ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

অতিথি পাখি ডাকছে

সাঈদ ইবরাহীম রিফাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১৭, ৫ জানুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অতিথি পাখি ডাকছে

মানুষ প্রয়োজনে যেমন দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়ান, তেমনি পাখিরাও ঘুরে বেড়ান আপন মনে। কখনো খাদ্যের খোঁজে, কখনো বাস্তুসংস্থানের জন্য আবার কখনো টিকে থাকার লড়াইয়ে।

শীতের প্রকোপ সইতে না পেরে প্রতিবছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে সাইবেরিয়া, চীন, মঙ্গোলিয়া ও নেপাল থেকে   অসংখ্য পরিযায়ী পাখি আসে বাংলাদেশে।

কারণ, প্রাকৃতিকভাবে নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর দেশ বাংলাদেশ। এ জন্য পাখিদের পছন্দের তালিকায় এদেশ শীর্ষে।

আর বাংলাদেশে শীতকালীন অতিথি পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে জন্মলগ্ন থেকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সুপ্রসিদ্ধি। এখানে ১০ থেকে ১২টি লেক থাকলেও জাবির ৪টি লেকে মূলত অতিথি পাখির বিচরণ সবচেয়ে বেশি। শীত চলে গেলে ফেব্রুয়ারি-মার্চের দিকে পুনরায় তারা ফিরে যায় নিজেদের আবাসস্থলে।

সরালি, ফেচার, কম্বার্ট, গার্গনি, ছোট গেরিয়া, মুর্গ্যধি, কাম্বালি, ডাহুক, বক, মানিকজোড়, কলাই, ফুলপিপি প্রভৃতি নানান প্রজাতির পাখির দেখা মেলে এখানে। জলময়ুর, খোঁপা ডুবুরি, ডুবুরি পানকৌড়ির প্রভৃতি বিলুপ্তপ্রায় পাখিও দেখা যায় এ সময়ে।

এখানে সব মিলিয়ে ২০-২৫ প্রজাতির অতিথি পাখির দেখা মেলে। এর মধ্যে ৩-৪ প্রকার পাখি হাঁস প্রজাতির।

শহরের ব্যস্ততা থেকে রেহাই পেতে শীতকালে এই অতিথি পাখিদের দেখতে ঢাকা থেকে ছুটে আসেন অসংখ্য দর্শনার্থী। এক ঢিবি থেকে আরেক ঢিবিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সরালি, ডুব ময়ূর পরম আতিশয্যে কিছুক্ষণ পর পর মাথা ডুবিয়ে নিজেকে আড়াল করছে, আবার কিছুক্ষণ পর লেকের দূরে কোথাও থেকে মাথাচাড়া দিচ্ছে, কেউ সাঁতার কাটছে, আর কেউ কেউ নিমগ্ন আপন অবগাহনের তালে।

এসকল অপরূপ দৃশ্যই আপনি জাহাঙ্গীরনগরে দেখতে পাবেন ঠিক এমন সময়ে এলে। গত বছরের তুলনায় এ বছর অনেক বেশি অতিথি পাখি এসেছে।

অতিথি পাখিদের আতিথেয়তারও কমতি নেই যেন। লেকের চারপাশে দেয়া হয়েছে কাঁটাতারের বেড়া। লেকগুলোর আশেপাশে দিয়ে হাঁটলে ঢিল ছুড়বেন না, হর্ন বাজানো নিষেধ, দূরত্ব বজিয়ে রেখে দেখুন ইত্যাদি সাইনবোর্ড চোখে পড়বে সহজেই।

পাশাপাশি জাবি প্রশাসন পাখিদের এ আগমনকে আরেকটু উপভোগ্য করার জন্য প্রতিবছর আয়োজন করে পাখি মেলার। সাধারণত জানুয়ারি মাসের প্রথম কিংবা দ্বিতীয় সপ্তাহে আয়োজন হয় পাখি মেলার। এ মেলা আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য থাকে জনসাধারণের মাঝে পাখি পরিচিতি এবং পাখি সংরক্ষণে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

লেখক: শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।


জবি/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়