লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে চালু হচ্ছে বাংলা টাকা বন্ড

বাংলাদেশে প্রবাসীদের বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ মুস্তফা কামাল বলেছেন, প্রবাসীদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। বিভিন্ন বন্ডের মাধ্যমে প্রবাসীদের বিনিয়োগে সুযোগ রয়েছে। আগামী মাসে লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে বাংলা টাকা বন্ড চালু করা হচ্ছে, যা প্রবাসীদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বড় ধরনের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলন শেষে দেশে ফেরার পথে বৃহস্পতিবার লন্ডনে যাত্রাবিরতি করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত আলোচনা সভায় যোগ দেন। ‘ইনসেটিভাইজিং রেমিট্যান্স ফ্রম দি ইউকে : মাইলস্টোন ইনিশিয়েটিভস অব প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে উল্লিখিত কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রায় ১৩০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। এরমধ্যে ৪০টির কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রবাসীরা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি লাভবান হতে পারেন। বাংলাদেশে সরাসরি বিনিয়োগ বা এফডিআই ও বিদেশি সহায়তা বাড়ছে। গত বছরের হিসাবে আমাদের এফডিআই ৪০ শতাংশ বেড়েছে। শতকরা হিসাবে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। অর্থাৎ বিনিয়োগ আকর্ষণে এগিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে সরাসরি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আগে ফিজিক্যাল ও নন-ফিজিক্যাল অবকাঠামোর দুর্বলতার কারণে আমারা পিছিয়ে ছিলাম। কিন্তু এখন আমাদের অবকাঠামো মোটামুটিভাবে তৈরি হয়েছে। তাই এখন আর আমরা পিছিয়ে থাকব না।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন মেগা প্রকল্পসহ অন্যান্য প্রকল্পের মাধ্যমে যেভাবে আমাদের অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে তাতে আমাদের সম্ভাবনা আরো বাড়ছে। বিনিয়োগের জন্য বিদেশিদেরও আগ্রহের শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক অনুযায়ী চলতি বছরে বিশ্বের সব দেশের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হবে বাংলাদেশে। ডুয়িং বিজনেস সূচক-২০২০ এ বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে। এবার বাংলাদেশ আট ধাপ এগিয়েছে। এ সূচকে সবচেয়ে ভালো করা ২০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম ঘোষণা দেন যে, ২০২০ সাল থেকে প্রতি বছর যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে সর্বাধিক রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সন্মাননা দেয়া হবে।

হাইকমিশনার বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ প্রতি বছরই বাড়ছে। বৈধ পথে রেমিটেন্স আরো বাড়ানোর জন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাস আয়ের ওপর ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আশা করি, প্রণোদনা দেয়ার ফলে রেমিট্যান্সের পরিমাণ আগামী বছর রেকর্ড পরিমাণ বাড়বে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে রেমিট্যান্স হাউজের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়ে প্রবাস আয়ের ওপর প্রণোদনা দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তারা আশা প্রকাশ করেন, এই প্রণোদনার জন্য বৈধ পথে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ বাড়বে। তারা এক্ষেত্রে সরকার গৃহীত পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রচার জোরদার করার পরামর্শ দেন।

 

ঢাকা/হাসনাত/রফিক