ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ক্যাম্পাসে সেই আড্ডা নেই

আহমেদ ফাহিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৬, ১৮ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ক্যাম্পাসে সেই আড্ডা নেই

করোনাভাইরাস আতঙ্কে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ১৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)  বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্বব্যাপী করোনা ছড়িয়ে পড়ায় সতর্কতার অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

উপকূলীয় অক্সফোর্ড হিসেবে খ্যাত ১০১ একরের ক্যাম্পাস নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি  বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮টি বিভাগ ও ২টি ইন্সটিটিউটের অধীন প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থীর স্বপ্নভূমি এই ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত সেই একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, লাইব্রেরিতে সেই একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, লাইব্রেরি আজ শিক্ষার্থীশূন্য। ক্লাস, পরীক্ষা, প্রেজেন্টেশন, ল্যাবক্লাস, ফিল্ড ওয়ার্ক, থিসিসে ব্যস্ত শিক্ষার্থীদের আজ নেই কোনো ব্যস্ততা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বরাদ্দকৃত সাদা বাস ও  দোতলা বাসগুলোতে  শিক্ষার্থীদের সিট না পেয়ে দাঁড়িয়ে যাতায়াত করতে হতো। কিন্তু আজকের চিত্র ভিন্ন। বাসে সিট ধরার জন্য কোনো দৌড়ঝাঁপ নেই। শিক্ষার্থীশূন্য বাসগুলো আজ নিরবে দাঁড়িয়ে আছে তার চিরচেনা মুখগুলোর দিকে।

ক্লাসের ফাঁকে, অবসরে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় ব্যস্ত সেই গোলচত্বর, প্রশান্তি পার্ক, শান্তিনিকেতন, নীল দিঘি, হতাশার মোড় আজ বিরান ভূমি। নিরাপত্তাকর্মী ছাড়া কারোরই পদচারণা নেই। খেলাধুলায় পারদর্শী শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত সেই কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ আজ খেলোয়াড়শূন্য, খেলোয়াড়দের নেই কোনো ব্যস্ততা।

শিক্ষার্থীদের আড্ডা, গল্প, গানে মুখরিত সেই প্রশান্তি পার্ক ক্যান্টিন,  কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া, শান্তিনিকেতনের পাশের টং  দোকানগুলো জনশূন্য। ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপের চুমুকে গিটারের টুংটাং ধ্বনিতে মুখরিত জায়গাগুলো আজ হাহাকার করছে।

একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষামূলক কার্যাবলীর সাথে যুক্ত শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে মুখরিত সেই অডিটোরিয়াম ভবন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, গোলচত্বর আজ জনশূন্য। নেই কোনো সৃজনশীল কাজের ব্যস্ততা।

ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস  উপলক্ষে ছোট্ট পরিসরে আয়োজিত হয়েছে অনু্ষ্ঠান।

আবাসিক হলের চিত্রও একই রকম। হলগুলো ও আজ নীরব, নেই আবাসিক শিক্ষার্থীদের ব্যস্ততা। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক উকিল হল, বিবি খাদিজা হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলগুলো আজ শিক্ষার্থীশূন্য।  নিরাপত্তাকর্মী ছাড়া কারোরই পদচারণা নেই।

হলগুলো বন্ধ হওয়ায় আবাসিক শিক্ষার্থীরা ফিরে গেছেন নিজ বাড়িতে, নিজ পরিবারের কাছে। বিদায়বেলায় শিক্ষার্থীদের মনে ছিল  করোনাভাইরাসের শঙ্কা। সবাই সুস্থভাবে ফিরে আসুক ক্যাম্পাসে, আবারো মুখরিত হয়ে উঠবে ১০১ একর এমনটাই প্রত্যাশা শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সবার। সবাই সুস্থ থাকবে, ভালো থাকবে আবার দেখা হবে সবার সাথে সবার।

লেখক: শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

 

নোবিপ্রবি/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়