খুলনাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী
ইরফান শুক্কুরের ফিফটির পর আন্দ্রে রাসেল ও মোহাম্মদ নওয়াজের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে রাজশাহী রয়্যালস পেয়েছিল লড়াকু পুঁজি। রাসেল পরে জ্বলে উঠলেন বল হাতেও। দারুণ বোলিং করলেন মোহাম্মদ ইরফান আর কামরুল ইসলাম রাব্বীও। তাতে খুলনা টাইগার্সকে ২১ রানে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের শিরোপা জিতল রাজশাহী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রাজশাহী: ২০ ওভারে ১৭০/৪ (লিটন ২৫, আফিফ ১০, শুক্কুর ৫২, মালিক ৯, রাসেল ২৭*, নওয়াজ ৪১*; আমির ২/৩৫, ফ্রাইলিঙ্ক ১/৩৩, শহিদুল ১/২৩)।
খুলনা: ২০ ওভারে ১৪৯/৮ (শান্ত ০, মিরাজ ২, শামসুর ৫২, রুশো ৩৭, মুশফিক ২১, নজিবুল্লাহ ৪, ফ্রাইলিঙ্ক ১২, শহিদুল ০, শহিফুল ৭*, আমির ১*; ইরফান ২/১৮, রাসেল ২/৩২, নওয়াজ ১/২৯, রাব্বী ২/২৯)।
ফিরলেন মুশফিকও
খুলনার আশা হয়ে টিকে ছিলেন তিনি। কিন্তু মুশফিকুর রহিমের বিদায়ে সেই আশা অনেকটাই নিভে গেল। আন্দ্রে রাসেলের ইয়র্কারের জবাব খুঁজে পাননি খুলনার অধিনায়ক, হয়েছেন বোল্ড (১৫ বলে ২১)। তখন খুলনার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৩৪।
রাব্বীর জোড়া আঘাত
একই ওভারে দুই উইকেট নিয়ে খুলনাকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছেন কামরুল ইসলাম রাব্বী। ১৪তম ওভারের প্রথম বলেই তিনি ফিরিয়ে দেন ফিফটি করা শামসুর রহমানকে। ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ দেন শামসুর (৫২)। রিভিউ নিয়ে বাঁচার পরের বলে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নজিবুল্লাহ জাদরান (৪)। তখন খুলনার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১০৫।
শামসুরের দারুণ ফিফটি
দারুণ ব্যাটিংয়ে ফিফটি করেছেন শামসুর রহমান। ৩৮ বলে ফিফটি করতে ৪টি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা হাঁকান ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
জুটি ভাঙলেন নওয়াজ
রাইলি রুশোকে ফিরিয়ে ৭৪ রানের জুটি ভেঙেছেন মোহাম্মদ নওয়াজ। বাঁহাতি স্পিনারকে ছক্কায় উড়াতে গিয়ে লং অনে রাসেলের হাত ক্যাচ দেন রুশো (২৬ বলে ৩৭)। তখন খুলনার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৮৫।
টিকলেন না মিরাজও
নাজমুল হোসেন শান্তর পর টিকলেন না আরেক ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজও। দ্বিতীয় ওভারে আবু জায়েদ রাহীর বলে কাভারে সহজ ক্যাচ দেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান (২)। খুলনার সংগ্রহ তখন ২ উইকেটে ১১।
লিটনের দুর্দান্ত ক্যাচে আউট শান্ত
আগের দুই ম্যাচে দারুণ দুটি ইনিংস খেলা নাজমুল হোসেন শান্ত ফাইনালে জ্বলে উঠতে পারলেন না। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই তাকে ফিরিয়ে রাজশাহীকে ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন মোহাম্মদ ইরফান। পাকিস্তানি পেসারকে কাট করেছিলেন শান্ত। পয়েন্টে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন লিটন দাস।
রাসেল-নওয়াজের ঝড়ে রাজশাহীর ১৭০
ইরফান শুক্কুরের ফিফটির পর আন্দ্রে রাসেল ও মোহাম্মদ নওয়াজের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ভালো পুঁজি পেয়েছে রাজশাহী। পঞ্চম উইকেটে মাত্র ৩৪ বলে অবিচ্ছিন্ন ৭১ রানের জুটি গড়েন দুজন। একবার জীবন পাওয়া রাসেল ১৬ বলে ৩ ছক্কায় ২৭ ও নওয়াজ ২০ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৪১ রানে অপরাজিত ছিলেন। শুক্কুরের ব্যাট থেকে আসে ৫২ রান। চ্যাম্পিয়ন হতে খুলনার দরকার ১৭১ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: রাজশাহী ২০ ওভারে ১৭০/৪ (লিটন ২৫, আফিফ ১০, শুক্কুর ৫২, মালিক ৯, রাসেল ২৭*, নওয়াজ ৪১*; আমির ২/৩৫, ফ্রাইলিঙ্ক ১/৩৩, শহিদুল ১/২৩)।
বিপিএলের সবচেয়ে বড় ছক্কা রাসেলের
মোহাম্মদ আমিরের বলটা স্লোটে পেয়েছিলেন। আন্দ্রে রাসেল ডিপ মিডউইকেটের ওপর দিয়ে বল আছড়ে ফেললেন একদম গ্যালারিতে। বল গিয়ে পড়ল ইলেট্রিক স্কোরবোর্ডের সামনে গিয়ে। ১১৫ মিটার ছক্কা! এবারের বিপিএলের সবচেয়ে বড় ছক্কা এটিই। এর আগে ১১৩ মিটার ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ।
জীবন পেলেন রাসেল
ব্যক্তিগত ৭ রানেই ফিরে যেতে পারতেন আন্দ্রে রাসেল। তবে তাকে জীবন দিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। শহিদুল ইসলামকে উড়াতে গিয়ে ডিপ এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ তুলেছিলেন রাসেল। বলের নিচে গিয়ে হাতে নিলেও ধরে রাখতে পারেননি শান্ত।
ফিফটির পর টিকলেন না শুক্কুর
৩০ বলে দারুণ এক ফিফটি করেছিলেন। তবে ফিফটির পর আর টিকলেন না ইরফান শুক্কুর। মোহাম্মদ আমিরকে ফ্লিক করে সরাসরি ফাইন লেগে ক্যাচ দেন তিনি। ৩৫ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় তিনি করেন ৫২ রান। তখন রাজশাহীর সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৯৯।
শোয়েব মালিককে ফিরিয়ে স্বস্তি
ফ্রাইলিঙ্কের হাফ ভলি বল কভার ড্রাইভ করেছিলেন শোয়েব মালিক। ব্যাট-বলে টাইমিংও হয়েছিল ঠিকঠাক। কিন্তু গ্যাপ বের করতে পারেননি। বল যায় সোজা শান্তর হাতে। বড় ম্যাচে জ্বলে উঠার আগেই নিভে গেল মালিকের ব্যাট। ১৩ বলে ৯ রানে ফিরেছেন মালিক। তার আউটের সময় রাজশাীর রান ৩ উইকেটে ৯৪।
লিটনকে ফেরালেন শহিদুল
উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারলেন না লিটন দাস। তাকে ফিরিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটি ভেঙেছেন শহিদুল ইসলাম। ডানহাতি পেসারের শর্ট বল পুল করে উড়াতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন লিটন (২৮ বলে ২৫)। তখন ৯ ওভার ১ বলে রাজশাহীর সংগ্রহ ২ উইকেটে ৬৩।
মিরাজের দুর্দান্ত ক্যাচে আউট আফিফ
ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি আফিফ হোসেন। মোহাম্মদ আমিরের শর্ট বল পুল করতে গিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফেরেন তিনি (৮ বলে ১০)। তখন ২ ওভার ৩ বলে রাজশাহীর সংগ্রহ ১ উইকেটে ১৪। লিটন দাসের সঙ্গী হয়েছেন ইরফান শুক্কুর।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ শুরু হয়েছে সন্ধ্যা ৭টায়।
আগের ম্যাচ থেকে একটি পরিবর্তন এনেছে খুলনা। লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের জায়গায় এসেছেন বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম। রাজশাহী আগের ম্যাচের একাদশ নিয়েই খেলছে।
এবার পুরো বিপিএলই দর্শক-খরায় ভুগেছে। তবে ফাইনালে পাল্টে গেছে সেই চিত্র। একে ফাইনাল ম্যাচ, আবার ছুটির দিন। ম্যাচ শুরুর অনেক আগেই প্রায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে গ্যালারি।
প্রাথমিক পর্বে দুইবারের দেখায় দুই দলই জিতেছিল একবার করে। পয়েন্ট টেবিলের সেরা দুইয়ে থাকায় দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল প্রথম কোয়ালিফায়ারেও। সেখানে রাজশাহীকে হারিয়ে সরাসরি ফাইনালে ওঠে খুলনা। আর রাজশাহী দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে।
রাজশাহী একাদশ: আন্দ্রে রাসেল (অধিনায়ক), লিটন দাস, আফিফ হোসেন, অলক কাপালি, ফরহাদ রেজা, কামরুল ইসলাম রাব্বী, আবু জায়েদ রাহী, ইরফান শুক্কুর, শোয়েব মালিক, মোহাম্মদ নওয়াজ, মোহাম্মদ ইরফান।
খুলনা একাদশ: মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), রাইলি রুশো, রবি ফ্রাইলিঙ্ক, নাজমুল হোসেন শান্ত, শামসুর রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, নজিবুল্লাহ জাদরান, শফিউল ইসলাম, মোহাম্মদ আমির, শহিদুল ইসলাম, তানভীর ইসলাম।
ঢাকা/পরাগ/আমিনুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন