কম্প্রেসর দিয়ে ইরাকে শুরু হলো ওয়ালটনের ব্যবসা
অগাস্টিন সুজন || রাইজিংবিডি.কম
ওয়ালটন কারখানায় ইরাকে কম্প্রেসর রপ্তানি কার্যক্রম উদ্বোধন করছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরাকি দূতাবাসের চার্জেস দ্য অ্যাফেয়ারস মোহানাদ আল দারজি
রপ্তানি বাণিজ্যে ব্যাপক সাফল্য দেখাচ্ছে ওয়ালটন। প্রযুক্তিপণ্য রপ্তানিতে একের পর এক জয় করে চলেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ পণ্য দিয়ে বিশ্ববাসীর মন জয় করে নিচ্ছে তারা। এরই ধারাবাহিকতায় এবার উচ্চমানের কম্প্রেসর রপ্তানির মাধ্যমে ইরাকে ব্যবসা শুরু করলো ওয়ালটন। পর্যায়ক্রমে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে রেফ্রিজারেটরসহ অন্যান্য প্রযুক্তিপণ্য রপ্তানি করবে বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন।
মঙ্গলবার গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন কারখানা কমপ্লেক্সে আনুষ্ঠানিকভাবে ইরাকে কম্প্রেসর রপ্তানি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরাকি দূতাবাসের চার্জেস দ্য অ্যাফেয়ারস মোহানাদ আল দারজি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আশরাফুল আলম এবং পরিচালক এস এম রেজাউল আলম।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের চিফ টেকনিক্যাল অফিসার ই এম ইয়াং, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিট (আইবিইউ) প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম, ওয়ালটন রেফ্রিজারেটরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) গোলাম মুর্শেদ, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হুমায়ুন কবীর, উদয় হাকিম ও ইউসুফ আলী, ওয়ালটন কম্প্রেসরের সিওও প্রকৌশলী মীর মুজাহিদীন ইসলাম, ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ফিরোজ আলম ও শাহজাদা সেলিম, মিডিয়া উপদেষ্টা এনায়েত ফেরদৌস, সিনিয়র অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর আব্দুর রউফ ও মোহসিন আলী মোল্লাসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ওয়ালটন কারখানায় প্রোডাক্ট ডিসপ্লে সেন্টার পরিদর্শন করছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরাকি দূতাবাসের চার্জেস দ্য অ্যাফেয়ারস মোহানাদ আল দারজিসহ অতিথিরা
মাহানাদ আল দারজি বলেন, ‘ওয়ালটন কারখানা দেখে আমি খুবই আনন্দিত। ওয়ালটনকে নিয়ে প্রত্যেক বাংলাদেশির গর্ব করা উচিত। ওয়ালটন কম্প্রেসর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ইরাকে পণ্য রপ্তানি শুরু হলো। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ইরাকের মধ্যকার পারস্পরিক ব্যবসায়িক সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো।
তিনি আরো বলেন, ইরাকে বাংলাদেশে তৈরি পণ্যের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। আমার বিশ্বাস ওয়ালটন পণ্য ইরাকের ক্রেতাদের কাছে সমাদৃত হবে। ইরাকে ওয়ালটনকে স্বাগতম।
উল্লেখ্য, বিশ্বের প্রায় ৩৫ টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে ওয়ালটন পণ্য। ইরাকে ওয়ালটন পণ্য রপ্তানিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন বলে উল্লেখ করে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আশরাফুল আলম বলেন, অত্যাধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থা, উচ্চমানের পণ্য, সাশ্রয়ী মূল্য, উদ্ভাবনী ও ফলপ্রসু বিপণন কৌশল এবং দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিয়ে দেশের বাজারে শীর্ষে ওয়ালটন। এখন ওয়ালটনের টার্গেট- ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত বিশ্বে বাজার সম্প্রসারণ।
কর্তৃপক্ষ জানায়, ওয়ালটনের লক্ষ্য বাংলাদেশে তৈরি ইলেকট্রনিক্স এবং প্রযুক্তিপণ্য দিয়ে বিশ্ববাজারে শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করা। সেজন্য নিজস্ব ব্র্যান্ডের পণ্য রপ্তানির পাশাপাশি ওইএম হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন খ্যাতনামা ব্র্যান্ডের পণ্য তৈরি করে দিচ্ছে তারা। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার ব্র্যান্ড হুন্দাই এবং ভারতের রিলায়েন্সের সঙ্গে চুক্তি করেছে ওয়ালটন। প্রতিষ্ঠান দুটিকে বিপুল পরিমাণ পণ্য সরবরাহ করবে ওয়ালটন। এছাড়া বিশ্বের শীর্ষ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আমাজনের মাধ্যমে উত্তর আমেরিকায় যাচ্ছে বাংলাদেশে তৈরি ওয়ালটন পণ্য।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরাকি দূতাবাসের চার্জেস দ্য অ্যাফেয়ারস মোহানাদ আল দারজিকে বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দিচ্ছেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আশরাফুল আলম এবং পরিচালক এস এম রেজাউল আলম
বিশ্বজুড়ে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের বিজনেস ভলিউম বাড়াতে পরিকল্পনা মাফিক কাজ চলছে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব ও সৃজনশীল ডিজাইনের গ্লোবাল মডেলের পণ্য তৈরি হচ্ছে। ওয়ালটন পণ্যের ডিজাইন, উৎপাদন এবং বিশ্বব্যাপী বিপণন নিয়ে কাজ করছেন ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা প্রকৌশলীরা। উৎপাদন প্রক্রিয়া, গবেষণা ও উন্নয়ন (আরএনডি), মান নিয়ন্ত্রণ বা কোয়ালিটি কন্ট্রোলসহ (কিউসি) বিভিন্ন বিভাগে স্থাপন করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মেশিনারিজ।
ওয়ালটনের আন্তর্জাতিক বিপণন বিভাগের প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম বলেন, বৈশ্বিক বাজার সম্প্রসারণের ওপর তারা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, রাশিয়া এবং ইউরোপের দেশগুলোতে ওয়ালটন পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে ব্যাপকভাবে কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে বিশ্বের বিভিন্ন খ্যাতনামা ব্র্যান্ডের কাছ থেকে রপ্তানি আদেশ পেতে যাচ্ছে ওয়ালটন।
তিনি জানান, ওয়ালটন পণ্যে সিই, সিবি, আরওএইচএস, আরইএসিএইচ, ইএমসি, ইইউ, ইউএসএ ইত্যাদি বৈশ্বিক স্ট্যান্ডার্ড এবং কোয়ালিটি নিশ্চিত করা হয়।
এর আগে মোহানাদ আল দারজি এবং অতিথিরা ওয়ালটনের প্রোডাক্ট ডিসপ্লে সেন্টার পরিদর্শন করেন। এরপর তারা সরেজমিনে ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর, কম্প্রেসর, টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, মোবাইল ফোন ইত্যাদি পণ্যের উৎপাদন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন।
ঢাকা/অগাস্টিন সুজন/সাইফ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন