ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘রাজস্ব সংগ্রহে ডিসি-ইউএনওদের নেতৃত্ব অর্থহীন'

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:২৭, ১৯ জুলাই ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘রাজস্ব সংগ্রহে ডিসি-ইউএনওদের নেতৃত্ব অর্থহীন'

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক:  রাজস্ব সংগ্রহ বাড়াতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে কমিটি গঠনের প্রস্তাবকে অবৈধ, এখতিয়ার বর্হিভূত ও অর্থহীন দাবি করেছে কর ও কাস্টমসের দুটি সংগঠন।

রাজস্ব সংগ্রহ কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এনবিআরে অস্থিরতা তৈরির উদ্দেশে এ ধরণের প্রস্তাব কিনা তা খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠন দুটি।

বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সেলিম আফজাল ও মহাসচিব মো. নূরুজ্জামান খান এবং বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খন্দকার মো. আমিনুর রহমান ও মহাসচিব সৈয়দ মুসফিকুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানানো হয়েছে।

গত ১৪ জুলাই সচিবালয়ে ডিসি সম্মেলন অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান জানিয়েছিলেন, স্থানীয়ভাবে সরকারের রাজস্ব সংগ্রহ বাড়াতে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ডিসি-ইউএনওদের নেতৃত্বে কমিটি চাওয়া হচ্ছে। ডিসিদের এ প্রস্তাবকে সরকার ইতিবাচক হিসেবে দেখছে।  রাজস্ব সংগ্রহ বাড়াতে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জনবল বাড়ানোর প্রস্তাব এনবিআরের। জেলা প্রশাসকদের প্রস্তাবের সঙ্গে এনবিআরের প্রস্তাবের সমন্বয় প্রয়োজন হবে। তখন হয়তো বিষয়টি আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে।

ডিসি সম্মেলনে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের রাজস্ব সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সম্পৃক্ত হতে চাওয়ার দাবির প্রতি ভিন্নমত প্রকাশ করে অ্যাসোসিয়েশন দুটি এই ধরনের এখতিয়ার বহির্ভূত এবং অর্থহীন দাবির বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

তারা বলছে, সরকার পরিচালনা ও জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে সরকার ২৮টি ক্যাডার সৃষ্টি করেছে। প্রত্যেকটি ক্যাডারের নিজস্ব কর্মের পরিধি ও প্রকৃতি সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত। রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, সরকারের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণ এবং এ সংক্রান্ত নীতি নির্ধারনী কার্যক্রম পরিচালিত হয় বিসিএস (ট্যাক্সেশন) ও বিসিএস (কাস্টমস এন্ড ভ্যাট) ক্যাডারের মাধ্যমে।

এই দুটি ক্যাডারের কর্মকর্তারা এনবিআরে নীতি নির্ধারনী নির্দেশনা অনুসরণ করে নিজস্ব আইনে সরকার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব সংগ্রহ করে। আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২ ও কাষ্টমস আইন ১৯৬৯ অনুযায়ী রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতা এ দুটি ক্যাডারের কর্মকর্তাদের উপর ন্যস্ত রয়েছে। বর্তমান সরকার রাজস্ব সংগ্রহের স্বার্থে এনবিআরের দাপ্তরিক নিয়ন্ত্রণ উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত করেছে এবং এর নিজস্ব দাপ্তরিক কাঠামো ও জনবল দিয়ে সরকারের প্রয়োজনীয় রাজস্ব সংস্থানের জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডিসি সম্মেলনে ডিসি-ইউএনওরা জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করে রাজস্ব সংগ্রহ পরিবীক্ষণ করার যে ইচ্ছা প্রকাশ করে প্রস্তাব পেশ করেছেন তা শুধু অবৈধ হস্তক্ষেপই নয়; বরং এর মাধ্যমে রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে একটি বিশৃঙ্খখলা সৃষ্টির আশংকা রয়েছে। বর্তমান সরকার যখন দেশের আর্থিকখাতে শৃঙ্খলা আনার প্রচেষ্টায় তৎপর সেই মুহূর্তে এ প্রস্তাব পেশ করার মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দেশের ৮৮ ভাগ রাজস্ব যোগানকারী প্রতিষ্ঠান এনবিআরে অস্থিরতা সৃষ্টি করার অপতৎপরতার সামিল।

এতে আরো বলা হয়েছে, পেশাদারিত্বের বিপরীতে অবস্থান গ্রহণকারী প্রশাসন ক্যাডাররা তাদের ওপর ন্যস্ত ভূমি রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে কতটা পেশাদারিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে তা বিবেচনায় আনা প্রয়োজন। ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং এর বিপরীতে রাজস্ব আহরণে যে অব্যবস্থাপনা বিরাজ করছে সে বিষয়ে মনোনিবেশ না করে আরো নতুন দায়িত্ব পাওয়ার দাবি করাটা নি:সন্দেহে উদ্দেশ্যমূলক।

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ জুলাই  ২০১৯/ এম এ রহমান/শাহেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়