ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘গত বছরের তুলনায় তিন গুণ বেশি ওয়ালটন এসি বিক্রি হবে’

এম মাহফুজুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫০, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘গত বছরের তুলনায় তিন গুণ বেশি ওয়ালটন এসি বিক্রি হবে’

রাজধানীর ওয়ালটন করপোরেট অফিসে অ্যাচিভমেন্ট সেলিব্রেশন প্রোগ্রামে প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হাত থেকে পুরস্কার নিচ্ছেন দেলোয়ার হোসেন সরকার ও সাগর কুমার সাহা।

এম মাহফুজুর রহমান : দেলোয়ার হোসেন সরকার ও সাগর কুমার সাহা। তারা দুজন ওয়ালটনের নরসিংদীর পরিবেশক শোরুম ‘টিএস ইলেকট্রনিক্স’ এর স্বত্বাধিকারী। ১১ বছর ধরে তারা দেশীয় ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটনের ডিলার হিসেবে সফলতার সঙ্গে কাজ করছেন। সম্প্রতি ওয়ালটন এয়ার কন্ডিশনার বিক্রিতে বিশেষ অবদান রাখায় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ তাদেরকে পুরস্কৃত করে।

জানা গেছে, স্থানীয় বাজারে এসি বিক্রিতে রেকর্ড সৃষ্টি করে চলেছে ওয়ালটন। চলতি বছরের শুরুতে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, সাত মাসেই তার ৭৫ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। ২২ শতাংশ হিস্যা নিয়ে দেশের এসি বাজারে এখন শীর্ষে ওয়ালটন।

এসি বিক্রির এই সফলতা উদযাপনে গত ৩১ আগস্ট রাজধানীর ওয়ালটন করপোরেট অফিসে আয়োজন করা হয় ‘অ্যাচিভমেন্ট সেলিব্রেশন প্রোগ্রাম’। যেখানে এসি বিক্রিতে বিশেষ অবদান রাখায় ২৩ জন কর্মকর্তা এবং ২০টি বিক্রয় প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে এসি ডেলিভারির পরিমাণ, ডেলিভারিকৃত এসির টাকার পরিমাণ, মোট কালেকশন এবং প্রবৃদ্ধির ওপর ভিত্তি করে টিএস ইলেকট্রনিক্সকে পুরস্কৃত করে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।

দেলোয়ার হোসেন সরকার ও সাগর কুমার সাহা নরসিংদী শহরের বাসিন্দা। দুজনই আলাদাভাবে এলাকায় ইলেকট্রনিক্সের ব্যবসা করতেন। ২০০৯ সালে শুরু করেন পার্টনারশিপের ব্যবসা। ‘টিএস ইলেকট্রনিক্স’ নামে ওয়ালটনের পরিবেশক হন। এরপর তাদের আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ১১ বছর ধরে তারা ওয়ালটনের ডিলার হিসেবে সফলতার সঙ্গে কাজ করছেন।

দেলোয়ার ও সাগরের শোরুমটি কুমিল্লা জোনের আওতায় পড়েছে। দেলোয়ারের বয়স ৫২ বছর। ১৯৯১ সাল থেকে ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায় আছেন। অন্যদিকে, ২০০৫ সালে ইলেকট্রনিক্সের ব্যবসা শুরু করেন সাগর কুমার সাহা। এর আগে জাপানে চাকরি করেন ১০ বছরের বেশি। তার বয়স ৪২ বছর।

ওয়ালটনের শোরুম টিএস ইলেকট্রনিক্সে দেলোয়ার হোসেন সরকার (ডানে) ও সাগর কুমার সাহা (বামে)

 

দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ওয়ালটনের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক খুবই ভালো। ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ কোনো সময়েই অতিরিক্ত কিছু চাপিয়ে দেয় না। তারা সব সময় আমাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। ওয়ালটন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের যেসব সুযোগ-সুবিধা দেয়, তা অন্য কোনো কোম্পানি থেকে আশা করতে পারি না। এসব কারণে ওয়ালটন পণ্য বিক্রিতে আমাদের আগ্রহ আরো বেড়ে যায়।’

তিনি আরো বলেন, আমাদের এখানে এয়ার কন্ডিশনারসহ সব ধরনের ওয়ালটন পণ্যের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এলাকায় ক্রেতাদের কাছ থেকে বেশ সাড়া পাচ্ছি। গত বছরের চেয়ে এ বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত দ্বিগুণ এসি বিক্রি হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে তিন গুণ বেশি এসি বিক্রি হবে।

ওয়ালটনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, দেশীয় পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আমাদের এই পথচলা অব্যাহত থাকবে। ওয়ালটন পণ্যের সর্বোচ্চ বিক্রয় কার্যক্রমে আমরা বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি। ক্রেতাদের ওয়ালটন পণ্য কেনায় উদ্বুদ্ধ করছি। এলাকায় ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-৪ এর আওতায় আনন্দ র‌্যালি ও মাইকিং করা হয়েছে একাধিকবার। প্রচারের কারণে আমাদের শোরুমে প্রতিনিয়ত ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে।

বিক্রয়ে আসামান্য অবদান রাখায় এর আগেও টিএস ইলেকট্রনিক্স বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে একাধিক বার পুরস্কৃত হয়েছে। ২০১৭ সালে সেরা ১০ জন ডিলারকে চীন ভ্রমণে পাঠিয়েছিল ওয়ালটন। তাদের একজন ছিলেন দেলোয়ার হোসেন। এছাড়া, ওয়ালটনের ডিলার হিসেবে তিনি মিশর, ইন্দোনেশিয়া ও নেপালসহ আরো বেশ কয়েকটি দেশে ভ্রমণ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমার পরিবার ওয়ালটনের কাছে কৃতজ্ঞ। প্রতিবছরই আমাদের শোরুম পুরস্কার পাচ্ছে। ওয়ালটন তার ডিলারদের বিদেশ ভ্রমণেও নিয়ে যাচ্ছে। এটা আসলেই অভাবনীয়। এরকম কোনো কোম্পানি তার ডিলারদের এত উৎসাহ দেয় না। সত্যিই ওয়ালটনের কাছে আমাদের কিছুই চাওয়ার নেই।’

ওয়ালটন থেকে পাওয়া ক্রেস্ট হাতে দেলোয়ার হোসেন সরকার ও সাগর কুমার সাহা

 

দেলোয়ারের সঙ্গে পার্টনারশিপে ব্যবসা শুরুর পর ওয়ালটনের পক্ষ থেকে নানান সময় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন সাগর কুমার সাহা। ওয়ালটনের ডিলার হিসেবে তিনিও ভ্রমণ করেছেন তিনটি দেশ। ২০১৩ সালে থাইল্যান্ড, ২০১৫ সালে নেপাল এবং ২০১৮ সালে দুবাই ভ্রমণে যান সাগর।

অ্যাচিভমেন্ট সেলিব্রেশন প্রোগ্রামে উপস্থিত ছিলেন তিনিও। সাগর সাহা বলেন, ‘অনেক কোম্পানির সঙ্গেই কাজ করেছি। কিন্তু ওয়ালটনের মতো প্রতিষ্ঠান পাইনি কখনো। একটি বিশ্বসেরা কোম্পানির যত গুণ থাকা প্রয়োজন, তার সবই আছে ওয়ালটনের। এই প্রতিষ্ঠানের ডিলারের মর্যাদা পেয়ে আমরা সত্যিই গর্বিত।’

তিনি আরো বলেন, ‘এলাকায় আমাদের শোরুমেই ক্রেতাদের ভিড় বেশি। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ওয়ালটনের রেফ্রিজারেটর এবং এসি। আগের চেয়ে এসির চাহিদা অনেক বেড়েছে।

দেলোয়ার এবং সাগরের মধ্যে চমৎকার বোঝাপড়া। তাদের দুজনেরই ভাষ্য, একে অন্যের সঙ্গে কোনোদিন মনোমালিন্য পর্যন্ত হয়নি। তারা বলেন, আমরা হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদ রাখিনি কখনো। এ দেশ আমাদের সকলের। ধর্ম-কর্ম নিয়েও কোনোদিন বিরোধ দেখা দেয়নি আমাদের মধ্যে। দেলোয়ার এবং সাগর আজীবন ওয়ালটনের সঙ্গে ব্যবসা করতে চান।


রাইজিংবিডি/ঢ‌াকা/৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯/এম মাহফুজুর রহমান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়