ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

করোনায় শেয়ারবাজারে আগ্রহ কমছে বিনিয়োগকারীদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪০, ২৫ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
করোনায় শেয়ারবাজারে আগ্রহ কমছে বিনিয়োগকারীদের

সারা বিশ্বের মতোই দেশের শেয়ারবাজারেও করোনার প্রভাব পড়েছে। ফলে অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের চেয়ে শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রির চাপ বেড়েছে। ফলে লেনদেন কমে গেছে। বিশেষ করে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নতুন করে আর বিনিয়োগে যাচ্ছে না। মূলত করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ছোট-বড় বিনিয়োগকারীরা পুঁজি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন বলে মনে করছেন সাধারণ বিনিয়োগকারী ও বাজার সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, দীর্ঘ মেয়াদি করোনার প্রভাব অব্যাহত থাকলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি কেমন হবে, সে বিষয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।

সম্প্রতি পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতন ঠেকাতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-কে লেনদেন বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছে বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ’।  

বুধবার (২৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় লেনদেন শুরুর পর সকাল ১১টা পর্যন্ত ১০০টির বেশি কোম্পানির কোনো কেনা বা বেচার আদেশ দেখা যায়নি। এমনকি লেনদেন শেষেও ওই কোম্পানিগুলোর মধ্যে অনেক কোম্পানির লেনদেন হয়নি। ফলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছে, বিনিয়োগে আগ্রহ নেই বিনিয়োগকারীদের।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত বছরের ১ ডিসেম্বর লেনদেন ছিল ৫২১ কোটি টাকা। এরপর থেকে দেড় মাসের বেশি সময়ের মধ্যে ডিএসইতে লেনদেন আর ৫০০ কোটি টাকা হয়নি। এরপর চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি ৫১৪ কোটি টাকায় লেনেদেন হয়। ১২ ফেব্রুয়ারি লেনদেন হয় ৬৫৭ কোটি টাকা। পরবর্তী সময়ে প্রত্যেকটি তফসিলি ব্যাংকের বিনিয়োগের ঘোষণার পর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ডিএসইতে ১ হাজার ২১ কোটি টাকার লেনদেন হয়। তবে, এরপর থেকেই লেনদেন কমতে শুরু করে। এরফলে গত ২২ মার্চ ১৪৫ কোটি টাকায় লেনদেন চলে আসে। হঠাৎ করেই লেনদের অস্বাভাবিক হারে কমে যাওয়ার জন্য করোনাকে দায়ী করছেন বিনিয়োগকারীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের প্রভাবে প্রত্যেকটি মানুষের জীবনের নিরাপত্তা হুমকির মুখে রয়েছে। তবে সরকার ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ ছুটি অব্যাহত রাখার জন্য সরকারের কাছে বিশেষ অনেুরোধ জানাচ্ছি।’

কাজী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বর্তমানে অন্যান্য স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ কমে গেছে। শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর অব্যাহত দরপতন রোধে সম্প্রতি বিএসইসি সার্কিট ব্রোকারের সীমায় পরিবর্তন এনেছে। ফলে শেয়ার দর ব্যাপক হারে পতন হওয়ার সুযোগ নেই। তারপরও পুঁজিবাজারি গতি ফিরে পাচ্ছে না। এর অন্যতম প্রধান কারণ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ। ফলে বিনিয়োগকারীরা পুঁজি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।’

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘করোনা প্রভাবের কারণে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নতুন করে আর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে যাচ্ছে না। বরং তারা হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে টাকা হাতে রেখে সাইডলাইনে অবস্থান করছেন। তারা ভাবছেন, করোনা প্রভাব স্বাভাবিক হলে পুনরায় বিনিয়োগ করবেন। অনেকেই ভাবছেন করোনা প্রভাব দীর্ঘ মেয়াদি হয়ে যেতে পারে। আগামী তিন-চার মাসেরও মধ্যে করোনার প্রভাব স্বাভাবিক হবে কি না, সে আতঙ্কে আছেন বিনিয়োগকারীরা। বিশেষ করে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের এ মুহূর্তে বাজারকে সার্পোট দেওয়ার সক্ষমতা থাকলেও, তারা সাইড লাইনে অবস্থান করছে।’

এ বিষয়ে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘শেয়ার বাজারে করোনা ভাইরাসের কিছুটা প্রভাব পড়েছে। এর কারণে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রির চাপ বেশি। বর্তমান এ পরিস্থিতিতে অনেক বিনিয়োগকারী আতঙ্কে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। মূলত তারা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না। আবার অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে এ পরিস্থিতিতেও শেয়ার কিনছেন।’ তবে, এই পরিস্থিতিতে শেয়ার কেনার চেয়ে বেচার পরিমাণ বেশি রয়েছে বলেও তিনি জানান।


ঢাকা/এনটি/এনই 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়