ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

টিকিট সংগ্রহে দুর্ভোগ লাঘব করুন

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৯, ২৬ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
টিকিট সংগ্রহে দুর্ভোগ লাঘব করুন

স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে আগেভাগে বাস, ট্রেন, লঞ্চের টিকিট সংগ্রহ করেন রাজধানীবাসী। এবার সাধারণ মানুষের সহজে রেলের টিকিট পেতে চালু করা হয়েছে রেলের ই-টিকিটিং সেবা। কিন্তু এ সেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ই-টিকিটিং সেবা না পেয়ে গত তিনদিন কমলাপুর স্টেশনে আগাম টিকিটপ্রত্যাশীদের প্রচণ্ড ভিড় লক্ষ্য করা যায়। টিকিট নিতে তাদের কেউ লাইনে দাঁড়িয়েছেন মধ্যরাতে, কেউ বা খুব ভোরে। আর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা গেছে প্রতিটি লাইন গিয়ে ঠেকেছে স্টেশনের বাইরে।

অগ্রিম টিকিট নিতে যারা আসছেন তাদের অভিযোগ, অনলাইনে টিকিট কেনার জন্য চেষ্টা করে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। সার্ভারে জটিলতায় অনলাইনে টিকিট কিনতে পারেছেন না তারা। অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতে না পেরে বাধ্য হয়ে স্টেশনে কাউন্টারে এসেছেন। অ্যাপে প্রবেশ করতে না পারা, পর্যাপ্ত টিকিট না থাকাসহ নানা অভিযোগ টিকিটপ্রত্যাশীদের। এসি টিকিটও পাচ্ছেন না বলে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন। আরো অভিযোগ রয়েছে, অনলাইনে টিকিট ব্যবস্থাপনায় জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগসাজশ করে টিকিট পাচ্ছেন বিশেষ ব্যক্তিরা। এছাড়া কাউন্টার থেকেও বিশেষ বুকিং সহকারীরা দ্রুত টিকিট কাটছেন ঘনিষ্ঠজনদের জন্য।

ঢাকা থেকে ৩৩টি আন্তনগর ও চারটি বিশেষ- এই ৩৭টি ট্রেনের ১৪ হাজার ২৩৪টি টিকিট অনলাইনে কিংবা অ্যাপে বরাদ্দ রয়েছে। বাকি ১৩ হাজার ৯৮৬ টিকিট বিক্রি হচ্ছে কাউন্টার থেকে। সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ, অনলাইনে অনেক চেষ্টার পরও টিকিট কাটতে পারছেন না। তাহলে মোট টিকিটের অর্ধেকেরও বেশি অনলাইনে বরাদ্দ থাকা টিকিটগুলো কোথায় যাচ্ছে? এদিকে কমলাপুর স্টেশন ছাড়াও নগরীর অন্যান্য বিক্রয়কেন্দ্র- তেজগাঁও, বিমানবন্দর, বনানী রেলস্টেশন ও ফুলবাড়িয়ায় পুরনো রেলভবন থেকে টিকিট সংগ্রহে যাত্রীরা হয়রানির অভিযোগ করছেন।

অগ্রিম টিকিট বিক্রির প্রথম দিন সকালে রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিট বিক্রির অবস্থা দেখতে যান। ‘রেলসেবা’ অ্যাপ নিয়ে ভোগান্তির অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি নিজেই ব্যর্থতা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, অ্যাপ পরিচালনাসহ টিকিটিং পদ্ধতি পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ই-টিকিটিং সেবা যথাযথভাবে পরিচালনা করতে না পারলে অবিক্রীত টিকিট কাউন্টারে দেওয়া হবে।

ঈদ যাত্রায় নির্বিঘ্নে টিকিট সংগ্রহে ই-টিকিটিং পদ্ধতি নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে তা গুরুতর। এ পদ্ধতিতে মোট টিকিটের অর্ধেক বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু তার কত অংশ স্বচ্ছভাবে হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। একটি টিকিটের জন্য গত কয়েক দিন ধরে হাজার হাজার মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষার পরও অনেকে টিকিট না পেয়ে হয়ে ফিরে যাচ্ছেন; যা দুর্ভাগ্যজনক।

যেহেতু চাহিদার তুলনায় ট্রেনের টিকিট অপ্রতুল। তাই টিকিট বিক্রিতে কোনো অনিয়ম হচ্ছে কি না সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। বাস ও লঞ্চের টিকিট নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। বেশি দামে টিকিট বিক্রির অভিযোগ করছেন ক্রেতারা। টিকিট সংগ্রহে সাধারণ মানুষের এ দুর্ভোগ লাঘব করা প্রয়োজন। তারা যেন হয়রানির শিকার না হন, যেন সহজে টিকিট পেতে পারেন সে জন্য কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ মে ২০১৯/আলী নওশের

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়