ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

টানটান উত্তেজনায় কেনিয়ায় সাধারণ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ

রাসেল পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:১১, ৮ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
টানটান উত্তেজনায় কেনিয়ায় সাধারণ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ

কেনিয়ার সাধারণ নির্বাচনে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী কেনিয়াত্তা ও ওডিঙ্গা (ডানে)

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : টানটান উত্তেজনার মধ্যে কেনিয়ার সাধারণ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে।

ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর সাম্প্রদায়িক সহিংসতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ইউহুরু কেনিয়াত্তা দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

ভোট গ্রহণ শুরুর আগ মুহূর্তে এক টেলিভিশন ভাষণে কেনিয়াত্তা নিবন্ধিত ১ কোটি ৯০ লাখ ভোটারকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল থেকে ভোটকেন্দ্রের সামনে ভোটারদের লম্বা লাইন দেখা গেছে।

সাধারণ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট কেনিয়াত্তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন তার দীর্ঘ সময়ের প্রতিদ্বন্দ্বী রাইলা ওডিঙ্গা। দুজনের দুই দলের মধ্যে তীব্র লড়াই হচ্ছে। তবে রাইলার অভিযোগ, নির্বাচনে কারচুপি করে আবার ক্ষমতার মসনদে বসতে চাইছেন কেনিয়াত্তা।

কেনিয়ার প্রতিষ্ঠাকালীন প্রেসিডেন্টের পুত্র কেনিয়াত্তা দ্বিতীয় ও শেষ মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য লড়ছেন। নির্বাচনী প্রচারের শেষ সপ্তাহে একজন শীর্ষ র্বাচন কর্মকর্তা নিহত হওয়ায় কেনিয়াত্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয় এবং বিরোধীরা অভিযোগ তোলে, নির্বাচনে জালিয়াতির আশ্রয় নেবে সরকার।

পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, ভোটের দিন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে উভয় দলের প্রভাবশালী প্রার্থীরা পরস্পরের বিরুদ্ধে নিন্দামূলক বক্তব্য পরিহার করে চলেছেন। এর ফলে নির্বাচনী পরিবেশ কিছুটা স্বস্তিপূর্ণ হয়েছে।

২০০৭ সালে কেনিয়ার সাধারণ নির্বাচনে সহিংসতায় ১ হাজার ১০০ মানুষ নিহত হয় এবং ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয় প্রায় ৬ লাখ মানুষ। কেনিয়ার নির্বাচনী ইতিহাসে এটিই ছিল ভয়াবহ সহিংসতম নির্বাচন। তবে এবার উভয় দলই চাইছে তেমনটি যেন আর না হয়।

সোমবার টেলিভিশন ভাষণে কেনিয়াত্তা বলেছেন, ‘ভোট দিয়ে দয়া করে সবাই বাড়ি যান। প্রতিবেশীদের কাছে ফিরে যান। সে যে-ই হোক, যে জাতের, বর্ণের বা ধর্মের তাদের কাছে যান। তাদের সঙ্গে হাত মেলান, একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেন এবং তাদের বলেন, আসুন আমরা ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করি।’

একইদিন ভোটারদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল সুপার অ্যালায়েন্সের নেতা ওডিঙ্গা। তবে তিনি ভোট কারচুপির আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন এবং দাবি করেছেন, ভোটারদের আতঙ্কে ফেলতেই দেশজুড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ১ লাখ ৫০ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে নির্বাচনী প্রচারের জন্য কেনিয়াত্তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি তাকে ‘সমৃদ্ধ প্রতিদ্বন্দ্বী’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ‘আগামী যেন শক্তিশালী প্রার্থীরই জয় হয়।’

এবারের নির্বাচনে মূল লড়াই কেনিয়াত্তা এবং ওডিঙ্গার মধ্যে হলেও আরো ছয়জন প্রার্থী রয়েছেন। যাদের অধিকাংশই কেনিয়াত্তার বিরোধিতায় মশগুল।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৭ থেকে দেশজুড়ে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে এবং চলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

ঐতিহাসিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক প্রজন্মের দুই নেতা কেনিয়াত্তা ও ওডিঙ্গা। তাদের বাবারা ১৯৬০-এর দশকে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। সেই বিরোধিতা আজো চলছে। এবার নিয়ে চারবার নির্বাচন করছেন ওডিঙ্গা। কিন্তু কোনোবারই জিততে পারেননি। ২০১৩ সালে কেনিয়াত্তার কাছে পরাজিত হন তিনি।

কেনিয়ার ভোট ব্যবস্থা কম্পিটারনিয়ন্ত্রিত হওয়ায় তা স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হবে বলে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা আশা করছেন। তবে কোনো নিকটতম প্রার্থী যদি ডিজিটাল ব্যবস্থায় গণনা হওয়া ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন, তাহলে তা হাতে গোনা হবে এবং এরপর কেউ কোনো অভিযোগ বা দাবি করতে পারবেন না।

তথ্যসূত্র : বিবিসি অনলাইন



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ আগস্ট ২০১৭/রাসেল পারভেজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়