ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বাস্তবায়নযোগ্য বাজেটের পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের

নিয়াজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৮, ২৬ এপ্রিল ২০১৪   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাস্তবায়নযোগ্য বাজেটের পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের

ড. মির্জা আজিজুল ইসলাম, ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, ড. কাজী খলিকুজ্জামান, ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল : আগামী ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ‘রূপকল্প বাজেট’ না করে তা বাস্তবায়নযোগ্য করার পরামর্শ দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা।

তারা বলেন, বাজেটের আকার দুই লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা হলে বাস্তবসম্মত হবে। আর যদি দুই লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা হয়, তবে তা কাগজে বাজেটে পরিণত হবে বলে মনে করেন তারা।

শনিবার মতিঝিলে ঢাকা চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) মিলনায়তনে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক রিপোর্টারস ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘বাজেটে প্রতিশ্রুতি ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ সব পরামর্শ দেন আলোচকরা।

সভায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, আগামী জাতীয় বাজেটের আকার দুই লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা হলে বাস্তবসম্মত হবে। যদি দুই লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা হয়, তবে তা কাগজে বাজেটে পরিণত হবে। যেটি আগের বছরের বাজেটেও হয়েছে।

গত নয় মাসে এডিপির ২৮ হাজার ৪২৮ কোটি টাকার মতো বাস্তবায়ন হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘সে হিসেবে আমি বলবো কোনো ভাবেই ৬৬ হাজার কোটি টাকা থেকে ৬৭ হাজার কোটি টাকার ওপরে এডিপি হওয়া উচিত না।’
সাবেক এ অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন বাজেটের বেশিরভাগ অর্থ ব্যয় হচ্ছে জনপ্রশাসন খাতে। এটি কতোটা উৎপাদনমুখী সেটি বিবেচনা করতে হবে। এছাড়া প্রতিরক্ষা খাতের ব্যয়ের দিকটিতেও নজর দিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামী ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ‘রূপকল্প বাজেট’ না করে তা কার্যকর করা উচিত। বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, সুষম বণ্টন ও দারিদ্র্য বিমোচন- এই চারটি বিষয়ের ওপর প্রাধান্য দিয়ে বাজেট প্রণয়ন করা জরুরি। তাহলে বাজেট জনগণের কল্যাণে আসবে, অন্যথায় সাধারণ জনগণের তা কাজে আসবে না।

এডিবি প্রসঙ্গে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ১২০০ থেকে ১৩০০ প্রকল্পের কথা বাজেটে উল্লেখ না করে নির্দিষ্ট কিছু প্রকল্প রাখা উচিত। অনেক পরিকল্পনা নেওয়ার ফলে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। তাই নির্ধারিত কিছু প্রকল্প রেখে তা বাস্তবায়ন করার জন্য কাজ করতে হবে। বাজেট বাস্তবায়ন করার জন্য প্রত্যক্ষ কর আরোপ করার কথাও বলেন তিনি।

জনগনের উপকারে আসে এমন বাজেট প্রণয়নের তাগিদ দিয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ বলেন, ‘আমাদের দেশে অর্থবছর শুরু হয় জুলাই থেকে। তখন বর্ষাকাল। ফলে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাধাগ্রস্ত হয়। তাই মার্চে এ অর্থবছর গুরু হওয়া প্রয়োজন।’

অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ বলেন, বাজেটের দুটি দিক। একটি অর্থ সংগ্রহের দিক। আর একটি অর্থ ব্যয়ের দিক। বাজেটে শিক্ষাখাতে ব্যয় বাড়ানো, প্রবৃদ্ধির দিকে নজর দেওয়া, ছোট-বড় সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের দিকে নজর দিয়ে সহায়তা দেওয়া, খাদ্যখাতের মূল্যস্ফীতি কমানো এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আলোচনা সভায় বেসকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি’র ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদ ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া দরকার। উন্নয়নের জন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর যে সংস্কার দরকার ছিলো তা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চলছে তাতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।

সভায় ইআরএফ’র সভাপতি সুলতান মাহমুদের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দীন আহমেদ, ডিসিসিআই সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সাবেক এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল আওয়াল মিন্টু ও ডিএসইর সাবেক সভাপতি মো. রকিবুর রহমানসহ অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।

 

রাইজিংবিডি/নিয়াজ/সন্তোষ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়