লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের খবর গুজব
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখে সেই প্রতিষ্ঠান অবসায়ন হলে সব আমানতকারী মাত্র এক লাখ টাকা পাবে বলে যে খবর ছড়িয়েছে, সেটি গুজব বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বুধবার বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফরেন্স হলে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম এ কথা জানান। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর গ্রাহকের আমানতের সুরক্ষা দিতে আমানত বীমা আইন নিয়ে সাধারণ মানুষের বিভ্রান্তি দূর করতে এ সংবাদ সম্মেলন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এই সময়ে তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এতে আগামীতে কোনো ব্যাংক অবসায়ন হবে না।
মুখপাত্র জানান, কোনো ব্যাংক যদি বন্ধ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে মোট ১৮০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক আমানতকারীকে এক লাখ টাকা দিয়ে দেবে। প্রথম ৯০ দিনের মধ্যে আমানতকারীরা আবেদন করবেন। পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে টাকা বুঝিয়ে দেয়া হবে। বাকি টাকা পরবর্তী সময়ে বন্ধ হওয়া ব্যাংকের সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীকে পরিশোধ করা হবে। এ বিষয়ে শঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ মুখপাত্র।
সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিলে আট হাজার ৭৪৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা জমা হয়েছে। কোনো ব্যাংক বন্ধ হলে আমানতকারীদের প্রথম তিন মাসের মধ্যে এক লাখ টাকা পরিশোধ করা হবে। এক লাখ টাকা দিলেই ৯২ শতাংশ আমানতকারী টাকা পরিশোধ হয়ে যাবে বলে জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক। সময়ে সময়ে এই টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়। এর পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করার প্রক্রিয়া চলছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, এর আগে শুধু ব্যাংকের আমানতকারীরা বিমা সুবিধা পেতেন। কিন্তু নতুন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আমানতকারীদের এখানে যুক্ত করা হয়েছে। এখন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব আমানতকারী এই সুবিধা পাবেন। প্রথমে ব্যক্তি গ্রাহকের টাকা এবং পর্যায়ক্রমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। সবশেষে টাকা পাবেন প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আর কোনো ব্যাংক বন্ধ হবে না বলেও আশ্বাস দেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র।
সিরাজুল ইসলাম আরো বলেন, মাত্র ৮ শতাংশ আমানতকারী হিসাব বিমাকৃত নয়, অর্থাৎ ৮ শতাংশ আমানতকারী ঝুঁকিতে আছেন। এছাড়া বাকি ৯২ শতাংশ আমানতকারীর হিসাব সম্পূর্ণ বিমাকৃত।
তিনি বলেন, ১৯৮৪ সালে আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় যে আইন করা হয় সেখানে আমানতের অর্থ ফেরত দেওয়ার পরিমাণ ছিল ৬০ হাজার টাকা। পরবর্তী সময়ে ২০০০ সালে আমানত বিমা আইন প্রবর্তন করে এক লাখ টাকা করা হয়। বর্তমানে এই আইনে আমানতকারীরা এক লাখ টাকা পর্যন্ত পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে। তবে সংশোধিত আইনে এটি বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কোনো ব্যাংক অবসায়নের ঘোষণা দিলে অনধিক ১৮০ দিনের মধ্যে আমানতকারীদেরকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিল’ থেকে পরিশোধ করা হবে।
ঢাকা/হাসান/সাইফ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন