ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

৯ ব্যাংকের মধ্যে মুনাফায় শীর্ষে ডাচ-বাংলা

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২১, ২২ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
৯ ব্যাংকের মধ্যে মুনাফায় শীর্ষে ডাচ-বাংলা

সারাদেশে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে নয়টি ব্যাংক ২০১৯ সালের সমাপ্ত হিসাব বছরের নীরিক্ষিত আর্থিক হিসাব বিবরণী প্রকাশ করেছে।

পাশাপাশি ব্যাংকগুলো বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশও ঘোষণা করেছে। আর্থিক হিসাব প্রকাশ করা ব্যাংকগুলো মধ্যে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) শীর্ষে রয়েছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক।

করোনার প্রভাবে গত ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বাদবাকি ২১টি ব্যাংক বোর্ড সভা আয়োজন করতে পারেনি। ফলে ব্যাংকগুলোর নীরিক্ষিত আর্থিক হিসাব বিবরণী ও কী পরিমাণ লভ্যাংশ দেওয়া হবে তা প্রকাশ পায়নি।

২০১৯ সালের সমাপ্ত হিসাব বছরে নয়টি ব্যাংকের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে ইস্টার্ন ব্যাংক, তৃতীয় অবস্থানে উত্তরা ব্যাংক, চতুর্থ অবস্থানে ব্র্যাক ব্যাংক এবং পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক।

ব্যাংকগুলো অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ভালো পরিমাণ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। তবে করোনাভাইরাসের প্রভাবে সৃষ্ট মন্দা কাটিয়ে উঠতে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ বিতরণের ক্ষেত্রে সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এর ফলে ব্যাংকগুলো ২০১৯ সালের জন্য সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদ এবং নগদ ও বোনাস মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিতে পারবে না। এতে ব্যাংকগুলো মুনাফা করার পরেও ভালো লভ্যাংশ দেবে না। এতে প্রতাশিত লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে অভিযোগ বিনিয়োগকারীদের।

তথ্য মতে, ২০১৯ সালের সমাপ্ত হিসাব বছর শেষে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৮.৬৮ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ২১.০১ টাকা। সে হিসেবে ২০১৯ সালে ব্যাংকটির ইপিএস কমেছে। এদিকে ব্যাংকটি ২০১৯ সালের সমাপ্ত হিসাব বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের জন্য ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়েছে।

ইস্টার্ন ব্যাংকের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৪.৯২ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ৪.২২ টাকা। সে হিসেবে ২০১৯ সালে ব্যাংকটির ইপিএস বেড়েছে। এদিকে ব্যাংকটি ২০১৯ সালের সমাপ্ত হিসাব বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়েছে।

উত্তরা ব্যাংকের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৪.৫৯ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ৪.১৭ টাকা। সে হিসেবে ২০১৯ সালে ব্যাংকটির ইপিএস বেড়েছে। এদিকে ব্যাংকটি ২০১৯ সালের সমাপ্ত হিসাব বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের জন্য উত্তরা ব্যাংক ১০ শতাংশ নগদ ও ২৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়েছে।

ব্র্যাক ব্যাংকের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৪.১০ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ৫.১৭ টাকা। সে হিসেবে ২০১৯ সালে ব্যাংকটির ইপিএস কমেছে। এদিকে ব্যাংকটি ২০১৯ সালের সমাপ্ত হিসাব বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের জন্য ৭.৫ শতাংশ নগদ ও ৭.৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে।

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৩.০১ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ৩.৫৯ টাকা। সে হিসেবে ২০১৯ সালে ব্যাংকটির ইপিএস কমেছে। এদিকে ব্যাংকটি ২০১৯ সালের সমাপ্ত হিসাব বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১১ শতাংশ নগদ ও পাঁচ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়েছে।

এনসিসি ব্যাংকের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ২.৩০ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ২.০৭ টাকা।

ব্যাংক এশিয়ার ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১.৬৮ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ২.০১ টাকা।

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১.৫৭ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ১.৪৪ টাকা।

প্রাইম ব্যাংকের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১.৪৭ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ১.৯৯ টাকা।

এ বিষয়ে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ মেসবাহুল আলম রাইজিংবিডিকে বলেন, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন আগে ছিল ২০০ কোটি টাকা। এখন সেটা হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে ব্যাকটি ১৫০ শতাংশ বোনাস লভ‌্যাংশ দিয়েছে। ফলে শেয়ার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ইপিএস কমে গেছে। তবে ব্যাংকটির কর পরবর্তী নিট মুনাফা বেড়েছে। ২০১৯ সালে ১৪ কোটি টাকা বেড়ে কর পরবর্তী নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৪৩৪ কোটি টাকা।

এনসিসি ব্যাংকের কোম্পানি সচিব মো. মনিরুল আলম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘২০১৯ সালে ব্যবসা ভালো হয়েছিল। তাই ২০১৮ সালের তুলনায় এনসিসি ব্যাংক ভালো মুনাফা করেছে। তবে করোনার কারণে এবার ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। এর প্রভার মুনাফায় পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ভালো লভ্যাংশ পাওয়ার আশায় অনেক বিনিয়োগকারী বিভিন্ন ব্যাংকে বিনিয়োগ করেছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সিদ্ধান্তের ফলে এখন ব্যাংকগুলো মুনাফা করার পরেও ভালো লভ্যাংশ দেবে না। এতে প্রতাশিত লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বিনিয়োগকারীরা।’

 

ঢাকা/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়