ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বিজ্ঞানপ্রেমীদের জন্য ১১ প্রশ্ন

স্বপ্নীল মাহফুজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৩৫, ৮ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিজ্ঞানপ্রেমীদের জন্য ১১ প্রশ্ন

প্রতীকী ছবি

স্বপ্নীল মাহফুজ : আমি পড়তে ভালোবাসেন। বিজ্ঞান আপনার আগ্রহের বিষয়। বিজ্ঞানভিত্তিক লেখা পেলে এক বসাতেই পড়ে ফেলতে চেষ্টা করেন। ইতোমধ্যে বিজ্ঞান সম্পর্কিত অনেক জ্ঞান আপনার অর্জিত হয়েছে। আজ আমরা আপনার একটি মজার পরীক্ষা নেবো। এ প্রতিবেদনে বিজ্ঞান সম্পর্কিত ১১টি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে, কিন্তু উত্তরগুলো পড়ার আগে নিজে নিজে উত্তর দিতে চেষ্টা করুন। এ প্রশ্নগুলোর ৫০ শতাংশ সঠিক উত্তর দিতে পারলে বুঝে যাবেন যে আপনি জিনিয়াসের পর্যায়ে চলে গেছেন!

* কোনটির ওজন বেশি, এক পাউন্ড স্বর্ণ নাকি এক পাউন্ড পালক?
যদি আপনি মনে করেন যে উভয়ের ওজনই একই, তাহলে তা ভুল উত্তর! এক পাউন্ড পালকের ওজন বেশি। কেন? স্বর্ণের ওজন মাপা হয় ট্রয় মেজারমেন্ট সিস্টেমে। তাই আপনি যখন উভয়কে একটি ইউনিফরম সিস্টেমে রূপান্তর করবেন, তখন এক পাউন্ড স্বর্ণের ওজন হবে প্রায় ৩৭৩.২৪ গ্রাম এবং এক পাউন্ড পালকের ওজন হবে প্রায় ৪৫৩.৫৯ গ্রাম। এই ব্রেইন চ্যালেঞ্জটা আপনার পছন্দ হয়েছে?

* পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী পর্বতশৃঙ্গ কোনটি?
অনেকে এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে মাউন্ট এভারেস্ট। কিন্তু ইকুয়েডরে অবস্থিত চিম্বোরাজো হলো পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী পর্বতশৃঙ্গ। কেন? প্রকৃতপক্ষে, পৃথিবী প্রতিনিয়ত ঘোরার কারণে এটি বিষুবরেখাতে স্ফীত হয়। চিম্বোরাজোর অবস্থান এ বিষুবরেখার শীর্ষে এবং এ স্ফীতির ডানে, তাই এটির চূড়া পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী। পর্বতশৃঙ্গের তলদেশ থেকে চূড়া পর্যন্ত হিসাব করলে মাউন্ট এভারেস্ট হলো পৃথিবীর দীর্ঘতম পর্বতশৃঙ্গ, কিন্তু এটির চূড়া পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী নয়।

* এক সময় কি লোকেরা বিশ্বাস করত যে পৃথিবী সমতল?
প্রাচীন গ্রীস থেকে লোকেরা জানে যে পৃথিবী গোলাকার। অনেকে বিশ্বাস করেন যে মধ্যযুগের প্রারম্ভিকে কিছু লোক বলেছিল যে পৃথিবী সমতল। কিন্তু বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে পৃথিবী গোলাকার।

* গোল্ডফিশের স্মৃতি কতক্ষণ স্থায়ী হয়?
অধিকাংশ লোকে এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে তিন সেকেন্ড, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে গোল্ডফিশের স্মৃতি কিছুদিন স্থায়ী হয়। গোল্ডফিশের রয়েছে ক্লাসিক্যাল কন্ডিশনিং লার্নিং প্রসিডিউর, যার মানে হলো তাদেরকে খাবারের সঙ্গে অন্য একটি বস্তু দিলে তারা উভয়টিকে মনে রাখে এবং তাদের স্মৃতি কিছুদিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

* মানুষের ইন্দ্রিয় কয়টি?
প্রকৃতপক্ষে আপনার পাঁচটির বেশি ইন্দ্রিয় থাকতে পারে, অনেক নিউরোলজিস্ট মানুষের মধ্যে ১০ বা ততোধিক ইন্দ্রিয় শনাক্ত করেছেন। হ্যাঁ সাধারণ ইন্দ্রিয় পাঁচটি, যথা- স্পর্শ, স্বাদ, ঘ্রাণ, দৃষ্টি ও শ্রবণ। কিন্তু এ পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের প্রত্যেকটির মধ্যে একাধিক ইন্দ্রিয় থাকতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, স্পর্শেন্দ্রিয় গঠিত হয়েছে দেহসংক্রান্ত কিছু ইন্দ্রিয় দিয়ে, যার মধ্যে তাপ-চাপ-ব্যথার অনুভূতি অন্তর্ভুক্ত। দেহসংক্রান্ত আরেকটি অভ্যন্তরীণ ইন্দ্রিয় হলো ক্ষুধা বা তৃষ্ণা।

* শার্কের কি ক্যানসার হয়?
এ প্রশ্নের উত্তর হলো- হ্যাঁ, শার্কের ক্যানসার হতে পারে। কিন্তু তারা ক্যানসার নিরাময় করতে পারে না। দুর্ভাগ্যবশত অনেকে বিশ্বাস করেন, শার্কের তরুণাস্থি ক্যানসার নিরাময় করতে পারে। বিজ্ঞানীদের কাছে প্রমাণ আছে যে, শার্কেরও টিউমার হয়।

* শরীরের ভেতরে রক্তের রঙ কি?
যদি আপনি আপনার শিরার দিকে তাকান, তাহলে এ প্রশ্নে আপনার উত্তর নীল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কিন্তু এ উত্তর ভুল। অনেকে বিশ্বাস করেন যে শরীরের ভেতরে থাকা অবস্থায় রক্তের রঙ নীল, যা শরীরের বাইরে অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসলে লাল হয়ে যায়। কিন্তু অক্সিজেনের সংস্পর্শ ছাড়াও রক্তের রঙ লাল, কারণ রক্তে যে হিমোগ্লোবিন থাকে তা হলো লাল প্রোটিন। একারণে আপনার শরীরের ভেতরের রক্ত লাল। আপনার শিরা নীল দেখায়, কারণ এতে আলো প্রতিফলিত হয়।

* একই স্থানে দুবার বজ্রপাত হয়?
যদি এ প্রশ্নের উত্তরে না বলেন, তাহলে আপনি ভুল। প্রকৃতপক্ষে, একই স্থানে দুবার বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। প্রতিবছর পৃথিবীতে ১.৫ বিলিয়নেরও বেশি বার বজ্রপাত হয়। যেসব স্থানে একাধিকবার বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তাদের মধ্যে উঁচু ভবন, বিদ্যুতের খুঁটি ও গাছ অন্তর্ভুক্ত। নিউ ইয়র্কের এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ে বছরে ডজনেরও বেশি বার বজ্রপাত হয়।

* মানব শরীরের অধিকাংশ তাপ কোন অঙ্গের মাধ্যমে বের হয়?
এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আপনার পক্ষে কঠিন হতে পারে। মানব শরীরের সকল স্থানের মাধ্যমে তাপ বের হতে থাকে। কিন্তু শীতকালে বেশিরভাগ তাপ মাথার মাধ্যমে বের হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ এটি হলো একমাত্র স্থান যা কাপড়ে আবৃত থাকে না। তাই শীতকালে উষ্ণতা ধরে রাখার জন্য হ্যাট পরতে পারেন।

* গিরগিটি কেন রঙ বদলায়?
পুরুষ গিরগিটির রঙ পরিবর্তনের পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। তারা ছদ্মবেশ ধারণের জন্য রঙ বদলায় না, তাদের শরীরের রঙ পরিবর্তনে বড় ভূমিকা রাখে মেজাজ ও তাপমাত্রা। যখন তারা খুশি থাকে এবং স্ত্রী গিরগিটির সঙ্গে যৌনমিলনের চেষ্টা করে, তখন তারা শরীরের রঙ পাল্টিয়ে থাকে। এছাড়া ঠান্ডা তাপমাত্রায়ও তাদের শরীরের রঙ পরিবর্তিত হতে দেখা যায়।

* প্লুটো কি একটি গ্রহ?
এ প্রশ্নটিতে অনেকে ভুল উত্তর দেয়, এর কারণও রয়েছে। প্লুটোকে আমাদের সৌরজগতের একটি গ্রহ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল, কিন্তু বর্তমানে এটিকে ডোয়ার্ফ প্লানেট বা বামন গ্রহ হিসেবে শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ মে ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়