ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

কর নির্ধারণে ব্যাপক সংস্কার চায় ডিসিসিআই

এম এ রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫৮, ১৭ এপ্রিল ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কর নির্ধারণে ব্যাপক সংস্কার চায় ডিসিসিআই

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের বাজেটে করের আওতা বৃদ্ধি করাসহ আয়কর খাত সংস্কার করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে ঢাকা চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই)।

 

রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রাক বাজেট আলোচনা সভায় সংগঠনটির নেতারা এ দাবি জানান।

 

এ সময় তারা কর নির্ধারণে ব্যাপক সংস্কারের লক্ষ্যে বেশকিছু নীতি, আইন ও বিধিতে পরিবর্তন আনাসহ মোট ৯২টি প্রস্তাব দেন।

 

প্রস্তাবনায় ডিসিসিআই সভাপতি হোসেন খালেদ বলেন, ‘প্রায় ৩ কোটি মানুষ করযোগ্য আয় করেন। কিন্তু মাত্র ১১ লাখের কিছু বেশি মানুষ নিয়মিত কর দেন। তাই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে যুক্তিসঙ্গতভাবে কর বৃদ্ধি করার পাশাপাশি করদাতার আওতা বৃদ্ধি করার জোরালো দাবি জানাচ্ছি।’
প্রস্তাবনায় বেশকিছু কর পুনর্নির্ধারণের দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে- বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা, নারী করদাতা ও ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সের করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা, প্রতিবন্ধী করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৭৫ টাকা টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

 

আয়কর আরোপের ক্ষেত্রে আয়ের প্রথম ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত ১০ শতাংশ, ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫ শতাংশ, ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ, ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ২৫ শতাংশ ও এর বাইরে বাকি আয়ের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব দেয় ডিসিসিআই।

 

কারণ হিসেবে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, বর্তমানে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতির ফলে মৌলিক চাহিদা মেটানোর ব্যয়সহ অন্যান্য ব্যয় বেড়েছে। এ কারণে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো প্রায়োজন।

 

অন্যদিকে পুঁজিবাজারসহ অন্যান্য করের বিষয়ে প্রস্তাবনায় বলা হয়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির লভ্যাংশ থেকে থেকে প্রাপ্ত অর্থের করমুক্ত আয় ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার টাকা করা, মার্চেন্ট ব্যাংক, তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও ব্রোকারেজ হাউজের কর হার কমানোরও দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে মার্চেন্ট ব্যাংকের করের হার সাড়ে ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ, তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর্পোরেট করের হার সাড়ে ২৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ এবং ব্রোকারেজ হাউজের কর হার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

 

নূন্যতম আয়করের ক্ষেত্রে ডিসিসিআইয়ের প্রস্তাবনায় বলা হয়- সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতাদের ন্যূনতম আয়কর ৫ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৩ হাজার টাকা, জেলা সদরের পৌরসভায় ৪ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ২ হাজার টাকা এবং অন্যান্য এলাকায় ৩ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ১ হাজার টাকা করা।

 

বাড়ি ভাড়া থেকে প্রাপ্ত আয়ের ৪০ শতাংশ মেরামত ব্যয় হিসেবে বিবেচনার প্রস্তাব দেন হোসেন খালেদ। বর্তমানে বাড়িভাড়া থেকে প্রাপ্ত আয়ের ২৫ শতাংশ মেরামত ব্যয় ধরা হয় এবং এ আয়ের ওপর কর দিতে হয় না।

 

এ ছাড়া ডিসিসিআইয়ের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের অগ্রিম আয়কর বাতিল, চেম্বার ও ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সব ধরনের আয়কে করমুক্ত ঘোষণা, ঋণ ফেরত না দেওয়া আয়ের আয়করমুক্ত সীমা ৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা, এসএমইর ফাইবার আমদানির ওপর থেকে অগ্রিম আয়কর বাতিল, পরিবহণ খাতে কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া, শিক্ষা খাতকে কর ও মূসকের আওতামুক্ত রাখা, ট্রাভেল এজেন্টদের উৎস কর কমানোর প্রস্তাব দেন। বেশকিছু নীতি, আইন ও বিধিতে পরিবর্তন আনাসহ মোট ৯২টি প্রস্তাব দেওয়া হয় ডিসিআইয়ের প্রস্তাবনায়।

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ এপ্রিল ২০১৬/এম এ রহমান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়