ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

বাজারে ডিম মুরগির দাম বেড়েছে, কমেছে চালের

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:০৭, ২৯ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
বাজারে ডিম মুরগির দাম বেড়েছে, কমেছে চালের

ঈদের পর সপ্তাহ শেষ হতে না হতেই বাজারে বেড়েছে মুরগি, ডিমসহ বেশ কিছু নিত্য পণ্যের দাম। তবে কমতে শুরু করেছে চালের দাম।

দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকার দাম বেড়েছে। আর ডিমে (প্রতি ডজনে) বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। সবজি আগে যে দামে বিক্রি হয়েছে, তাও দ্বিগুণে দাঁড়িয়েছে।

শুক্রবার (২৯ মে) রাজধানীর যাত্রবাড়ী রায়েরবাগ দয়াগঞ্জ শনিরআখড়ার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে- করলা ৪০-৫৫ টাকা, বরবটি ৪৫-৬০ টাকা, ঝিঙা ৫০-৬০ টাকা, পটল ৪০-৫০ টাকা, কচুর লতি ৪৫-৬৫ টাকা, গাজর ৮০-১০০ টাকা, শশা ৪০-৬০ টাকা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে।  এসব সবজি গত ১০ দিন আগে অর্ধেক দামে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি বেগুন (প্রকারভেদে) ৫০ থেকে ৬০ টাকা,  কাঁচা মরিচ ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি টমেটো ৫০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা,  ধুন্দুল ৪০ থেকে ৫৫ টাকা এবং আলু ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আর শাক প্রতি আঁটি ২০ থেকে ৩০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৪০ থেকে ৬০ টাকা, প্রতি হালি লেবু ২০ থেকে ৪০ টাকা  (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে রায়েরবাগ বাজারের ব্যবসায়ী মনির হোসেন জানান, আড়ৎ থেকে বলা হচ্ছে কৃষিপণ্যের গাড়ি কম আসায় দাম বেড়েছে। এ কারণে সবজি কেজিতে ৬ থেকে ১৫ টাকা, আবার কোনটির দাম দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

যাত্রাবাড়ীর কাঁচামালের আড়ৎদার হাবিব হোসেন জানালেন, বন্যায় শাক-সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। চাহিদার তুলনায় বাজারে পণ্য কম থাকায় দাম বেড়েছে। আগামী সাত আট দিনের মধ্যে দাম কমে যাবে।

গত ১৫ ধরে ব্রয়লার মুরগির দামও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ৮০ টাকা ডজনের ডিম এখন ১০০ থেকে ১১০ টাকা। সাদা ব্রয়লার ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা করে বিক্রি হলেও ঈদের দুদিন আগ থেকে এ সপ্তাহে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগি ২২৫ টাকা থেকে ২৫০ টাকায়, কক (সোনালী) ২৪০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগির কেজি ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংস রোজার শুরুর পর থেকে (হাড়সহ) ৬০০, গরুর মাংস (হাড় ছাড়া) ৬৫০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

যাত্রাবাড়ীর বাজারে মুরগি ব্যবসায়ী সোবাহান আলী জানান, রোজার আগে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। রমজানের ২০ রোজার পর সাপ্লাই কমে যাওয়ার কারণে দিন দিন দাম বাড়ছে।

অন্যদিকে ১৫ দিন আগে থেকে রাজধানীর বাজারগুলোতে কমতে শুরু করেছে চালের দাম। যাত্রাবাড়ীতে চালের আড়তে গিয়ে দেখা যায়, নতুন মিনিকেট চাল ৪২ টাকা থেকে ৪৯ টাকায় (মানভেদে) বিক্রি হচ্ছে, যা ১০ দিন আগেও ছিল ৫৪ থেকে ৫৮ টাকা। আর পুরনো মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৪৯-৫২ টাকা কেজি দরে।  নাজিরশাইল প্রতিকেজি ৪৫-৫০ টাকায় (মানভেদে), যা গত ১০ দিন আগেও ৫২ থেকে থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বিআর আটাশ বিক্রি হচ্ছে ৩৬-৪৩ টাকা (মানভেদে) কেজি দরে।

এদিকে দাম বেড়েছে চায়না আদারও। কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায়। এক  সপ্তাহ আগেও আদার দাম ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। প্রতি কেজি চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়, যা এক সপ্তাহে আগেও ছিল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা।

এছাড়া পেঁয়াজ চিনি সয়াবিন তেলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা, চিনি ৬২ থেকে ৭০ টাকা, সয়াবিন তেল (খোলা) ৯২ থেকে ৯৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ।

এদিকে কমেছে ছোলার দাম। ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭৫ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। ডাবলি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, যা আগে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। অ্যাঙ্কর বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়, যা আগে ছিল ৫৫ টাকা থেকে ৬৫ টাকা। দেশি মসুর ডাল (চিকন) বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকায়, যা আগে ছিল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। মোটা মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮৫ টাকা, যা আগে ছিল ৭৫ থেকে ৯০ টাকা। ছোলার ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, যা আগে ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা।

সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বংলাদেশের (টিসিবি) ২৮ মে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ঈদের পর  ব্রয়লার মুরগি, আমদানি করা পেঁয়াজ, দেশি রসুন, আলু, ফার্মের ডিম, আদার (চায়না) দাম বেড়েছে। দাম কমেছে ছোলা, এলাচ, আমদানি করা রসুনের।  

রহিম মিয়া নামে রায়েরবাগ বাজারের একজন ক্রেতা জানান, বাজারে চালসহ কয়েকটি পণ্যের দাম কমেছে। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে। গরীব মানুষ আমিষের চাহিদা পূরণে ব্রয়লার মুরগি ও ডিম খায়। এ দুটির দাম গত ১০ দিন আগ থেকে বেড়েছে। সরকারের উচিত অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের  উপপরিচালক আতিয়া সুলতানা বলেন, ‘রমজানের আগ থেকে নিয়মিত বাজার তদারকি করা হচ্ছে। একারণে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে ছিল। এখনও বাজার মনিটরিং চলছে। পাইকারি-খুচরা বাজারে দামে অসঙ্গতি দেখা দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'


ঢাকা/আসাদ/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়