ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

‘ওয়ালটন পুঁজিবাজারে ভালো প্রভাব রাখতে পারে’

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০৬, ১২ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘ওয়ালটন পুঁজিবাজারে ভালো প্রভাব রাখতে পারে’

ওয়ালটন পুঁজিবাজারে ভালো প্রভাব রাখতে পারে বলে মনে করছেন দেশের অর্থনীতিবিদরা। দেশে বড় বিনিয়োগের অন্যতম ক্ষেত্র পুঁজিবাজার। দেশের জাতীয় সঞ্চয় যেভাবে বাড়ছে, বেসরকারি বিনিয়োগ সেভাবে বাড়ছে না। পুঁজিবাজারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এখানে বেসরকারিভাবে বড় বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। যে কারণে ওয়ালটনের মতো দেশের বড় প্রতিষ্ঠানগুলো যত বেশি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করবে, তত বাড়বে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সম্ভাবনা।

সক্ষম পুঁজিবাজার তৈরিতে বিশ্লেষকদের এমন মতামত পাওয়া গেছে। তারা বলছেন, দেশীয় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকাভুক্তিতে পুঁজিবাজার যেমন সমৃদ্ধ হবে, তেমনি বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও অস্থিরতা কেটে স্বস্তি ফিরে আসবে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে এলে আস্থার সংকট কাটে। ইপিএস বা মোট লাভের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘পুঁজিবাজার থেকে লাভ পেতে হলে, ভালো কোম্পানিকে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করতে হবে। বড় কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে হবে।গত ১০ বছরের মধ্যে কোনো ভালো কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি। ২০০৯ সালে সর্বশেষ একটি বহুজাতিক কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়। এরপর আর কোনো কোম্পানির আগ্রহ দেখছি না। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগী হতে হবে। আরো পরিষ্কার করে বললে- অর্থমন্ত্রীকেই উদ্যোগ নিতে হবে।’

বড় কোম্পানিগুলো বাজারে এলে কী ধরনের সুফল মিলবে- এমন এক প্রশ্নের জবাবে আবু আহমেদ বলেন, ‘সুফল অনেক। সবচেয়ে বড় বিষয়ে হলো, বাজারের আকার বাড়বে। ফলে গ্যাম্বলিং সম্ভব হবে না। হাই রিটার্ন অব ইক্যুইটি (আরওই) আসবে। বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন।’

বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে আবু আহমেদ বলেন, ‘মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর হাতে দেশের মোট ব্যবসার প্রায় ৫০ শতাংশ থাকে। কিন্তু তারা পুঁজিবাজারের বাইরে। এদের জাতীয় অর্থনীতিতে সম্পৃক্ত করতে হবে। এজন্য তাদের পুঁজিবাজারে আনতে হবে। এর বাইরে দেশেও অনেক বড় কোম্পানি আছে। শেয়ার অনুপাত ঠিক রেখে এবং নীতিমালা মোতাবেক এগুলোকেও পুঁজিবাজারে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলেই দেশ উপকৃত হবে। বর্তমানে অনেক ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি, ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানি ভালো করছে। তাদের পুঁজিবাজারে আনতে হবে। যেমন: হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ইনসেপ্টা, ওয়ালটন পুঁজিবাজারে ভালো প্রভাব রাখতে পারে।’

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, ‘যেসব কোম্পানির গুড ম্যানেজমেন্ট আছে, পেইড আপ ক্যাপিটাল ভালো, ভালো লভ্যাংশ দিতে পারে- এ ধরনের বড় বা ভালো কোম্পানিকে অবশ্যই পুঁজিবাজারে আনতে হবে। এরা পুঁজিবাজারের খুঁটি হিসেবে কাজ করে। তাহলে পুঁজিবাজারের শক্তি বাড়বে।’

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক এবং ডিএসই ব্রোকারেজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘বড় কোম্পানি বলতে দেশীয় ভালো কোম্পানি এবং মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই পুঁজিবাজারে আনা জরুরি। যদি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর কথা বলি, তারা দেশে ব্যবসা করছে, লভ্যাংশ হিসেবে দেশের বড় একটি অঙ্ক তারা নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু জনসাধারণের সঙ্গে তাদের কোনো ইনভল্‌বমেন্ট থাকছে না।’

আহমেদ রশিদ লালী উদাহরণ টেনে বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশে বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত। আমাদের দেশে উদ্যোগ নেওয়া হলেও তারা এখনো পুঁজিবাজারে অনুপস্থিত। অন্যদিকে দেশীয় বড় কোম্পানিগুলোর কথা যদি বলি, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, পিএইচপি গ্রুপ, ওয়ালটন- এরা বড় এবং ভালো কোম্পানি। এরাও পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করতে পারে।’

 

ঢাকা/হাসান/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়