ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বিজিএপিএমইএকে ইউপি ক্ষমতা দিতে সুপারিশ

হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৫, ১৫ মার্চ ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিজিএপিএমইএকে ইউপি ক্ষমতা দিতে সুপারিশ

বিজিএপিএমইএ লোগো

বিশেষ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ) তৈরি পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংগঠনের মত ইউটিলাইজেশন পারমিশনের (ইউপি) সুযোগ চেয়েছে। এ বিষয়ে সংগঠনটির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করায় তিনি এ ক্ষমতা দেওয়ার সুপারিশ করেন ।

সূত্র জানায়, ইউপি’র আওতায় রপ্তানিযোগ্য তৈরি পোশাক শিল্পে ব্যবহারের জন্য আমদানিকৃত কাঁচামাল শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়া হয়। বিজিএপিএমইএ’র দাবি তারাও তৈরি পোশাক শিল্পে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন এক্সসরিজ এখন দেশেই তৈরি করছে। এর ফলে দেশের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। কিন্তু এ খাতটি  ইউটিলাইজেশন পারমিশনের (ইউপি) সুযোগ বঞ্চিত।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) ও বাংলাদেশ নীট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এই সুবিধা পাচ্ছে। বিজেএমইএ ও বিকেএমইএ যে শর্তে ইউপি ইস্যুর ক্ষমতা ভোগ করছে বিজিএপিএমইএ একই শর্তে তা চাইছে।

বিজিএপিএমইএ’র চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদকে একটি ডি.ও লেটার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান। এতে তিনি বলেছেন, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে যে শর্তে ইউপি প্রদানের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, অনুরূপ শর্তে বিজিএপিএমইএকে ক্ষমতা দেওয়া যেতে পারে। লিংকেজ শিল্প বাড়াবার জন্য সহায়ক পদক্ষেপ নেওয়া যুক্তিসঙ্গত, তাতে বস্ত্রখাতে নিট রপ্তানি বাড়বে। বিশ্বমন্দার কারণে তৈরি পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধির হার কমতে পারে, সংযোগ শিল্পের পরিমাণ বাড়ালে রপ্তানি আয় বাড়বে।
 
প্রত্যেক আইটেম অথবা অল্পসংখ্যক আইটেম-ভিত্তিক অ্যাসোসিয়েশনকে ইউপি প্রদানের ক্ষমতা দিলে শুল্ক কর্তৃপক্ষের জন্য তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ অসুবিধা হবে। সব অ্যাসোসিয়েশনকে একত্র করে এ সুবিধা দেওয়া যেতে পারে অথবা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা সাপেক্ষে একাধিক প্রস্তুতকারক বা অ্যাসোসিয়েশনকে একত্র করে প্রার্থিত সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। তবে, প্রত্যেক অ্যাসোসিয়েশনে পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য থাকতে হবে এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রপ্তানি পণ্য থাকতে হবে।

মশিউর রহমান তার মতামতে উল্লেখ করেছেন, তৈরি পোশাকের তুলনায় এক্সসরিজ রপ্তানির পরিমাণ ও রপ্তানি আয় অনেক কম। উভয় খাতের বিনিয়োগকারীদের সততা তুলনীয়/অভিন্ন মনে করলে তাদের প্রতি সন্মান দেখানো হবে।
 
মশিউর রহমান বলেছেন, প্রাপ্যতা নির্ধারণে অতিমাত্রায় ঋজুতা অনুসরণ করলে, শিল্প সম্প্রসারণ বাধাগ্রস্ত হবে। উদ্যোক্তারা সাধারণত: স্বল্প পরিসরে শিল্প প্রতিষ্ঠা করে; বাজারে চাহিদা ও ঋণ-প্রাপ্যতা বিচার করে শিল্প প্রতিষ্ঠান সম্প্রসারণ করে। প্রাপ্যতা স্থবির করে রাখলে অথবা পুন:নির্ধারনে অতিমাত্রায় কালক্ষেপণ করলে, উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয়, রপ্তানি বৃদ্ধি গতি হারায়।
 
ডিও পত্রে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ‘কাঁচামাল ও পূর্ণাঙ্গ তৈরি পণ্যের মধ্যে শুল্ক-করের পার্থক্য বেশি হলে, বাজারে বিক্রয়ের প্রবণতা বাড়ে। কাঁচামাল ও পূর্ণাঙ্গ তৈরি পণ্যের পার্থক্য কমালে, ফাঁকি দিয়ে দেশের ভেতরে বিক্রির লোভ প্রশমিত হয়। উচ্চহারে প্রতিরক্ষণ কালোবাজারি আচরণের প্রবণতা সৃষ্টি করে। বেলা বেলাসা ও ম্যাক্্স কর্ডন পদ্ধতিতে প্রতিরক্ষণের পরিমাণ মাপা সম্ভব; অতিমাত্রায় সংরক্ষণ রপ্তানি-বৈরিতা সৃষ্টি করে।

চিঠিতে তিনি এক্সেসরিজ ইনস্টিটিউট নির্মাণের প্রস্তাব প্রসঙ্গে বলেছেন, বিজিএমইএ’র মত তাদের সম্পদ নেই; নিজেদের অর্থে কিছু করার সঙ্গতিও তাদের হয়ত নেই। ফলে সরকারি উদ্যোগে অথবা সরকার ও ব্যক্তিগতখাতের যৌথ উদ্যোগে ইনস্টিটিউট নির্মান করা যেতে পারে। এছাড়া টেস্টিং ল্যাবরেটরি সরকারি  ব্যয়ে করা যুক্তিসঙ্গ এবং তা সরকারের নিয়ন্ত্রনে পরিচালনা করার সুপারিশ করেছেন।

তিনি সংগঠনটির ভবন নির্মাণের জন্য শূণ্য শুল্ক হারে প্রি-ফেব্রিকেটেড বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস আমদানির সুযোগের দাবি প্রসঙ্গে বলেছেন, কোন বিশেষ ব্যবহারের জন্য শুল্ক হার তারতম্য করা নিয়মসঙ্গ ও দক্ষ শুল্ক কাঠামো নয়। অভিন্ন শুল্ক হারের ব্যতিক্রম করার যুক্তি আছে বলে মনে হয় না। তবে শুল্কহার খুব বেশি হলে সরকার পুন:নির্ধারণের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।
 
পরোক্ষভাবে রপ্তানিকারক হলেও তারা রপ্তানির সুবিধা পাচ্ছেন না। বিশেষ করে এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড থেকে বৈদেশিক মুদ্রার রেয়াতি হারে ঋণ পাচ্ছেন না তারা। সংগঠনটির সদস্যদের এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘১৯৮০-এর দশকে বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় ইডিএফ ফান্ড প্রতিষ্ঠিত হয়; এর নিয়ম-কানুন নির্ধারণের সঙ্গে আমি যুক্ত ছিলাম। এ সম্পর্কে কখনও আলোচনা হলে আমি নিয়মাবলীর অন্তর্নিহিত যুক্তি ব্যাখ্যা করতে পারবো। তার আলোকে যথাযথ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’

 

 

 

 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ মার্চ ২০১৫/হাসনাত/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়