করোনা মোকাবিলায় আইএসডিবি সহায়তা দেবে: অর্থমন্ত্রী

করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি ও মানবজাতির ওপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইএসডিবি) প্রেসিডেন্ট ড. বন্দর এম এইচ হাজ্জাজের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এসময় তারা কোভিড-১৯ মোকাবিলায় পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

শনিবার (২৫ এপ্রিল) এক টেলিকনফারেন্সে তারা বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন। এসময় তারা করোনার প্রভাবে মানবজাতি ও অর্থনীতিতে যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে, তা নিয়ে আলোচনা করেন বলে অর্থমন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

অর্থমন্ত্রী আইএসডিবি সদস্য দেশগুলির জন্য কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ২.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের যে কৌশলগত প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে তার জন্য আইএসডিবির প্রেসিডেন্টেকে ধন্যবাদ জানান। তিনি তার গতিশীল নেতৃত্ব ও ভূমিকার প্রশংসা করেন। আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে আইএসডিবির এ পদক্ষেপ সদস্য দেশগুলোর মানুষ ও অর্থনীতির ওপর কোভিড-১৯ এর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

বাংলাদেশ আইএসডিবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ১৯৭৪ সাল থেকে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বস্ত অংশীদার। বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আইএসডিবির সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষে ২০১৮ সালে ঢাকায় আঞ্চলিক কেন্দ্র চালু করেছে। আইএসডিবির আঞ্চলিক হাবের উপস্থিতিতে সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে অর্থমন্ত্রী আশাপ্রকাশ করেন। বাংলাদেশে বর্তমানে বিভিন্ন খাতে আইএসডিবি'র সহায়তায় মোট ১১টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হার সন্তোষজনক।

অর্থমন্ত্রী ও আইএসডিবি প্রেসিডেন্টের মধ্যে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশের নেওয়া পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এসময় অর্থমন্ত্রী বলেন, লকডাউন ও গণছুটির কারণে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নেমে এসেছে স্থবিরতা। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষ ও অর্থনীতির জন্য ১১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, যা জিডিপির ৩.৫ শতাংশ।

তিনি বলেন, এ প্যাকেজের অর্থ ব্যয়ে জনসাধারণের ব্যয় বৃদ্ধি, সামাজিক সুরক্ষা জালকে প্রশস্ত করা এবং আর্থিক সরবরাহ বাড়ানোর ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হয়েছে।  ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প, পরিষেবা খাত এবং কুটির শিল্পগুলোকে সুরক্ষার জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে কার্যনির্বাহী মূলধনের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ রকম পরিস্থিতি মোকাবিলায় অর্থসংস্থান আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, এ মুহূর্ত সবচেয়ে জরুরি মানুষের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত স্বল্প আয়ের মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।

আইএসডিবির প্রেসিডেন্ট ড. বন্দর এম এইচ হাজ্জার বাংলাদেশের বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত সময়োপযোগী আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের জন্য তার প্রশংসা করে ধন্যবাদ জানান।

আইএসডিবির প্রেসিডেন্ট বলেন, আপনার মাধ্যমে আমি আশ্বস্থ করতে চাই যে আইএসডিবি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের সঙ্গে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ।

আইএসডিবির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনাকালে অর্থমন্ত্রী তিনটি ক্ষেত্রে সংস্থাটির সহায়তা কামনা করেন। তিনি খাদ্য নিরাপত্তা ও চিকিৎসা খাত এবং কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়ন ও যান্ত্রিকীকরণে সহযোগিতা চান।

আইএসডিবির প্রেসিডেন্ট ওই তিনটি ক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং বলেন, আইএসডিবি  বাংলাদেশ টিমের সঙ্গে বসে অর্থায়ন ও টাইমলাইন আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করে নেবে।


ঢাকা/হাসনাত/সাজেদ/এসএম