ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সঞ্চয়পত্রে ৫ শতাংশ উৎসে কর বহাল: অর্থমন্ত্রী

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৫, ২৯ জুলাই ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সঞ্চয়পত্রে ৫ শতাংশ উৎসে কর বহাল: অর্থমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিবেদক : অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে উৎসে কর ৫ শতাংশই কর্তন করা হবে।

সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূইয়া উপস্থিত ছিলেন।

সংসদের ভেতরে ও বাইরে বিরূপ সমালোচনা এবং স্বল্প আয়ের মানুষের উদ্বেগ উপেক্ষা করে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর উৎসে কর ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশের প্রস্তাব রেখেই গত ২৯ জুন অর্থবিল, ২০১৯ পাস হয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রে করের বিষয়টি এবারের বাজেটেই পাস হয়েছে। প্রথমে পেনশনারদের জন্যই সঞ্চয়পত্রের বিষয়টি আসে। এরপর এটির বিস্তৃতি ঘটে। তবে বিস্তৃতির পর এক্ষেত্রে অপব্যবহার বেড়ে গেছে। এর ফলে সঞ্চয়পত্রের সুবিধা গরিব ও পেনশনারদের পরিবর্তে পাচ্ছে ধনিরা।’

তিনি বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রে পেনশনারদের ক্ষেত্রে বাজেটের আগেও যে সুবিধা ছিল এখনো সেটা বলবৎ থাকবে। আর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য সকল ক্ষেত্রে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে মুনাফার ওপর উৎসে কর ৫ শতাংশ। এজন্য খুব শিগগির এনবিআর এসআরও জারি করবে। এটির কার্যকারিতা ১ জুলাই থেকেই ধরা হবে। ৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে উৎসে হবে ১০ শতাংশ।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী যারা অন্য জায়গায় বিনিয়োগ করতে পারে না তারা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে এটা আমরা চাই। কিন্তু এখানে অপব্যবহার হচ্ছে। তাই আমরা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের বিষয়টিতে আরও স্বচ্ছতা আনতে চায়।’

৫ লাখ টাকার পরিমাণটা অনেক কম হয়ে যাচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রের বিকল্প হিসেবে আমরা বন্ড মার্কেট নিয়ে আসব। ইন্ডিয়াতে সঞ্চয়পত্রের চেয়ে বন্ড মার্কেটে বিনিয়োগ বেশি। বন্ড মার্কেটটা চালু করতে পারলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীসহ সবাই এতে বিনিয়োগ করে একটা নির্দিষ্ট মুনাফা পাবে। এক্ষেত্রে কোনো অপব্যবহার হবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমি চাই মানুষ বন্ড মার্কেটে বেশি বেশি বিনিয়োগ হোক। বন্ড মার্কেটের অর্থবছরে হাজারবার লেনদেন হয়। এক্ষেত্রে অর্থনীতি আরো বড় হবে। কিন্তু সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে টাকা এক জায়গায় থেকে যায়। এখন পেনশনাররা সঞ্চয়ত্রে বিনিয়োগের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে। তবে একটা সময় আসবে তারা নিজেরাই অর্থ সঞ্চয়পত্রে রাখবে না। কারণ তাদেরকে অন্য জায়গায় বেটার অফার দেয়া হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না, মানুষ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করুক। আমরা চাই তারা ব্যাংকে বিনিয়োগ করুক। যেখানে বিনিয়োগ করলে অর্থনীতি শক্তিশালী হবে আমরা সেখানেই বিনিয়োগ নিয়ে যেতে চাই। আর সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে স্বচ্ছতা থাকে না। আমরাতো দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিতে পারি না। আমরা এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনতে ডাটাবেজ তৈরি করেছি। ডাটাবেজ দেখে নিশ্চিত হবো কে কোথায় কত টাকা বিনিয়োগ করেছে। তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।

আগে যারা বিভিন্নভাবে সঞ্চয়পত্রে কোটি কোটি বিনিয়োগ করেছে তাদের জন্য কোন শাস্তি কি দেয়া হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যেহেতু বেশি বিনিয়োগ করতে পারবে না এমন কোনো আইন ছিলে না তাহলে  কিভাবে তাদের আমরা শাস্তি দিব। তবে এক্ষেত্রে তারা ধরা পড়বে অন্য আইনে। এত টাকা পেল কই? এ জন্য তারা দুদকের জালে ধরা পড়বে।’


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ জুলাই ২০১৯/হাসনাত/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়