ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ফণি নয়, রমজানের কারণে দাম বেড়েছে ভোগ্য পণ্যের

নাসির উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:২৫, ৪ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ফণি নয়, রমজানের কারণে দাম বেড়েছে ভোগ্য পণ্যের

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : ঘুর্ণিঝড় ফণির কারণে রাজধানীর বাজারগুলোতে পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা থাকলেও তা এখনো হয়নি। তবে আসন্ন রমজানকে টার্গেট করে কিছু দিন ধরে বেশকিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ফণির প্রভাবে যদি আকস্মিক বন্যা বা টানা বৃষ্টি হয় তাহলে অনেক ফসলের ক্ষতি হতে পারে। এর ফলে বাজারে কিছুটা প্রভাব পড়তেও পারে।

এদিকে, রমজানকে ঘিরে অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রতি বছর বেশি লাভের আশায় কিছু পণ্যের সরবরাহে ঘাটতিসহ নানা অজুহাতের কথা বলে দাম বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এবার রমজানে অত্যাবশ্যকীয় সকল পণ্যের চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট মজুদ আছে। তবে অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কোনোভাবেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।

শনিবার রাজধানীর ঝিগাতলা, কারওয়ানবাজার, হাতিরপুল, মিরপুর-১ নাম্বার বাজার ঘুরে দেখা যায়, যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে এগুলো হলো- চিনি, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, আলু প্রভৃতি। সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্যগুলোর দাম ৫ থেকে সর্বোচ্চ ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। প্রতি কেজি চিনি, পেঁয়াজ, আলুতে পাঁচ টাকা এবং আদা, রসুনে ২০ টাকা করে দাম বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে সব ধরনের মাছের দাম। প্রতি কেজি মাছে ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা বেড়েছে।

বাজার ঘুরে আরো দেখা যায়, বাজারে মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৪০ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। সে হিসেবে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে গড়ে পাঁচ টাকা।

পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে মিরপুর-১ বাজারের মুদি দোকানি আব্দুল হাই বলেন, পাইকারের কাছ থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। আর রমজান মাস আসলে বাজার একটু চড়া হয়ে যায়, এটা তো সবাই বোঝে, কী কারণ।

প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২২ টাকায়। যা আগে ছিল ১৮ টাকা। বাজার ও মানভেদে আমদানি করা চায়না রসুন ও আদা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ টাকা। দেশি রসুন ও আদা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১১০ টাকায়। সে হিসেবে প্রতি কেজি আদা রসুনের দাম বেড়েছে ২০ টাকা।

প্রতি কেজি চিনি বিক্রি করা হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৫০ থেকে ৫১ টাকায়। দাম গড়ে পাঁচ টাকা বেড়েছে।

বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১০২ টাকা, দুই লিটার ২০২ টাকা এবং পাঁচ লিটার ৫০০ থেকে ৫২০ টাকা। যা আগে ছিল যথাক্রমে ১০৪ টাকা, ২০৬ টাকা এবং ৫১০ টাকা। অপরিবর্তিত রয়েছে চাল ও অন্যান্য মুদি পণ্যের দাম। বাজারে প্রতি কেজি নাজিরশাইল চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, মিনিকেট ৫৫ থেকে ৫২ টাকা, স্বর্ণা ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।  বিআর-২৮ নম্বর ৪০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এছাড়া, খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকায়, প্যাকেট আটা ৩২ টাকায়, ডাল ৪০ থেকে ৯০ টাকায়, লবণ ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়, পোলাওয়ের চাল ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এক ডজন মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন ১১০ থেকে ১২০ টাকা।

বাজার ও মানভেদে কাঁচা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি, কাকরোল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কচুর লতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শসা ২০ থেকে ৩০ টাকা, টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

অধিকাংশ সবজির দাম কমলেও কয়েকটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধুন্দুল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধেঁড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কাঁচা মরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। সে হিসেবে প্রতিকেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।

মাংসের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি। আগের সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৬০ টাকা কেজি দরে। লাল লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়, যা আগে ছিল ২২০ টাকা। আর পাকিস্তানি কক প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২৫০ টাকায়, যা আগে বিক্রি হয়েছিল ২০০ থেকে ২৮০ টাকা পিস। মুরগির মতো গরু ও খাসির মাংসের দাম কমেছে। বাজার ভেদে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫২০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকায়। আর প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭২০ থেকে ৮০০ টাকায়। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকায়।

অপরিবর্তিত রয়েছে মাছের দাম। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। রুই মাছ ২৮০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, শিং ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং চিতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ মে ২০১৯/নাসির/রফিক 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়