ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

৩৫ ডায়ালাইসিস মেশিন ও ৮৮৩২ ডায়ালাইজারে কর মওকুফ

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৪, ৯ মার্চ ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
৩৫ ডায়ালাইসিস মেশিন ও ৮৮৩২ ডায়ালাইজারে কর মওকুফ

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : দরিদ্র কিডনি রোগীদের সেবা দেওয়ার শর্তে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের ডায়ালাইসিস সেন্টারের জন্য আমদানি করা ৩৫টি হেমো ডায়ালাইসিস মেশিন ও ৮ হাজার ৮৩২টি ডায়ালাইজারের ওপর প্রযোজ্য অগ্রিম মূল্য সংযোজন কর (এটিভি) মওকুফ করা হয়েছে।

৪ মার্চ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব (মূসক নীতি) হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার স্বাক্ষরিত এক বিশেষ আদেশে এটিভি অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যা ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর ধরা হয়েছে।

আদেশে বলা হয়, গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের ডায়ালাইসিস সেন্টারের জন্য আমদানি করা ৩৫টি হেমো ডায়ালাইসিস মেশিন ও ৮ হাজার ৮৩২টি ডায়ালাইজারের ওপর প্রযোজ্য এটিভি মওকুফ করা হয়েছে। এর আগে ২০০৯ সালে এক আদেশের মাধ্যমে রেফারেল হসপিটাল-সংক্রান্ত আদেশে রেফারেল হাসপাতালের চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও উপকরণ আমদানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আমদানি শুল্ক, ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়। এছাড়া, ২০১৮ সালে অপর আদেশে হেমো ডায়ালাইজারের ওপর আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়।

আদেশে আরো বলা হয়, আমদানি করা হেমো ডায়ালাইসিস মেশিন ও ডায়ালাইজারগুলো বাণিজ্যিক নয়, দরিদ্র রোগীদের চিকিৎসাসেবায় ব্যবহৃত হবে বিধায় শর্তসাপেক্ষে এটিভি অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর ফলে গরিব রোগীরা কম খরচে সেবা গ্রহণের সুযোগ পাবে।

শর্তের মধ্যে রয়েছে- এসব মেশিন গরিব রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবে। কোনো অবস্থাতেই বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা বা হস্তান্তর করা যাবে না। আমদানি করা এসব মেশিন সঠিক এইচএস কোডে ঘোষণা ও শুল্কায়ন করা, আমদানি নীতি পরিপালন করতে হবে। এছাড়া, ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকার করতে হবে যে, এসব মেশিন হস্তান্তর, বিক্রি, অন্য ব্যবহার, চুরি বা খোয়া গেলে নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে প্রযোজ্য শুল্ক কর পরিশোধ করতে হবে।

কিডনি ফাউন্ডেশনের হিসাব অনুযায়ী, দেশে প্রায় ২ কোটি কিডনি রোগী আছেন, তাদের মধ্যে প্রায় ১ কোটি নারী। দেশে বর্তমানে কিডনি রোগীদের জন্য মাত্র ৯৬টি ডায়ালাইসিস সেন্টার রয়েছে।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র একটি বেসরকারি প্র্তিষ্ঠান। ১৯৭১ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১৯৭২ সালের নিবন্ধনকৃত পাবলিক চ্যারিটেবল ট্রাস্ট। দুটি লক্ষ্য নিয়ে এই প্র্তিষ্ঠান নিবন্ধিত হয়। দারিদ্র্য হ্রাসকরণ ও নারীর উন্নতি সাধন। ১৯৭৭ সালে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সমন্বিত সমাজস্বাস্থ্য ও  পরিবার পরিকল্পনা সেবা সর্বোচ্চ জাতীয় পুরস্কার স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার লাভ করে। গণস্বাস্থ্য ফিলিপাইন থেকে ম্যাগসেসে পুরস্কার (১৯৮৫), সুইডেন থেকে রাইট লাইভহুড পুরস্কার (১৯৯২) এবং ২০০২ সালে বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্টারন্যাশনাল হেলথ হিরো পুরস্কার লাভ করে।

১৯৭১ সালের মার্চ মাসে ব্রিটেনে বসবাসরত ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি চিকিৎসক ডা. এ এইচ সায়েদুর রহমানকে সভাপতি এবং ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে  বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে। ১৯৭১ সালের মে মাসের প্রথম দিকে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন এবং যুক্তরাজ্য যৌথভাবে ডা. এম এ মোবিন ও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করার জন্য ভারতে পাঠায়। তারা অস্থায়ী (মুজিবনগর) বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে মেলাঘরে ৪৮০ শয্যা বিশিষ্ট বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করে। সেনাবাহিনীর ডাক্তার (এমএস) সিতারা বেগম এই হাসপাতালের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন।

স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল ঢাকার ইস্কাটন সড়কে পুনঃস্থাপিত হয়। ১৯৭২ সালের এপ্রিল মাসে গ্রামকে উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু রূপে গড়ে তোলার জন্য চল গ্রামে যাই- এই স্লোগান ও উদ্দেশ্য নিয়ে হাসপাতালটি সাভারে স্থানান্তরিত হয় এবং নামকরণ করা হয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকাসমূহ, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের নদীর চর এলাকা, কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও চরফ্যাশনের সমুদ্রতীরবর্তী দ্বীপ এলাকায় বিস্তার লাভ করে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২৫টি উপজেলায় ৪০টি হেলথ ক্লিনিক এবং সাভার, ঢাকা শহর, শ্রীপুর (গাজীপুর জেলা) ও কাশিনাথপুরে (পাবনা) ৪টি সেকেন্ডারি কেয়ার হাসপাতাল স্থাপন করেছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ মার্চ ২০১৮/এম এ রহমান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়