ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

অনুপ্রেরণার বাতিঘর বঙ্গবন্ধু

আমজাদ হোসেন হৃদয় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৩৪, ২০ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অনুপ্রেরণার বাতিঘর বঙ্গবন্ধু

মুজিববর্ষে সরকারি-বেসরকারিভাবে চলছে নানা পরিকল্পনা। এ বর্ষের প্রত্যাশা নিয়ে লিখছে অনেকেই। হাজারো প্রত্যাশা ও পরিকল্পনা পূরণ করতে যারা কাজ করবে সর্বাগ্রে, তারা হচ্ছে এ দেশের তরুণ প্রজন্ম। সেসব তরুণদের মধ্যে থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভাবনা নিয়ে আজকের আয়োজন। লিপিবদ্ধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমজাদ হোসেন হৃদয়।

বঙ্গবন্ধুর নিঃস্বার্থ ত্যাগই হোক মুজিববর্ষের শিক্ষা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু হুরায়রা আতিক বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এ বছরটিকে মুজিব শতবর্ষ রাখা হয়েছে। এটি আমাদের বাঙালি জাতির জন্য গৌরবের। এই মহান পুরুষের ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। তাঁর ত্যাগ ও কষ্টগুলো আজও স্মৃতির পাতায় অমর হয়ে রয়েছে। যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত কারাগারে ‘রোজনামচা’ ও ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বই দুটিতে। তবে, তিনি যেই স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য এদেশের মাটি ও মানুষকে মুক্ত করেছিলেন, সেই স্বপ্ন কালো হাতের থাবায় পড়ে বার বার কলঙ্কিত হয়েছে।

মুজিববর্ষের অঙ্গীকার হোক সোনার বাংলাদেশ গড়া

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সেই মানুষটি, যে কিনা সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন গণতন্ত্রের জন্য।  প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন একটি শোষণহীন সমাজ। বলেছেন সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। হাসি ফোটাতে চেয়েছেন সমাজের নিপীড়িত, শোষিত শ্রেণীর মানুষের মুখে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা অর্জনের বন্ধুর পথগুলো ধাপে ধাপে অতিক্রান্ত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই।

অনুপ্রেরণার বাতিঘর বঙ্গবন্ধু

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহবুব এ রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একটি আন্দোলনের নাম। একটি জাতির ইতিহাসের নাম। একটি দেশের মানচিত্রের নাম। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাঙালি জাতির অন্ধকার দিনের এক জ্বলন্ত শিখা। একটি দিশেহারা জাতিকে দেখিয়েছেন আশার প্রদীপ। তাঁর সারাটা জীবন ব্যয় করেছেন অন্যের উপকারে৷ অন্যায়ভাবে বারবার জেল-জুলুমের মাধ্যমেও শত্রুরা পরাভূত করতে পারেনি তাঁকে৷

মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আরো সম্প্রসারিত হোক

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোমেনা আক্তার বলেছেন,  ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত এ সময়টুকু দেশের স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী হিসেবে উদযাপিত হবে। মুজিব নামের তরীটি বিপুল বিস্তার ও ত্যাগের সমুদ্রে ভাসমান ছিল, সে তরীর মানুষ কেবল বাংলার মানুষ। সাধনায় স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং স্রোতের বিপরীতে হলেও চালিয়ে নিয়েছেন, বিনির্মাণ করেছেন স্বাধীন রাষ্ট্র। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের জীবনে কাজে লাগতে হবে।

মুজিব আদর্শে তারুণ্য হোক আরো উজ্জীবিত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আহমেদ নুসরাত বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তরুণ প্রজন্মের কাছে একটি আদর্শের নাম। তিনি যেন তরুণদের সকল প্রেরণার উৎস। এ দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার যে স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন, সে স্বপ্নের পথেই এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে লাখো মানুষের মনের মধ্যে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার বীজ বপন করে দিয়েছিলেন। ফলে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন দেশ। মুজিববর্ষের মাধ্যমে পুরো বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ একটি আলাদা পরিচয়ে প্রতিষ্ঠিত হোক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে তারুণ্য উজ্জীবিত হয়ে উঠুক এই প্রত্যাশা।

মুজিববর্ষ হোক দুর্নীতি মুক্ত দেশ গড়ার শপথ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হোসনেয়ারা খাতুন বলেন, পরাধীনতা থেকে দেশ মুক্ত হলেও অর্থনৈতিকভাবে মুক্তি না আসার  কারণ হলো দুর্নীতি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু দুর্নীতিকে প্রচণ্ড ঘৃণা করতেন। তিনি তার জীবনের সংগ্রাম অবলীলায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে উৎসর্গ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর মূল আদর্শ ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে ন্যায় নীতির সমাজ প্রতিষ্ঠা, সামাজিক-সাম্যভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন দুর্নীতিমুক্ত, ব্যক্তি, সমাজ, দেশ ব্যতীত বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন, অগ্রগতি, সমৃদ্ধি, জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন কোনো অবস্থায় সম্ভব হবে না।

মুজিববর্ষ হোক দেশ গড়ার শপথ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের তানভীর আহমেদ রাসেল বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির কাছে একটি নাম, একটি স্লোগান, একটি আবেগ, একটি ভালোবাসা, একটি অনুপ্রেরণা। বাঙালি জাতির সেই সূর্য সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী পালনে ঘোষণা করা হয়েছে মুজিববর্ষ। এদেশের মাটি ও মানুষের সাথে ছিলেন তাঁর আত্মার সম্পর্ক। বাঙালি জাতির অধিকার ও স্বার্থের সাথে তিনি ছিলেন আপসহীন চরিত্রের অন্যতম দৃষ্টান্ত।

নারীদের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ চাই

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থী আকলিমা আক্তার সোমা বলেন, ধর্ষণ নামক জঘন্য ব্যাধিটি সমাজ ও রাষ্ট্রে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে৷ ধর্ষণ যেন নিত্যদিনের ডাল-ভাত হয়ে গেছে। বাসে, ট্রামে, ট্রেনে, খোলা রাস্তায়, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্রই মহাসমারোমে চলছে ধর্ষণোৎসব। এমনকি নিরাপত্তা নেই নিজের ঘরেও। বাদ পড়ছে না অশীতিপর বৃদ্ধা কিংবা কয়েক মাসের শিশু বাচ্চাও। রক্তের দামে কেনা স্বাধীন বাংলার নারীরাও হোক স্বাধীন, এটাই মুজিববর্ষের প্রত্যাশা।

মুজিববর্ষ হোক বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের শপথ

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ.কে.এম নাজমুল হাসান বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ ২৩ বছরের পাকিস্তানি শোষণ, বঞ্চনা আর বৈষম্যের বিপরীতে এক বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও আমরা আমাদের সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারিনি। বঙ্গবন্ধু প্রায়ই বলতেন গরীব আরো গরীব হবে, ধনী আরো ধনী হবে, এটা চলবে না। বাস্তবতায় তাকালে বুঝতে বাকি থাকে না, বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন থেকে আমরা কতটা দূরে অবস্থান করছি।’

মুজিববর্ষ হোক প্রত্যাশা আর সম্ভাবনার প্রাপ্তি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদিয়া কারীমুন বলেন, যুদ্ধ করে দাম দিয়ে এ বাংলা কিনেছিলাম আমরা, আর নাম দিয়েছিলাম মুক্তিযুদ্ধ। বাংলাকে বন্ধুত্বের দায়বদ্ধতায় যিনি ভালবেসেছেন, নেতৃত্বের দৃঢ়তায় করেছেন উজ্জীবিত; সেই চেতনার জায়গা থেকেই মুজিববর্ষের অবদান হোক ক্ষতহীন বাংলাদেশ। প্রতিটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রে রয়েছে সঠিক পরিচর্যা, সুদৃষ্টি আর তদারকির অভাব। প্রযুক্তির অগ্রগতিতে জনগণের সেবা পেতে এখনো নানা টানাপোড়েন লেগে রয়েছে। ভালো মানুষেরা কথা বলতে ভয় পান, সেই মহান নেতার মতো কাউকে এখন আর আমরা পাই না।

লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।


ঢাবি/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়