ঢাকা     শনিবার   ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১৩ ১৪৩১

যুক্তরাজ্যে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে

নাজমুল ইসলাম ফারুক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:০৯, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩  
যুক্তরাজ্যে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে

ফাইল ফটো

যুক্তরাজ্যের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই থেকে নভেম্বর) যুক্তরাজ্যে পোশাক রপ্তানি ১৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে। একই চিত্র দেখা গেছে নন- ট্রেডিশনাল মার্কেটেও। এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোতে নিট পোশাক রপ্তানিতে চীনকে পেছনে ফেলে শীর্ষে উঠেছে বাংলাদেশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেছেন, আমাদের পোশাক কারখানাগুলো সবুজ বিপ্লবায়নে ক্রমাগত কাজ করছে। অর্ডার কমে যাওয়া ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যেও সবুজ কারখানায় বিনিয়োগ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছি আমরা। তা বহির্বিশ্বে আমাদের ব্যান্ডিংয়ে সহায়তা করছে। ফলে, নানা দেশে আমাদের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে।

তিনি বলেন, দ্য আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ) তাদের সব ব্র্যান্ডকে পরামর্শ দিয়েছে, তারা যেন আমাদেরকে সঠিক প্রাইস দেয়। কিন্তু, আমাদের পণ্যের প্রাইস বাড়ছে না। বিপরীতে প্রাইস কমানোর জন্য চাপ আছে। প্রাইস বাড়িয়ে দিলে রপ্তানি আয় আরও বাড়ার সুযোগ রয়েছে।  

প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ১১.৯৮ শতাংশই যুক্তরাজ্যে হয়েছে। আলোচ্য সময়ে শুধু যুক্তরাজ্যে রপ্তানি হয়েছে ২.২৫ বিলিয়ন ডলারের পোশাক। আগের বছরের একই সময়ে পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ১.৯৬ বিলিয়ন ডলারের। এ সময় যুক্তরাজ্যে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৪.৬১ শতাংশ।

আলোচ্য সময়ে বাংলাদেশ থেকে নন-ট্রেডিশনাল মার্কেটে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪.১২ শতাংশ। নন- ট্রেডিশনাল মার্কেটে পোশাকের মোট রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩.৬৪ বিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ১৯.৩৩ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ে নন- ট্রেডিশনাল মার্কেটে রপ্তানি হয়েছিল ৩.১৯ বিলিয়ন ডলারের পোশাক।

নন-ট্রেডিশনাল মার্কেটের মধ্যে আছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, ইন্ডিয়া, কোরিয়া, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মেক্সিকো, সৌদি আরব, তুরস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউ জিল্যান্ড, চিলি, ব্রাজিলসহ অন্য কিছু দেশ।

যুক্তরাজ্যে রপ্তানি বাড়লেও ইউরোপীয় ইউনিয়নে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে রপ্তানির মোট প্রবৃদ্ধি ছিল ০.১৮ শতাংশ কম। আলোচ্য সময়ে ইইউতে বাংলাদেশ থেকে মোট রপ্তানি হয়েছে ৯.০৫ বিলিয়ন ডলারের পোশাক, যা বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৪৮.০৭ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৯.০৭ বিলিয়ন ডলার।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩.২৭ বিলিয়ন ডলারের, যা বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানির ১৭.৪০ শতাংশ।  পাঁচ মাসের এই আয় আগের বছর একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৬ শতাংশ কম। আগের বছরের একই সময়ে পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ৩.৪৭ বিলিয়ন ডলারের।

চলতি অর্থবছরের ৫ মাসে বাংলাদেশ থেকে কানাডায় পোশাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৬০৬ মিলিয় ডলারের, যা বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৩.২২ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ে কানাডায় রপ্তানি হয়েছিল ৬২৩ মিলিয়ন ডলারের পোশাক। আলোচ্য সময়ে কানাডায় রপ্তানি কমেছে ২.৭১ শতাংশ।

এর আগে চীনকে পেছনে ফেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) নিট পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষে উঠেছে বাংলাদেশ। বিজিএমইএ’র তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে বাংলাদেশ থেকে ইইউভুক্ত দেশগুলো ৯০০ কোটি মার্কিন ডলারের নিট পোশাক নিয়েছে। একই সময়ে চীন থেকে তারা ৮৯৬ কোটি ডলারের নিট পোশাক আমদানি করে। বছরের ৯ মাস বিবেচনায় এই প্রথমবারের মতো ইইউতে বাংলাদেশের নিট পোশাক রপ্তানি চীনকে ছাড়িয়ে গেল। একই সঙ্গে পরিমাণের দিক থেকেও শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর ৯ মাসে ইইউ বাংলাদেশ থেকে ৫৭ কোটি ১০ লাখ কেজি নিট পোশাক আমদানি করেছে। একই সময়ে চীন থেকে তাদের আমদানির পরিমাণ ছিল ৪৪ কোটি ২০ লাখ কেজি।

এনএফ/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়