হয়। এর পরদিন আবারও হামলা চালিয়ে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। দোকান গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ড্রেজার দিয়ে। এ নিয়ে আওয়াল নগরের রাজপাড়া থানায় মামলা করতে যান। তবে, পুলিশ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। পরে তিনি আদালতে মামলা করেন।

আওয়াল বলেন, ‘মামলা করার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে আসামিরা ১৫ সেপ্টেম্বর আবারও হামলা চালায়। সেদিন কাজল (৪৮), মলি (৩৫), বদি (৫১), টুটুল (৩৬), বাঁধন (২৮), রিংকু (৩৫), ফিরোজ (৩০), মিম (২৮), আলামিন (৩৫) ও আনন্দসহ (২০) ২৫-৩০ জন হামলা চালান। ছোট ভাই বুলবুলের বাড়ির সঙ্গে থাকা চায়ের দোকান ভাঙচুর করা হয়। বাড়িতে লুটপাট চালানো হয়েছে। একপর্যায়ে ঘরে ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয় অভিযুক্তরা।’

আওয়াল আরও বলেন, ‘এগুলো করেই সন্ত্রাসীরা ক্ষান্ত হয়নি। তারা পরবর্তীতে আমরা তিন ভাইসহ আমাদের পরিবারের প্রায় সব সদস্যের বিরুদ্ধে রাজপাড়া থানায় একটি মিথ্যা মামলা করেছেন। বর্তমানে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আসামিরা আমাদের বাড়ির আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং আমাদের নানারকম হুমকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় আমি আমার বৃদ্ধ মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছি।’

আওয়াল তার বিরুদ্ধে করা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন। পাশাপাশি যারা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছেন তাদের শাস্তির দাবি জানান। এছাড়া নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তাও দাবি করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ালের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বদিউজ্জামান বদি বলেন, ‘ওরা সরকারি জায়গা দখল করে আছে। স্থানীয়রা বলেছে, দোকানগুলো ভেঙে নিয়ে তারা যেন রাস্তাটা ক্লিয়ার করে রাখে। এতদূর জানি। কেউ হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট করেছে বলে শুনিনি। এগুলোর সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তারা কেন আমার নাম জড়িয়েছে সেটাই এখন বুঝতে পারছি না।’

নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি থানায় যোগ দিয়েছি ১৮ সেপ্টেম্বর। এর আগের ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছু বলতে পারব না। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে। কেউ ভুক্তভোগী হলে তাকে অবশ্যই আইনগত সহায়তা দেওয়া হবে।’

কেয়া/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়