ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ২৭ ১৪৩১

স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে আরও সহায়তা ও প্রণোদনা দেওয়ার আহ্বান

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪৩, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১  
স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে আরও সহায়তা ও প্রণোদনা দেওয়ার আহ্বান

আ হ ম মুস্তফা কামাল ও আর্মিদা সালসিয়া আলিসজাহবান

স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরও বেশি সহায়তা ও প্রণোদনা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনইএসসিএপি) নির্বাহী সচিব আর্মিদা সালসিয়া আলিসজাহবানের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভায় অর্থমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

সভায় আগামী ২০-২২ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য ‘ম্যাক্রোইকোনমিক পলিসি, প্রভার্টি রিডাকশন অ্যান্ড ফাইন্যান্সিং ফর ডেভেলপমেন্ট (এমপিএফডি)’ বৈঠকে বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের অংশ নেওয়ায় বিষয়ে আলোচনা হয়।

অর্থমন্ত্রী নীতিগত পরামর্শমূলক সেবা, সক্ষমতা বাড়ানো এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে নানাভাবে বাংলাদেশকে সাহায্য করায় ইউএনইএসসিএপি’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের জন্য সহায়তা অব্যাহত রাখতে সংস্থাটির প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সহনশীলতা ও প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যদিও সব দেশের মতো করোনা মহামারি আপাতত আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি  করেছে। তবু, আমাদের অসাধারণ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত বিচক্ষণ আর্থিক এবং মুদ্রা নীতির কারণে আমরা চ্যালেঞ্জগুলো সফলভাবে পরিচালনা করতে পেরেছি। জীবন ও জীবিকার মধ্যে দূরদর্শী ভারসাম্য নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে স্বাভাবিকতা ফিরে আসছে।’

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘২০২০ সালের অক্টোবরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্ব অর্থনীতিতে ৪.৪ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সে সময়ে অল্প কয়েকটি ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির অর্থনীতির মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের জরিপ অনুযায়ী, মহামারির প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশ শীর্ষ পাঁচটি সহনশীল অর্থনীতির মধ্যে আছে।’

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে আছে। তারপরও অপ্রত্যাশিত অভিঘাত কোভিড-১৯ সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা কমানোর লক্ষ্যে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জকারী এলডিসিগুলোকে ট্রানজিশন পরবর্তী পর্যায়ে আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং প্রণোদনা প্যাকেজ দেওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নের ২০৩০ এজেন্ডার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করার জন্য চতুর্মুখী কৌশলের নীতি বিবৃতি অনুমোদন করেছে। এখন আমরা এমন একটি উন্নয়ন পদ্ধতির অনুসরণ করছি, যা আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহনশীল এবং পরিবেশবান্ধব।’

অর্থমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন যে, ইউএনইএসসিএপি এশিয়ান হাইওয়ে, ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে এবং ড্রাই পোর্টস উদ্যোগের ক্ষেত্রে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি থাইল্যান্ড, ভারত এবং মিয়ানমারের ত্রিপক্ষীয় হাইওয়ে প্রকল্পে যোগদানের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে ইউএনইএসসিএপি-কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের অনুরোধ করেন। এর মাধ্যমে ইউএনইএসসিএপি’র আঞ্চলিক এবং আন্তঃআঞ্চলিক উদ্যোগগুলো আরও বেশি জোরালো হবে।’

বাণিজ্য সুবিধা, ডিজিটাল বাণিজ্য, সীমান্তে কাগজবিহীন বাণিজ্য, পুঁজিবাজার উন্নয়ন, পিপিপি নেটওয়ার্ক, টেকসই মাল্টিমোডাল পরিবহন, জ্বালানি নীতি এবং পরিকল্পনার ক্ষেত্রে আরও প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং ক্ষমতা বাড়ানো এবং সহায়তার জন্যও ইউএনইএসসিএপি-কে অনুরোধ করেন অর্থমন্ত্রী। পাশাপাশি, দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার উপায় হিসেবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক সুরক্ষা, লিঙ্গ সমতা এবং এসএমই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্ষমতাকেও কাজে লাগাতে পারে বলে উল্লেখ করেন।

আর্মিদা সালসিয়া আলিসজাহবান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন। করোনা মোকাবিলায় ইউএনইএসসিএপি’র সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।

হাসনাত/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়